নভেম্বরে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ৫ শতাংশ বেড়েছে, কমেছে এমএফএস লেনদেন
দেশে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন ২০২৩ সালের নভেম্বরে আগের মাসের তুলনায় ৫ শতাংশ বেড়েছে।
ইন্টারনেট ব্যাংকিং বাড়লেও বিপরীতে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধিতে থাকা মেবাইল ব্যাংকিং এবং ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ও ডেবিট কার্ডের লেনদেন কিছুটা কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, গত বছরের নভেম্বরে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৮২ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা, যা আগের মাসের তুলনায় ৫.০৭ শতাংশ বেশি।
তবে ২০২২ সালের নভেম্বরের তুলনায় ২০২৩ সালের নভেম্বরে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ২০০ শতাংশ। ২০২২ সালের নভেম্বরে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল ২৭ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা গেছে, গত বছরের নভেম্বরে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৮২ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা, যা আগের মাসের তুলনায় ৫.০৭ শতাংশ বেশি।
নভেম্বরে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস-এর (এমএফএস) মাধ্যমে লেনদেন ১ শতাংশ কমে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকায় নেমেছে; আর কার্ডে লেনদেনও (এটিএম, পিওএস, সিআরএম, ই-কমার্সসহ) আগের মাসের তুলনায় ১ শতাংশ কমে ৪২ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা হয়েছে।
ব্যাংকাররা বলেন, বর্তমানে যে পরিমাণ ইন্টারেন্ট ব্যাংকিং লেনদেন হচ্ছে, তা এক বছরের আগের তুলনায় অনেক বেশি। অধিকাংশ ব্যাংকই এখন ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে, যার কারণে এই সেবা ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
তারা আরও বলেন, এক মাসের ব্যবধানে এ মাধ্যমে লেনদেন ১-২ শতাংশ কমতে-বাড়তে পাড়ে। কাজেই এই হিসাব নিয়ে বলা যাবে না যে এ সেবার লেনদেন কমেছে। তবে ১০-২০ হাজার হাজার কোটি টাকা কম লেনদেন হলে বোঝা যাবে যে কোনো ধরনের ত্রুটি থাকতে পারে।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের হেড দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, কোভিড মহামারির শুরু থেকে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের বিপ্লব শুরু হয়। এখন অনেকে ঘরে বসেই টাকা লেনদেন করছেন; তারা আর আগের মতো ব্যাংকের চেক নিয়ে লাইনে দাঁড়ান না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও অ্যাপ ব্যবহার করে ২০২৩ সালের এপ্রিল–সেপ্টেম্বর সময়ে প্রতি মাসের গড় লেনদেন ছিল ৪৫ হাজার কোটি টাকা। আর নভেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ মাত্র চার মাসের ব্যবধানে ইন্টারনেট ব্যবহার করে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ।
দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে অ্যাপে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় ইসলামী ব্যাংকের সেলফিন ও ইন্টারনেট মাধ্যমে। লেনদেনের প্রায় অর্ধেকই করেন ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকেরা। এরপর রয়েছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের অ্যাপ নেক্সাস পে, সিটি ব্যাংকের সিটি টাচ, ব্র্যাক ব্যাংকের আস্থা এবং ইস্টার্ণ ব্যাংকের স্কাই ব্যাংকিং।
ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, 'আমাদের অ্যাপে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গ্রাহক যুক্ত হচ্ছেন। এরই মধ্যে অ্যাপসের গ্রাহক ৫ লাখ ছাড়িয়েছে। এখন মাসে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হচ্ছে অ্যাপে। লেনদেন বেড়ে যাওয়া আমাদের জন্য ভালো। আমরা চাই এটা অব্যহত থাকুক।'
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাইয়ে দেশে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহারকারী গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ৭৪ লাখের কিছু বেশি। নভেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১ লাখ ৭২ হাজারে।
নভেম্বরে কার্ডে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন কমেছে
২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্যাংকগুলোর কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন হয়েছে ৭৯৮ কোটি টাকা, যা আগের মাস অক্টোবরের তুলনায় প্রায় ১৪ কোটি টাকা কম।
তবে ২০২২ সালের নভেম্বরে কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন হয়েছে ৫৭২ কোটি টাকা।
ব্যাংকাররা জানান, ব্যাংকগুলো যদি কার্ডে ডলার এনডোর্স করতে চায়, তাহলে তা ১১০ টাকায় করতে হয়। যদিও খোলাবাজারের গ্রাহককে ডলার কিনতে হচ্ছে ১২৪ টাকায়।
অনেক ব্যাংকের ডলার সংকট থাকায় তারা নতুন করে কার্ড ইস্যু করা কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়া কার্ডে তাদের ডলার এনডোর্সের পরিমাণও কমিয়ে দিয়েছে।