মার্চে ২০০ কোটি ডলারের নিচে নেমেছে রেমিট্যান্স
দুইমাস পর আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে বাংলাদেশে আসা প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলারের চেয়ে কম হয়েছে। তবে এর নেপথ্যে আছে, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় দর বাড়ার ঘটনা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, মার্চে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১৯৯ কোটি ডলার দেশে পাঠান। ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ২১৬ কোটি ডলার এবং জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ডলার।
ব্যাংকাররা বলছেন, মার্চ মাসের বেশিরভাগ দিনে এক মার্কিন ডলারের বিনিময় দর ছিল ১১৩-১১৪ টাকা। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ডলারের দর ছিল ১২০-১২২ টাকা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, আগের বছরের একই মাসের তুলনায় এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৩৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এর আগে ২০২৩ সালের জুনে ২১৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে আসে, যা একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসার রেকর্ড করে।
ব্যাংকারদের মতে, ডলার সংকটের কারণে অনেক ব্যাংকই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দামে ডলার কিনছে। অবশ্য রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশে রেমিট্যান্সের প্রবাহও বাড়ে প্রতিবছর।
ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেইল আরকে হোসেন টিবিএসকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক সময়ের নেওয়া উদ্যোগগুলো ধীরে ধীরে কাজ করতে শুরু করেছে।
"যেমন সম্প্রতি বিদেশিদের ব্যাংক হিসাব খোলার প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে, তাঁদের আয়ের উৎস সম্পর্কে জানতে না চাওয়া এবং রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট (আরএফসিডি) একাউন্টে সুদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত রেমিট্যান্স বাড়ার পেছনে ভূমিকা রাখছে। তাছাড়া, রমজান মাসে প্রবাসীরা বেশি বেশি রেমিট্যান্সও পাঠান"- তিনি উল্লেখ করেন।
বর্তমানে রেমিট্যান্সের এক ডলার কেনার আনুষ্ঠানিক দর হচ্ছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, ১২২ টাকাতেও রেমিট্যান্সের ডলার কেনা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গতকাল রোববার পর্যন্ত দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২০.৫৭ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালের আগস্টে সর্বকালের সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়নে পৌঁছেছিল রিজার্ভ, এরপর থেকেই তা ক্রমান্বয়ে কমেছে।
এদিকে বেসরকারি আরেকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, কিছু ব্যাংকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়লেও– অন্যান্য কিছু ব্যাংকে তা কমছে। এর মূল কারণ, তাঁদের দেওয়া দরের মধ্যে বড় পার্থক্য।
ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, রেমিট্যান্সের জন্য যে দর বেঁধে দেওয়া হয়েছে অনেক ব্যাংক তাঁদের চেয়ে ১০-১২ টাকা বেশি ডলার কিনছে। ব্যাংকগুলো তাঁদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বা এলসি খোলার জন্য উচ্চ দরে হলেও ডলার সংগ্রহ করছে।
এলসি খোলার সময়ে বেঁধে দেওয়া দরের সাথে ব্যাংক নিজস্ব চার্জ যুক্ত করে। এতে ব্যাংকগুলো লোকসান দিলেও ওইসব প্রতিষ্ঠান বা তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালকরা লাভবান হচ্ছে।