২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদেশি ঋণ পরিশোধ ২৬ শতাংশ বেড়ে ৩৩৬ কোটি ডলার
২০২৪ সালের ৩০ জুনে সমাপ্ত বিগত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ পরিশোধ ২৬ শতাংশ বেড়ে ৩৩৬ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। রোববার (২৮ জুলাই) প্রকাশিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
উচ্চ সুদহারের কারণে ঋণের সুদ পরিশোধ ৪৪ শতাংশ বেড়ে ১৩৫ কোটি ডলার হয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণের গ্রেস পিরিয়িড শেষ হওয়ায় আসল পরিশোধ বাড়ছে। উচ্চ সুদের কারণে ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়েছে বলে ইআরডি সূত্রে জানা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, সুদসহ ঋণ পরিশোধের ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ার ঘটনা বাংলাদেশের বাজেটের ওপর চাপ তৈরি করবে। এতে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো খাতে সরকারের বিনিয়োগের সক্ষমতা সংকুচিত হবে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন টিবিএসকে বলেন, 'আমাদের ঋণ বাড়ছে, সেইসঙ্গে পরিশোধও বাড়ছে। আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধে বেড়ে ৫ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলার হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরমধ্যে আমরা রাজস্ব আদায় যদি বাড়াতে না পারি, এবং বৈদেশিক মুদ্রার জোগানও যদি না বাড়ে – তাহলে ঋণ পরিশোধের চাপে অর্থনীতিতে দুর্দশা নেমে আসতে পারে।'
এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ আসল ও সুদ বাবদ উন্নয়ন সহযোগীদের পরিশোধ করেছিল ২৬৭ কোটি ডলার। এরমধ্যে আসল পরিশোধ করেছিল ১৭৩ কোটি ডলার। আর সুদ পরিশোধ করেছিল প্রায় ৯৩ কোটি ৫৬ লাখ ডলার।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে আসল ও সুদ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ২০১ কোটি এবং ১৩৫ কোটি ডলার।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সুদহার বেড়ে যাওয়ার এবং ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সুদহার বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ইআরডির কর্মকর্তারা।
তারা বলেছেন, বর্তমানে সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট (বা সোফর) সুদহার ৫ শতাংশের বেশি। যা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগে ১ শতাংশের কম ছিল। অন্যদিকে বাংলাদেশের বাজারভিত্তিক ঋণ ক্রমাগত বাড়ছে। একারণে বাংলাদেশকে এখন সুদ বাবদ বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে।