মূল্যস্ফীতিতে মার্চ প্রান্তিকে ওয়ালটনের আয় কমলো ৩২%
উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের আয় ৩২ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি টাকার বিপরীতে ডলারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি, কাঁচামালের দাম ও ফ্রেইট চার্জ বৃদ্ধিসহ চলমান বৈশ্বিক সংকটের প্রভাবে দেশের ইলেকট্রনিক জায়ান্ট ওয়ালটনের নিট মুনাফাও একই সময়ে ৩৭ শতাংশ কমেছে।
জানুয়ারি থেকে মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত কোম্পানিটির রাজস্ব আয় হয়েছে ১,৫০২ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২,২০৮ কোটি টাকা।
যদিও ঠিক আগের প্রান্তিকের তুলনায় এই প্রান্তিকে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কোয়ার্টার-অন-কোয়ার্টার বা প্রান্তিক হিসাবে প্রতিষ্ঠানটির আয় বেড়েছে ৩৬ শতাংশ।
তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির নিট মুনাফা হয়েছিল ২৩ কোটি টাকা, যা এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় ৩৭ শতাংশ এবং ঠিক আগের প্রান্তিকের তুলনায় ৬২ শতাংশ কম।
এ সময় কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭.৭৮ টাকা, যা এক বছর আগে ১২.৩৪ টাকা ছিল।
ওয়ালটন বলছে, প্রধানত মহামারি, মহামারি পরবর্তী ধাক্কা, সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং চলমান বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতিতে কোম্পানির আয় কমে গেছে।
এছাড়াও, কাঁচামালের দাম ও ফ্রেইট খরচ বৃদ্ধি, মহামারি পরবর্তী প্রভাব হিসেবে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে ব্যাপকভাবে মূল্যস্ফীতি হয়েছে, যা কোম্পানির সামগ্রিক মুনাফার ওপর প্রভাব ফেলেছে। এর পাশপাশি রেফ্রিজারেটর পণ্যে ভ্যাট আরোপও মুনাফা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে কোম্পানিটি।
২০২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিক শেষে ওয়ালটনের মোট রাজস্ব ৪,০৮৯ কোটি টাকা এবং নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ২৪৯ কোটি টাকায়।
মার্চের শেষে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৮.২৫ টাকা।
এর আগে, ২০২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ৪৬ কোটি টাকা লোকসান হয়েছিল ওয়ালটনের; এ সময় শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছিল ১.৫২ টাকা। অথচ আগের বছরের একই সময়ে কোম্পানির মুনাফা হয়েছিল ২৮০.৯৮ কোটি টাকা, যেখানে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ৯.২৮ টাকা করে।
২০০৮ সালে ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স বাজারে প্রবেশ করে ওয়ালটন। শুরুতে প্রতিষ্ঠনটি ছিল আমদানি নির্ভর।
বর্তমানে, রেফ্রিজারেটরের বাজারে ৭২ শতাংশেরও বেশি শেয়ার ওয়ালটনের। এছাড়া টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, সিলিং ফ্যান, এলইডি লাইটসহ হোম অ্যাপ্লায়েন্সেসেও বেশ ভালো বাজার দখল রয়েছে কোম্পানিটির।
২০১১ সালে ইউরোপ, এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলোতে রেফ্রিজারেটর রপ্তানি শুরু করে ওয়ালটন। এর পাশাপাশি ফ্রিজ, মোবাইল ফোন, কম্প্রেসার এবং টেলিভিশনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্যও রপ্তানি করছে দেশের এই ইলেকট্রনিক জায়ান্ট।