‘অপমানে’ কান্নায় ভেঙে পড়লেন সাবিনা
মূল অভিযোগটা কোচ পিটার বাটলারকে নিয়ে। বৃহস্পতিবার লিখিত বক্তব্যে জাতীয় নারী দলের ফুটবলাররা জানিয়েছেন, ইংলিশ এই কোচের অধীনে তারা খেলবেন না। কোচকে অপসারণ না করলে তারা গণ অবসরে যাবেন। নিজেদের অবস্থানের কথা জানানোর পাশাপাশি বাটলারের বিরুদ্ধে মানসিক হয়রানি ও উৎপীড়নসহ আরও অনেক অভিযোগ তুলে ধরেন ফুটবলাররা।
কোচকে নিয়ে সাবিনা খাতুন, মনিকা চাকমা, মাসুরা পারভীনদের বক্তব্য পরিষ্কার। তাদের চাওয়াতেই নেই অস্পষ্টতা। তবে নারী ফুটবলারদের মন খারাপের কারণ কেবল কোচ বাটলারই নন, দেশের মানুষদের আচরণ-কথাতেও মর্মাহত তারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের নিয়ে হওয়া ট্রল, কটুক্তি মেনে নেওয়ার মতো নয় বলে জানান তারা। এসব নিয়ে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় অধিনায়ক সাবিনাকে।
ঢাকা ফিরে গত মঙ্গলবার টিম মিটিং ডাকেন বাটলার, যে মিটিংয়ে কোনো ফুটবলার যাননি। ক্যাম্পের ২৯ ফুটবলারের মধ্য থেকে বৃহস্পতিবার জিম সেশনে গেছেন মাত্র ১২ জন। বাকি ১৭ জন সন্ধ্যার পরে বাফুফে ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কোচকে নিয়ে অভিযোগ করাসহ নিজেদের ইচ্ছার কথা জানান, একটি লিখিত বক্তব্য দেন তারা।
এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের নিয়ে হওয়া ট্রলের বিষয়টি নিয়েও কথা বলেন তারা। নারী ফুটবলারদের চোখে এসব অপমান, যা মেয়েদের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন সাবিনা। 'দিন শেষে মেয়েরা দেশের জন্যই খেলে'- কথাটি বলেই দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, মুছতে থাকেন চোখ।
কিছুক্ষণ থেমে সাবিনা বলতে থাকেন এভাবে, 'দেশের মানুষ যেভাবে মেয়েদের কটুক্তি করছে, এটা আসলে মেয়েদের জন্য নেওয়াটা অসম্ভব।' এরপর আর কথা বলতে পারলেন না সাবিনা। চোখ মুঝতে মুঝতে ডায়াস ছেড়ে সতীর্থদের ঠেলে পেছনে ছলে যান তিনি।
পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মাসুরা পারভীন কথা বলতে শুরু করেন। কান্নাভেজা চোখে নারী দলের এই ডিফেন্ডার বলেন, 'আমরা যেহেতু ফেসবুকে অনেক অ্যাকটিভ থাকি, কারণ আমাদের কাছে ফোন থাকে। আমরা ইতোমধ্যে অনেক নিউজ দেখেছি বা অনেক পত্রিকায় লেখালেখি হয়েছে, যেখানে প্রমাণ হয়ে গেছে আসলে আমরা দেশের জন্য কিছুই করতে পারি নাই। আমাদের আর কিছুই বলার নেই কারও কাছে।'
নারী দলের ফুটবলার ও বাটলারের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ চলাকালেই বিষয়টি জনসম্মুখে আসে। এরপর থেকে কোচকে নিয়ে অনেক অভিযোগের কথা বাফুফেকে জানিয়েছেন ফুটবলাররা। কিন্তু তাতে কিছু্ হয়নি বলে দাবি তাদের। ফুটবলার-কোচের মধ্যে সম্পর্কের এই টানাপোড়েনের মাঝেই বাটলারের সঙ্গে নতুন করে এক বছরের চুক্তি করে বাফুফে।