মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নতুন মুদ্রানীতিও সংকোচনমূলক হবে: গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাজস্ব নীতির সঙ্গে সমন্বয় করে মুদ্রানীতিও সংকোচনমূলক রাখা হবে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতি ঘোষাণার আগে বুধবার (১০ জুলাই স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠকে গভর্নর এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'অমরা গত দুইবারের মুদ্রানীতিতে মানি সাপ্লাই বেজড মুদ্রানীতি থেকে বেরিয়ে ইন্টারেস্ট রেট বেজড মুদ্রানীতি করেছি। আমরা আশা করছি চলতি অর্থবছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে পারব।'
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, চার ডেপুটি গভর্নর, ঢাকা ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়েমা হক বিদিশা, অর্থনীতিবিদ আবু ইউসুফ, অ্যাসোসিয়েশন অভ ব্যাংকারস বাংলাদেশ-এর (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হুসেইন ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন স্টেকহোল্ডার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আমরা গভর্নরকে বলেছি রপ্তানির তথ্যে বড় ধরনের গরমিল ছিল, যা সম্প্রতি বেরিয়ে এসেছে।'
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত দশ বছরে প্রায় ৬৫ বিলিয়ন ডলারের মতো রপ্তানির গরমিল ছিল।
তিনি আরও জানান, বৈঠকে একজন বক্তা বলেন, 'আমাদের দেশের সার্বিক অর্থনীতি ভালো যাচ্ছে না। আমাদের এই সময়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যে পলিসিগুলোই নিচ্ছে, আসলে কোনোটা কাজ করছে না। যদিও আমাদের সুদহার বেড়েই যাচ্ছে।'
ওই স্টেকহোল্ডার বলেন, রপ্তানির এই গরমিল দেশের নীতি প্রণয়ন যারা করে, তারাই প্রভাবিত করেছে।
বৈঠকে থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, 'গভর্নর এরই পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন, আমরা রপ্তানির ডাটার মিসম্যাচ সমন্বয় করেছি। আমাদের এই উদ্যোগও রয়েছে যে, খেলাপি ঋণের তথ্যে কোনো মিসম্যাচ থাকলে তা-ও সমম্বয় করা হবে।'
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভারপাপ্ত মুখপাত্র সাইফুল ইসলাম বলেন, 'আমরা মুদ্রানীতি ঘোষণার পূর্বে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। এখানও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। অর্থনীতিবিদরা আমাদের যে পরামর্শ দিয়েছেন, আমরা সেগুলো নোট করে নিয়েছি। এর মধ্যে যেসব আমাদের পলিসির জন্য প্রয়োজন, সেগুলো আমরা নেব।'
নতুন অর্থবছরের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ১৮ জুলাই মুদ্রানীতি ঘোষণার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৬ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভায় মুদ্রানীতি পাশ হবে। তার আগে ১৪ জুলাই মুদ্রানীতি ঘোষণা-সংক্রান্ত মূল কমিটি সভা করবে।