ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিদেশি ঋণের সুদের ওপর ট্যাক্স দিতে হবে না: এনবিআর
ব্যবসায়ীদের নেওয়া বিদেশি ঋণের সুদের ওপর নির্ধারিত ২০ শতাংশ ট্যাক্স আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দিতে হবে না বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত এক এসআরও জারি করেছে এনবিআর। ফলে এখন থেকে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে কোনো ট্যাক্স দিতে হবে না। তবে, ঋণের সুদ অগ্রিম পরিশোধের ক্ষেত্রে এই ট্যাক্স অব্যাহতি প্রযোজ্য হবে না।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, কর ছাড় পাওয়ার কারণে তাদের সুদ বাবদ খরচ ১.৫ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ কমবে।
খাত সংশ্লিষ্টরা এনবিআরের নেওয়া সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তবে, সময়সীমা বেধে দেওয়ার কারণে করছাড় পেতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিদেশি ঋণ পরিশোধের প্রবণতা আও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন তারা।
আন্তর্জাতিক বাজারে সুদের হার এখন আগের লন্ডন ইন্টারব্যাংক অফার রেট (এলআইবিওআর) এর পরিবর্তে ইউএস ফেডারেল রিজার্ভের নীতিগত হার সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট (এসওএফআর) অনুসরণ করছে।
সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট ইতোমধ্যেই কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন ০.২৫ শতাংশ থেকে ৫.৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২২ সালের শুরুর দিকেও এই হার ১ শতাংশের নিচে ছিল। ফলস্বরূপ, আন্তর্জাতিক বাজারে ঋণের সুদহার অনুরূপভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদেশি ঋণ ক্ষেত্রে ৩.৫ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত সুদ যোগ হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী সুদহার বৃদ্ধির সাথে সাথে, সুদের প্রদানের ওপর বর্তমান বাজেটে আরোপিত ২০ শতাংশ 'উইথহোল্ডিং ট্যাক্স'-এর কারণে বিদেশি ঋণ এখন আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। এ ধরনের ঋণের খরচ এখন প্রায় ১১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট অনুযায়ী, জুলাই থেকে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে ২০ শতাংশ ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছিল। মূলত, ব্যাংক ও ব্যবসায়ীদের বিদেশি ঋণ নেওয়া কমাতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
বিদেশি ঋণের খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে নতুন করে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ কমে যায়। ফলে শর্ট টার্ম ফরেন লোন কমতে শুরু করে। ব্যবসায়ীরা নতুন ঋণ নেওয়ার বদলে পুরনো ঋণগুলো রিপেমেন্ট করতে শুরু করেন। তবে, দেশের ব্যাংক চ্যানেলে ডলার সংকট থাকায় এসব বিদেশি ঋণ পরিশোধ রিজার্ভকে কমিয়ে দেয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, অক্টোবর শেষে বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদী বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২.১৩ বিলিয়ন ডলার। জুন শেষে যা ছিল ১৩.৬৬ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "গত কয়েক মাসে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর একটি কারণ হলো, বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদী বিদেশি ঋণ কমে যাওয়া।"