সি-ফুড রপ্তানি আগামী ৫ বছরে ৫ বিলিয়ন ডলারে নেওয়া সম্ভব: বিডা
দেশের সুনীল বা সমুদ্র অর্থনীতিকে (ব্লু ইকোনোমি) যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারলে আগামী ৫ বছর পরে সি-ফুড রপ্তানি করে প্রতি অর্থবছরে ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) রাজধানীর বিডা কনফারেন্স হলে এক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "আমাদের রয়েছে উপকূলবর্তী ১ লাখ ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার সমুদ্রসীমা। এতে প্রায় ৪৬০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত যাওয়া যায়। ব্লু ইকোনোমিকে যদি যথাযথভাবে কাজে লাগানো যায়, তাহলে আগামী ৫ বছর পরে সি-ফুড রপ্তানি করেই প্রতি অর্থবছরে ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব হবে।"
বর্তমানে বছরে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের প্রায় ৩০,০০০ মেট্রিকটন সি-ফুড বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিডা এবং সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া (এনএসএ)-এর মধ্যে 'প্রমোশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফ বাংলাদেশি সি-ফুড সেক্টর টু কন্ট্রিবিউট টু দ্য ব্লু ইকোনোমি অ্যান্ড এক্সপ্যান্ডিং দ্য সি-ফুড মার্কেট শেয়ার ইন দ্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যারেনা' বিষয়ক বিভিন্ন সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
বিডা'র নির্বাহী সদস্য মোহসিনা ইয়াসমিন এবং সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার কান্ট্রি ম্যানেজার সেলিম রেজা হাসান নিজ নিজ সংস্থার পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, "এই যে বিশাল সমুদ্র অর্থনীতি, এটা আমরা আধুনিক জাহাজ না থাকার কারণে কাজে লাগাতে পারছি না। জাহাজ না থাকার কারণে গভীর সাগরে স্যালমন মাছ ও টুনা ধরা যাচ্ছে না। এ মাছ দামী ও বিশ্বে অনেক চাহিদা। তাই আমাদের এ খাতে বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।"
স্বাক্ষরিত এই সমঝোতা স্মারকের অধীনে এখন থেকে বিডা এবং সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া যৌথভাবে বাংলাদেশের সামুদ্রিক খাবার খাতকে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রচার এবং এ খাতে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগ বিকাশের জন্য কাজ করবে।
সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া বাংলাদেশের সামুদ্রিক খাদ্য খাতের উন্নয়ন ও প্রচারের লক্ষ্যে বিভিন্ন কৌশল, পরিকল্পনা এবং উন্নয়ন প্রকল্প ও কর্মসূচি গ্রহণসহ বিভিন্ন সভা সেমিনার ও প্রয়োজনীয় ইভেন্টগুলো আয়োজন করবে।
এছাড়াও বিডার সহযোগীতায় সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্টকহোল্ডার, সরকার, এনজিওর সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সি-ফুড উৎপাদনে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার স্ট্র্যাটেজিক এনগেজমেন্ট লিড- অ্যাকুয়াকালচার মইন উদ্দিন আহমেদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (টিবিএস) কে বলেন, "বর্তমানে চিংড়ি, কাঁকড়া , কুচিয়াসহ সামান্য কিছু সামুদ্রিক মাছ রপ্তানি হচ্ছে। এ খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে আমরা জার্মান ও উইরোপের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা করছি।"
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মৎস্য অধিদপ্তর, বাণিজ্য ও বিডা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং সলিদারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া আগামী অক্টোবরে তিন দিনব্যাপী সামুদ্রিক খাবার (সি-ফুড) প্রদর্শনীর আয়োজন করতে যাচ্ছে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে (বিআইসিসি) আগামী ১৯-২১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকুয়াকালচার অ্যান্ড সি-ফুড শো-২০২৩।