সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পাস
৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫০ শতাংশে রাখার লক্ষ্য নিয়ে জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট পাস হয়েছে।
আজ রবিবার (৩০ জুন) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ১২ লাখ ৪১ হাজার ৭৫২ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ চেয়ে নির্দিষ্টকরণ বিল-২০২৪ উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
এর আগে গতকাল জাতীয় সংসদে কিছু ছোটখাটো পরিবর্তন এনে অর্থবিল, ২০২৪ পাস হয়।
সরকারের প্রয়োজনীয় উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয় মেটানোর জন্য অর্থ বরাদ্দের সংসদীয় অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক সংসদে উত্থাপিত প্রস্তাব অনুসরণ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা ৫৯টি মঞ্জুরি দাবির মাধ্যমে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়ের ব্যয়ের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।
এই সব মঞ্জুরি দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে বিরোধীদলের ৭ জন সংসদ সদস্য মোট ২৫১টি ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ, হামিদুল হক খন্দকার, আবুল কালাম, সোহরাব উদ্দিন ও নাসের শাহরিয়ার জাহেদীসহ ৭ জন ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
এর মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় খাতে ৩টি মজ্ঞুরী দাবিতে আনীত ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর স্বতন্ত্র ও বিরোধী দলের সদস্যরা আলোচনা করেন। পরে কণ্ঠভোটে ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো নাকচ হয়ে যায়।
ছাঁটাই প্রস্তাবের পক্ষে ছিলেন জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ, হামিদুল হক খন্দকার, আবুল কালাম, সোহরাব উদ্দিন ও নাসের শাহরিয়ার জাহেদী।
তবে আইন মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওপর আলোচনায় অংশ নিতে দেওয়া হয়েছে। পরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী মধ্যাহ্নভোজের বিরতি না দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি দাবি পাসের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করেন।
বরাদ্দ বিলটি পাস হওয়ার সময় বিরোধী ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা সংসদে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা বিলটি পাস করার বিষয়ে কোনো আপত্তি উত্থাপন করেননি।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ বা প্রায় ৩৫ হাজার ২১৫ কোটি টাকা বেশি। দেশের জিডিপির আকার ধরা হয়েছে ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা।
তবে বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সরকার ব্যয় ৪৭ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা কমিয়ে ৭ লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকায় নামিয়ে এনেছে।
বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটে মোট সরকারি ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।
ইতোমধ্যে অনুমোদিত ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ব্যয় বাদে নতুন বাজেটে অনুদান বাদে আনুমানিক ঘাটতি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা।
অনুদান বিবেচনায় নিলে সামগ্রিক বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
বাজেটে সামাজিক অবকাঠামো খাতে মোট ২ লাখ ৬ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা মোট বরাদ্দের ২৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। ভৌত অবকাঠামো খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৭ দশমিক ১২ শতাংশ।
সাধারণ সেবা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭০১ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২১ দশমিক ১৭ শতাংশ।