তিন দশকের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের সবচেয়ে বড় দরপতন
বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জীবাশ্ম জ্বালানি তেলের অন্যতম সূচক ওয়েল ফিউচার্স গত রোববার ৩১ শতাংশ দরপতনের শিকার হয়। ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের পর তিন দশকের মধ্যে এটা জ্বালানি বাজারে শীর্ষ দরপতনের ঘটনা।
এর আগে ওপেক প্লাস বৈঠকে বাজার সরবরাহ কর্তনে মেয়াদ বৃদ্ধির উদ্যোগ সৌদি-রাশিয়া বিরোধে ভেস্তে যায়। এরা যথাক্রমে বিশ্বের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শীর্ষ অপরিশোধিত তেল উৎপাদক দেশ। প্রথমস্থানটি এখন যুক্তরাষ্ট্রের দখলে। খবর বিজনেস ইনসাইডারের।
ওপেক বৈঠকের পর থেকেই জ্বালানি বাজারে ধ্বসের ধারা অব্যাহত থাকে।
এই অবস্থায় জ্বালানি বাজারে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে দর কমানোর প্রতিযোগিতাও শুরু হয়েছে। বাজার বিশেষজ্ঞরা অবশ্য একে 'মূল্যযুদ্ধ' নাম দিয়েছেন।
রোববার দ্বিতীয় বৃহৎ উৎপাদক সৌদি আরব জ্বালানি তেলের মূল্য গত দুই দশকের মাঝে সবচেয়ে বেশি কমায়।
এদিন মার্কিন পুঁজিবাজারে শিল্পসূচক ডাউ জোন্সে ওয়েল ফিউচার্স ৯০০ পয়েন্ট হারায়। সোমবার এসঅ্যান্ডপি-৫০০ বাজারে ফিউচার্স সূচকে দরপতন হয় ৪ শতাংশ।
পরিবর্তিত অবস্থার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাক্স বিশেষজ্ঞরা তেলের মূল্য খাড়া দরপতন নিয়ে ব্যারেল প্রতি ২০ ডলারে নেমে আসতে পারে বলে হুঁশিয়ার করেছেন।
করোনা ভাইরাস চীনের বাইরে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ায় এখন তেলের আন্তর্জাতিক বাজারের বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ উৎসে পুঁজি সরিয়ে নেওয়ার দিকে ধাবিত হচ্ছেন।
গত শুক্রবার করোনা ভাইরাস জ্বালানি বাজারে চাহিদা বিপুল পরিমাণ হ্রাস করবে এমন শঙ্কা তীব্রতা ধারণ করে। এর ফলে ওইদিন ২০১৪ সালের পর জ্বালানি তেলের দর সর্বনিম্ন অবস্থানে নামে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ওপেক বৈশ্বিক জ্বালানি চাহিদা চলতি বছর দৈনিক মাত্র ৪ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল বাড়বে বলে জানায়। গত বছরের ডিসেম্বরে ঘোষিত অনুমান ১১ লাখ ব্যারেলের চাইতে এটা অর্ধেকের বেশি কম।
এই অবস্থায় তেলের দরবৃদ্ধি করতে দৈনিক ১৫ লাখ ব্যারেল সরবরাহ কর্তন ছিল শুক্রবার ওপেক প্লাস বৈঠকের মূল এজেন্ডা। তবে বৈঠকে রাশিয়া-সৌদির মতবিরোধের জেরে জ্বালানি তেলের মূল্যপতনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয়।