স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ব্যাংকিং খাতের প্রযুক্তিগত পরিবর্তন অত্যাবশ্যক: অভিমত বিশেষজ্ঞদের
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ব্যাংকিং খাতের প্রযুক্তিগত পরিবর্তন অত্যাবশ্যক বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। 'ডিজাইন থিংকিং ফর ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজ' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এই প্রসঙ্গ উঠে আসে।
মূলত বাংলাদেশের আর্থিক প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান সোনালী ইন্টেলেক্ট লিমিটেড এবং ইন্টেলেক্ট ডিজাইন এরিনা লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর একটি হোটেলে এই প্রোগ্রামটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, ব্যাংকিং খাত একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশন-২০৪১ গড়ার পথ তৈরি করবে। এক্ষেত্রে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ব্যাংকিং খাতের প্রযুক্তিগত পরিবর্তন অত্যাবশ্যক। একইসাথে গ্রাহকের চাহিদার পরিবর্তনের সাথে সাথে ব্যাংকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রমেও পরিবর্তন আনতে হবে।
আলোচকরা জানান, ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজের রূপান্তর বলতে কেবল ক্লাউডে স্থানান্তর বা মোবাইল-বান্ধব ইন্টারফেস তৈরি করা ছাড়াও আরও বেশকিছু বিষয় বোঝায়। তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যাংকের ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজের যাত্রা, সার্বিক বিষয়ের পুনরায় ডিজাইন করাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। তাদের মতে, ব্যাংকিং সেক্টরের ব্যবহৃত বিভিন্ন ডিভাইস এবং সেন্ট্রালাইজড প্লাটফর্মের সমস্ত কার্যক্রম সহজ করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, বাংলাদেশের ব্যাংকিং এবং বীমা শিল্প খাত স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশন ২০৪১ অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং ভবিষ্যতমুখী দেশ গড়বে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক্সের ২০২৩ সালের জুলাই মাসের রিপোর্টে দেখা যায়, এশিয়া প্যাসিফিক (এপিএসি) অঞ্চলে এবং সমস্ত ফ্রন্টিয়ার মার্কেটে ১০ বছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) চক্রবৃদ্ধিতে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার (সিএজিআর) ৯.১ শতাংশ।
গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশনের (জিএসএমএ) ২০২২ সালের এক প্রতিবেদনে অনুমান করা হয় যে, ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশের স্মার্টফোনের অনুপ্রবেশ ৬৩ শতাংশে উন্নীত হবে। এক্ষেত্রে ডিজিটাল ঋণদাতারা আশা করতে পারে যে, আগামী বছরগুলিতে টোটাল অ্যাড্রেসেবল মার্কেটে (টিএএম) তাদের সেবা বাড়বে।
এই দ্রুত বৃদ্ধির সাথে ব্যাংকিং ও আর্থিক শিল্পের গ্রাহকরা আরও বেশি চাহিদাসম্পন্ন হয়ে উঠবে। এই পরিবর্তনশীল গ্রাহকদের চাহিদা পূরণে ব্যাংকগুলোর যে প্রযুক্তি প্রয়োজন তা কেবল একটি ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে করা সম্ভব। এটি ব্যাংকগুলোর জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও অংশীদারিত্বে আরো বেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করবে।
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো উদীয়মান জেনারেটিভ এআই এবং সময়োপযোগী প্রযুক্তির মাধ্যমে টেকসই, অর্ন্তভুক্তিমূলক এবং উদ্ভাবনী উপায়ে ব্যাংকিং খাতকে পরিচালিত করতে চায়। একটি ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজ তৈরি করা এই উদ্যোগের প্রথম ধাপ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দেবদুলাল রায় বলেন, "ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর জন্য অনেক সুযোগ এনেছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো শুধু গ্রাহকদের অভিজ্ঞতাই বাড়ায় না, একইসাথে বিভিন্ন ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনায় দক্ষও করে তোলে। যেখানে স্থানীয় পর্যায়ের লোকজন প্রচলিত ব্যাংকের শাখাগুলোতে যাওয়ার সুযোগ কম পান সেখানে ডিজিটাল প্লাটফর্ম মানুষকে সুবিধাজনকভাবে তাদের আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করার এবং এ বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে উঠার সুযোগ দেয়।"