সিএমএসএমই খাতের ২৫,০০০ কোটি টাকার রিফাইন্যান্স স্কিম প্রি-ফাইন্যান্স স্কিমে রূপান্তর
কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতে আগে ঘোষিত ২৫ হাজার কোটি টাকার রিফাইন্যান্স (পুনঃঅর্থায়ন) স্কিমকে প্রি-ফাইন্যান্স (প্রাক-অর্থায়ন) স্কিমে রূপান্তর করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট। এই খাতে ঋণ বিতরণ বাড়াতে নতুন সিদ্ধান্তটি ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে।
আগামী তিন বছর ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে গত বছরের জুলাইয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক 'সিএমএসএমই খাতে মেয়াদী ঋণের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম' নামে ২৫ হাজার কোটি টাকার রিফাইন্যান্স স্কিম গঠন করে। এটিকেই এখন প্রি-ফাইন্যান্স স্কিম বলা হবে।
সাধারণত রিফাইন্যান্স স্কিমের অধীনে একটি ব্যাংক গ্রাহককে ঋণ দিয়ে দেওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে থেকে সে পরিমাণ টাকা সংগ্রহ করে থাকে। অন্যদিকে, প্রি-ফাইন্যান্স স্কিমের অধীনে কোনো ব্যাংক ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে সেটি আগেই সংগ্রহ করে নেয়। পরে ওই টাকা গ্রাহকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
অর্থাৎ, স্কিমগুলোর এই রূপান্তরের কারণে ব্যাংকগুলো তাদের চাহিদা মোতাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থায়ন পাবে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি হওয়ায় ব্যাংকিং খাতে তারল্য কমেছে। এ কারণে সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণে সমস্যা হওয়ায় স্কিমটিকে প্রি-ফাইন্যান্স স্কিমে রূপান্তর করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, স্কিমটি রূপান্তরের ফলে ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট থাকলেও সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণ হবে নির্বিঘ্নে। এছাড়া, এ খাতে ঋণ বিতরণ করতে ব্যাংকের আলাদা করে লিকুইডিটির প্রয়োজন হবে না।
সার্কুলার অনুযায়ী, ঋণ বিতরণের অগ্রগতি বিবেচনা করে স্কিমের আওতায় চুক্তিবদ্ধ ব্যাংকগুলোকে কোয়ার্টার বেসিসে আগাম টাকা দেওয়া হবে। এ সুবিধা পেতে ব্যাংকগুলোকে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকগুলো এখন থেকে নির্দিষ্ট তিন মাসে যে পরিমাণ ঋণ বিতরণ করতে পারবে বলে মনে করবে, সেটি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই পরিমাণ টাকা কোয়ার্টারের শুরুতে ব্যাংকটিকে দেবে। ব্যাংক সে অনুযায়ী ঋণ বিতরণ করবে।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রি-ফাইন্যান্স স্কিমের আওতায় অর্থায়ন নিয়ে কোনো ব্যাংক লক্ষমাত্রা অনুযায়ী ঋণ বিতরণে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে আর অর্থায়ন দেওয়া হবে না বলেও মন্তব্য করেন এ কর্মকর্তা।
ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এই স্কিমের অধীনে ২ শতাংশ হার সুদে তহবিল নিয়ে সিএমএসএমই-কে ৭ শতাংশ পর্যন্ত হারে ঋণ দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। ব্যাংকগুলো তাদের বিতরণকৃত ঋণের ৪০ শতাংশ পর্যন্ত সিএমএসএমইকে কার্যকরী মূলধন হিসাবে প্রদান করতে পারবে।
সেইসঙ্গে, ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে সিএমএসএমই খাতে মোট বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ৩৫ শতাংশ ব্যবসার জন্যও দিতে পারবে ব্যাংকগুলো। এছাড়া, উত্পাদন এবং পরিষেবার জন্য ৬৫ শতাংশ ঋণ দিতে পারবে।