ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলন ছাড়াই মুদ্রানীতি প্রকাশ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো সংবাদ সম্মেলন ছাড়া মুদ্রানীতি বিবৃতি (মনিটারি পলিসি স্টেটমেন্ট-এমপিএস) প্রকাশ করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আগামী ১৮ জুলাই বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে মুদ্রানীতি প্রকাশ করা হবে। এবার কোনো সংবাদ সম্মেলন হবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশে ইতঃপূর্বে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন বর্তমান গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। দীর্ঘদিনেও সে নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেওয়া, এবং অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিতে বাধার প্রতিবাদে গত ৭ জুন বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে গভর্নরের বক্তব্য বয়কট করেন অর্থনীতি ও ব্যাংকখাতের সাংবাদিকরা।
যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তে রয়েছে যে মুদ্রানীতি সংবাদ সম্মেলন করে প্রকাশ করতে হবে।
বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণ কর্মসূচির সবশেষ পর্যালোচনা প্রতিবেদনে আইএমএফ বলেছে, মুদ্রানীতির স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংককে কমিউনিকেশনের (তথ্য বিনিময়/ প্রকাশ) চর্চাসমূহ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে হবে।
গত ২৫ জুন এই দ্বিতীয় পর্যালোচনার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি।
এতে বলা হয়েছে, "আধুনিক নীতি কাঠামোয় রুপান্তরকে সমর্থনের লক্ষ্যে উন্নত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কমিউনিকেশনের উন্নতি দরকার। এক্ষেত্রে ২০২৪-২৫ অর্থবছর থেকে মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকের সময়সূচি প্রকাশের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাংলাদেশ ব্যাংক। আইএমএফ সমর্থিত ঋণ কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগেই প্রতি ত্রৈমাসিকের (প্রান্তিকের) নীতি প্রতিবেদন নিয়মিত প্রকাশ শুরুর লক্ষ্য রয়েছে তাদের। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কমিউনিকেশন চর্চাগুলোর আরও উন্নতির জন্য আইএমএফের সক্ষমতা উন্নয়ন সহায়তারও প্রয়োজন হবে।"
তথ্য সংগ্রহের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপের ঘটনায় গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধে জড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক। অথচ আর্থিকখাতের নিয়ন্ত্রকটি গণসংযোগ বাড়ানোর এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আইএমএফকে।
গত ২১ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সাংবাদিকদের প্রবেশের ওপর এই অনানুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
এর আগে পাস সংগ্রহ করে এবং নাম ও গণমাধ্যমের নাম নিবন্ধন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অফিসে সহজেই প্রবেশ করতে পারতেন সাংবাদিকরা।
দেশের অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ), সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন- নোয়াব, সম্পাদক পরিষদসহ দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সাংবাদিক প্রবেশের এই নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানায়।
কিন্তু, এখনও সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমতি দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্তৃপক্ষ।