রোজার আগেই কেজিতে ১০-২০ টাকা বাড়ল ব্রয়লারের দাম
রোজা শুরু হওয়ার আগমুহূর্তে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নতুন ঘটনা নয়। গরুর মাংসের পর এবার দাম বৃদ্ধির তালিকায় যুক্ত হয়েছে ব্রয়লার মুরগি। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে ব্রয়লারের দাম।
রাজধানীর খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকায়। কোথাও কোথাও ২২০ টাকাও দাম চাইতে দেখা গেছে। সপ্তাহখানেক আগেও এ মুরগির দাম ছিল ১৯০-২০০ টাকা।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার বিশ্লেষণের তথ্য বলছে, গত বছরের এই সময়ে ২২০-২৩০ টাকায় ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে। এটা অবশ্য বাড়তে বাড়তে ২৫০ টাকা ছাড়িয়েছিল।
বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কমে যাওয়ার অজুহাত তুলে সরবরাহকারীরা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এছাড়া মুরগির খাদ্য ও বাচ্চার বাড়তি দামকেও সামনে আনছেন অনেকে।
কারওয়ান বাজারের মুরগি বিক্রেতা হাবিবুর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'খাবার, বাচ্চা ও ওষুধের বাড়তি দামের অজুহাত দিয়ে মুরগির দাম বাড়াচ্ছে সরবরাহকারীরা। এজন্য আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।'
তবে কারসাজি করে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে, এমন আশঙ্কাও রয়েছে। শবে বরাত ও রোজার আগে চাহিদা কিছুটা বেড়ে যাওয়ার কারণে এ সময় মুরগির দাম প্রতি বছরই বাড়িয়ে দেয় সরবরাহকারী ও বিক্রেতারা।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার টিবিএসকে বলেন, 'বাচ্চার দাম প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে ৫২ টাকা বেঁধে দেওয়া হলেও বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকার বেশি দামে। উৎপাদনকারীরা গত তিন মাসে প্রান্তিক খামারিদের কাছে বাচ্চা বিক্রি করেছে কম, যে কারণে তারা উৎপাদন করতে পারেননি। ফলে মুরগির একটা সংকট তৈরি হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'এই সংকটটা তৈরি হয়নি, তৈরি করা হয়েছে।'
দামের বিষয়ে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা মোকাম বা উৎপাদন প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করলেও উৎপাদনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাদের দিক থেকে ডিম, মুরগি ও মুরগির বাচ্চার দাম বাড়ানো হয়নি। তবে ডিলার ও খুচরা পর্যায়ে দাম বড়াতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন।
ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সভাপতি ও পিপলস পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহাবুবুর রহমান জানান, করোনা ও পরবর্তী সময়ে লোকসানি খামারগুলো চালু না হওয়ায় উৎপাদন কম হচ্ছে। ফলে বাজারে চাহিদা বাড়লেও জোগান ঠিক থাকছে না।
ব্রয়লার মুরগির সঙ্গে ডিমের দামও বেড়েছে গত এক মাসের ব্যবধানে। যে ডিম প্রতি ডজন ১৩০ টাকায় বিক্রি হতো, সেটা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকায়।
তবে বেশ আগেভাগেই বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। গত ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত গরুর মাংসের বিক্রেতারা ৬৫০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু এর পরপরই গরুর মাংসের দাম বেড়ে ৭৫০ টাকায় উঠেছে। বাজারে মনিটরিং জোরদার না হলে রোজার আগে এই দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।
এছাড়া পেঁয়াজের দামও বাড়তি। প্রতি কেজি পেঁয়াজ এখন ১১০-১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।