অক্টোবর থেকে এসএমই শেয়ার ব্যবসায়ে ন্যূনতম বিনিয়োগ ৩০ লাখ টাকা
চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এর এসএমই বোর্ডে শেয়ার লেনদেনে যোগ্য বিবেচিত হওয়ার জন্য বিনিয়োগকারীকে ন্যূনতম ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। হাইকোর্টের আদেশের পর এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে ডিএসই।
অর্থাৎ, এসএমই (ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ) বোর্ডের তালিকাভুক্ত শেয়ার লেনদেন বা ব্যবসায়ের জন্য একজন বিনিয়োগকারীকে পুঁজিবাজারে ন্যূনতম ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ বজায় রাখতে হবে।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে, এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ্যতা অর্জনে কমপক্ষে ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ রাখার নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সেই নির্দেশনাকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে রিট করেন এক বিনিয়োগকারী।
উচ্চ আদালতে রিটটি খারিজ হওয়ায় বিএসইসির নির্দেশনা এখন পুর্নবহাল হলো। ফলে পুঁজিবাজারে ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ থাকলে এসএমই প্লাটফর্মে শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন বিনিয়োগকারীরা।
ডিএসইর চিফ অপারেটিং অফিসার এবং ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, ন্যূনতম বিনিয়োগের নতুন নির্দেশনাটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশ থাকলেও কিছু প্রক্রিয়াগত কারণে আগামী অক্টোবর থেকে নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
কারণ হিসাবে তিনি বলেন, প্রত্যেক প্রান্তিকের শেষে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের তথ্য সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়। চলমান প্রান্তিক শেষ হবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর। এরপর যোগ্য বিনিয়োগকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের এক্সচেঞ্জের ইলেকট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেমে (ইএসএস) যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসাবে নিবন্ধনের জন্য বাজার মূল্যে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে ন্যূনতম ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ রাখার অনুরোধ করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বিএসইসি এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে অন্তত ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে, এমন নির্দেশনা দেয়।
তবে বিনিয়োগের সিলিং বেঁধে দেওয়ায় নতুন চালু হওয়া এই প্লাটফর্মে তেমন একটা লেনদেন হচ্ছিল না। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এসএমই প্লাটফর্মকে প্রাণবন্ত করে তুলতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিনিয়োগসীমা কমিয়ে ২০ লাখ টাকা করা হয়।
বিনিয়োগের সীমা কমিয়ে দেওয়ার পর এই বোর্ডে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেড়ে গেলে, মূল মার্কেটের চেয়ে অপেক্ষাকৃত দুর্বল স্বল্পমূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ার দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়।
বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি বিবেচনায় এসএমই বোর্ডে লেনদেনের যোগ্য বিবেচিত হতে বিনিয়োগ সীমা বাড়িয়ে ২০২২ সালের সেপ্টম্বরে ৩০ লাখ টাকা করার নির্দেশনা প্রদান করে বিএসইসি।
ওইসময় যেসব বিনিয়োগকারী এসএমই বোর্ডে ইতোমধ্যেই ২০ লাখ টাকার পোর্টফোলিও বজায় রেখে শেয়ার লেনদেন করেছিল, তাদেরকে ন্যূনতম বিনিয়োগ ৩০ লাখে বাড়াতে তিন মাসের সময় দেয় বিএসইসি।
তবে রিটের পর আদালতের নির্দেশে নূন্যতম বিনিয়োগ ৩০ লাখ টাকার পরিবর্তে আগের ২০ লাখ টাকা থাকার সিদ্ধান্ত চলমান রাখে ডিএসই।
চলতি বছরের জুনে আদালত রিটটি খারিজ করে, সম্প্রতি চূড়ান্ত রায় প্রকাশিত হয়েছে।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে স্টক এক্সচেঞ্জগুলো এসএমই প্লাটফর্ম চালু করে। উদ্দেশ্য হলো, স্বল্প পুঁজির ব্যবসাগুলোকে স্টক মার্কেটে আকৃষ্ট করা এবং তাদের মূলধন বাড়াতে সহায়তা করা।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এসএমই বোর্ড ছয়টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে।
বর্তমানে ১৭টি কোম্পানি এসএমই বাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে।