গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের জেরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১০ কর্মকর্তাকে শোকজ
গণমাধ্যমে নানান সংবাদ প্রকাশের জেরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্তত ১০ কর্মকর্তাকে শোকজ করা হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক থেকে শুরু করে নির্বাহী পরিচালক পর্যন্ত কর্মকর্তারা এমন শোকজের মুখোমুখি হয়েছেন।
ভুক্তভুগী একাধিক কর্মকর্তা জানান, 'প্রেস লিকের কারণে' তাদেরকে দায়ী করে শোকজের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের কেনো এসব তথ্য জানানো হলো, তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে নোটিশে।
"প্রায় মাসখানেক ধরে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমাদের ডেকে নিয়ে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করছেন। তারা কর্মীদের বদলি করাসহ চাকরি থেকে বরখাস্তেরও হুমকি দিচ্ছেন," নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ তথ্য জানান এক কর্মকর্তা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, শোকজ বা কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়া কর্মকর্তার সংখ্যা দশের বেশি।
বাংলাদেশ সূত্রে জানা গেছে, পরবর্তীতে তিনটি বিভাগের পরিচালকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে, একজন ডেপুটি গভর্নর তার অফিসে ডেকে নিয়ে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে বকাঝকাও করেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে আরও জানা যায়, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ২৩ শতাংশ থেকে গোপন করে বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ৫ শতাংশ খেলাপি ঋণ দেখাচ্ছে। এমন তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট বিভাগের একাধিক কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একইসঙ্গে, ওই বিভাগের পরিচালককে শোকজ করা হয়েছে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন করে কয়েকটি বিভাগে বিনা নোটিশে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ কারণে অন্য বিভাগের কর্মকর্তারাও এখন সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করছেন।
ব্যাংকিং রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসি বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে টিবিএসকে বলেন, "আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেনো কোনো সাংবাদিককে প্রবেশ করতে না দেওয়া হয়। প্রেসের সঙ্গে কোনো ধরনের তথ্য শেয়ার করা যাবে না।"
"এমনকি আমরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বললেও তারা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা) আমাদের সন্দেহ করেন," যোগ করেন ওই কর্মকর্তা।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ ধরনের কোনো কারণ দর্শানোর নোটিশ বা শোকজ জারির বিষয়ে তিনি অবগত নন।
"প্রতিদিনই সাংবাদিকরা বাংলাদেশ ব্যাংকে আসছেন, বিভিন্ন তথ্য নিয়ে নিউজ করছেন। তবে এ কারণে কোনো কর্মকর্তাকে শোকজ করা হয়েছে, এমন কোনো বিষয় আমি জানি না," বলেন তিনি।