জ্বালানি আমদানিতে সুনির্দিষ্ট শুল্ক থেকে সরে আসছে সরকার
বিভিন্ন ধরণের জ্বালানি তেল আমদানিতে কাস্টমস ডিউটির পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট শুল্ক (স্পেসিফিক ডিউটি) আরোপ করলেও ভোক্তা পর্যায়ে দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তা থেকে সরে আসতে যাচ্ছে সরকার। এর ফলে আগের নিয়মে ১০ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি রাখা হতে পারে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বাজেট সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্ট একাধিক বিভাগের অনুরোধের প্রেক্ষিতে অবস্থান থেকে সরে আসতে যাচ্ছে সরকার। এছাড়া কলমের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হতে পারে। অ্যালুমিনিয়ামের স্ক্র্যাপ সংগ্রহের সময় বিদ্যমান ৭.৫% ভ্যাট অব্যাহতি পেতে পারে।
অন্যদিকে বহুল আলোচিত ৪৩ ধরণের সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকা মিনিমাম ট্যাক্স ব্যবস্থাও বাতিল হতে পারে।
এসব পরিবর্তন সহ আরো কিছু পরিবর্তন নিয়ে রবিবার বা সোমবার প্রস্তাবিত ফিন্যান্স বিল, ২০২৩ সংসদে পাশ হতে যাচ্ছে বলে সূত্র জানায়।
এনবিআরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা বেড়ে যাওয়ার কারণে এবং আইনগত কিছু জটিলতা থাকায় স্পেসিফিক ডিউটির বদলে আগের অবস্থানে ফিরে যাওয়া হতে পারে।"
"এছাড়া কলমের উপর ৫% ভ্যাট থাকবে। আর অ্যালুমিনিয়ামের স্ক্র্যাপ কালেকশনের সময় বিদ্যমান ৭.৫% ভ্যাট থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে।"
এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, "বাস্তবে এই ৭.৫% ভ্যাট আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না, কেননা এটি সংগ্রহ করা হয় প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের কাছ থেকে।"
অবশ্য কলমের ১৫ শতাংশ ভ্যাট ব্যবস্থায় ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট বা রিবেট নেওয়ার সুযোগ থাকলেও রিডিউসড রেট বা ৫ শতাংশ আরোপ হলে এ সুযোগ থাকবে না। ফলে ৫ শতাংশই ফিক্সড ভ্যাট হিসেবে গণ্য হবে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুন কেরোসিন, লাইট ডিজেল, মোটর স্পিরিট এবং জেট ফুয়েলসহ ১১ ধরনের পেট্রোলিয়াম পণ্যে প্রতি লিটারে ১৩.৭৫ টাকা সুনির্দিষ্ট শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।
বর্তমানে ফার্নেস অয়েল, জেট ফুয়েল, ডিজেল এবং অকটেনের মতো প্রধান জ্বালানি তেলের দামের মধ্যে মোট ৩৪% সরকারি শুল্ক ও কর রয়েছে, যার মধ্যে ১০% শুল্ক, ১৫% ভ্যাট, ২% অগ্রিম আয়কর এবং ৫% অগ্রিম কর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
অগ্রিম কর অপসারণ করলে জ্বালানি তেলের দামের উপর সামগ্রিক কর ২৯%-এ নেমে আসবে।