অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় কমেছে ২৪%
অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগষ্ট) বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় কমেছে ২৪ শতাংশ। এদিকে অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বিশ্বব্যাংক এবং জাতিসংঘ ছাড়া কারো কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় হয়নি। যদিও এসময়ে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রতিশ্রুতি বেড়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে উন্নয়ন সহযোগীরা ছাড় করেছে ৮৬৪.২৯ মিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে বৈদেশিক সহায়তা ছাড় হয়েছিল ১.১৪ বিলিয়ন ডলারের।
এই সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে বিশ্বব্যাংক এবং জাতিসংঘের কাছ থেকে ৩০৪.৯২ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। যার সিংহভাগ বা ৩০০ মিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি এসেছে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে।
গত অর্থবছরের একই সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি ছিল ৭৩.৩২ মিলিয়ন ডলার।
চলতি অর্থবছরের ১২ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক সহায়তা ছাড় করার লক্ষ্য রয়েছে। গত অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে গত অর্থবছরের সরকার উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ৮.১৮ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেলেও চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৬.২ বিলিয়ন ডলার ধরা হয়েছে।
ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, অর্থবছরের প্রথম দিকে সাধারণ উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ ব্যয় কম হয়। ২১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বৈদেশিক সহায়তা বরাদ্দের ১ শতাংশের কম অর্থ ব্যয় করেছে। এর মধ্যে সরকারের ১২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বৈদেশিক সহায়তা বরাদ্দের কোনো অর্থ ব্যয় করতে পারেনি। তবে অর্থবছরের শেষ দিকে অর্থ ব্যয় বাড়বে।
অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে বাজেট সহায়তা নিয়ে আলোচনা চলছে। বাজেট সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া সঙ্গে সঙ্গে অর্থছাড় হয়ে যায়। আগের অর্থবছরের মতো চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড় বাড়াতে বাজেট সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, "গত কয়েক অর্থবছরে বাজেট সহায়তা ও কোভিড সহায়তা অর্থছাড়ে ব্যপক ভূমিকা রেখেছে। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় চলতি অর্থবছরেও উন্নয়নের সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সহায়তার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে উন্নয়ন সহযোগীদের শর্ত মেনে বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কার না করলে বাজেট সহায়তা পাওয়া কঠিন হবে।"
তিনি বলেন, "উন্নয়ন সহযোগীরা বাজেট সহায়তা দেওয়া জন্য কিছু শর্ত দেয়। শুধু বৈদেশিক সহায়তার পাওয়ার আশায় আমাদের সংস্কারে যেতে হবে তা না। আমাদের অর্থনীতিতে বলিষ্ঠতা আনতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করতে হবে।"
ইআরডি'র তথ্য অনুযায়ী, কোভিড পরিস্থিতি মোকাবেলা এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গত তিন অর্থবছরে (২০১৯-২০ থেকে ২০২১-২২) বাজেট সহায়তা এবং টিকা কেনার জন্য উন্নয়ন সহযোগীরা ৫.৮৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ ছাড় করেছে।