রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেন, সেপা নিয়ে আলোচনায় সম্মত ভারত-বাংলাদেশ
নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ভারত ও বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে রুপিতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক লেনদেন নিষ্পত্তি এবং ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সিইপিএ বা সেপা) নিয়ে আলোচনা শুরু করতে দুই দেশই সম্মত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবারের (২২ ডিসেম্বর) এই বৈঠকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এতে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং তার ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল নিজ নিজ পক্ষের নেতৃত্ব দেন।
বৈঠকের পর ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষই দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করার জন্য বিস্তারিত আলোচনা করেছে। 'উভয় দেশ একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে সম্মত হওয়ার পর অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সেপা) বিষয়ে একটি যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালিত হয়েছে'।
সেপার আওতায়, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ পণ্য ও সেবার ওপর উল্লেখযোগ্য হারে কাস্টমস শুল্ক কমাবে বা প্রত্যাহার করবে উভয় দেশ। এছাড়া, সেবা খাতে বাণিজ্যের বিধিমালা শিথিল করবে এবং বিনিয়োগ আকর্ষণের উদ্যোগ নেবে।
'বাণিজ্য ও বাণিজ্যিক অংশীদারত্ব উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর দৃঢ় ভিত্তি প্রস্তুত করতে' সেপা নিয়ে 'যত দ্রুত সম্ভব' আলোচনা শুরুতে সম্মত হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ- আরও জানায় বিবৃতিটি।
এছাড়া, দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীরা নন-ট্যারিফ বাধা ও বন্দর নিষেধাজ্ঞা অপসারণ, সীমান্ত হাট পুনরায় চালু, সমন্বয় এবং উভয় পক্ষের মান ও পদ্ধতির পারস্পরিক স্বীকৃতিসহ পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
ভারতীয় বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে কর ও বাণিজ্যিক পরামর্শক সংস্থা গ্রান্ট থর্নটন ভারত এর পার্টনার বিবেক আইয়ার বলেছেন, 'ভারত জ্বালানি নিরাপত্তাকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে, আর এই বাণিজ্যে আমদানি খরচ ব্যাপক। বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারের এই পরিবর্তিত ধারার সাথে তাল মেলাতে রুপিতে বাণিজ্য একটি কার্যকর নিয়ামক। এতে বৈদেশিক মুদ্রার অস্থিতিশীলতার প্রভাব হ্রাস করা যাবে এবং রিজার্ভের ওপরও চাপ কমবে'।
ভারতের কূটনৈতিক তৎপরতায় এবং ডলার সংকটে দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ শ্রীলঙ্কাও রুপিতে বাণিজ্যের উদ্যোগ নিচ্ছে। সম্প্রতি, দ্বিপাক্ষিক লেনদেন নিষ্পত্তিতে স্টেট ব্যাংক অভ ইন্ডিয়ায় (এসবিআই) একটি ভস্ট্রো অ্যাকাউন্ট খুলেছে।
তবে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশই ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। ২০২১-২২ অর্থবছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বেড়ে ১৮.২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।