জুলাইয়ে উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থছাড়ের তুলনায় বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেশি
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে উন্নয়ন সহযোগীরা যে পরিমাণ অর্থছাড় করেছে, বাংলাদেশ তার চেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করেছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে উন্নয়ন সহযোগীরা অর্থছাড় করেছে ৩৫৮.৩৩ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, একই মাসে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের সুদ ও আসল মিলিয়ে মোট ৩৮৫.৬৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে।
ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, অর্থবছরের শুরুতে এমনিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি কম থাকে। এ কারণে অর্থছাড়ও কম হয়। অন্যদিকে, জুলাই মাসজুড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল। এর প্রভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছু সমস্যা হয়েছে। ফলে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় অর্থছাড় কিছুটা কমেছে।
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের ছাড় কমেছে ১১.৫২ শতাংশ। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে উন্নয়ন সহযোগীরা ছাড় করেছিল ৪০৫ মিলিয়ন ডলার।
আর ঋণ পরিশোধ বাড়ার কারণ হিসাবে ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে চীনের থেকে নেওয়া ঋণের আসল পরিশোধ বাড়ায় বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে।
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের জুলাই মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ ৫২.৩৪ শতাংশ বেড়েছে। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছিল ২৫৩.০৯ মিলিয়ন ডলার।
এ সময়ে আসল পরিশোধ বাড়েছে ৮০.৭৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ বৈদেশিক ঋণের আসল পরিশোধ করেছে ২৬৪.৮৮ মিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরে একই সময়ে ছিল ১৪৬.৫৩ মিলিয়ন ডলার।
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ জুলাই মাসে আসল পরিশোধ করেছে ১২০.৭৯ মিলিয়ন ডলার, যা এর আগের বছরের একই সময়ে হয়েছিল ১০৬.৫৬ মিলিয়ন ডলার।
এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে কোনো ঋণ চুক্তি সই হয়নি। যদিও এ সময়ে বাংলাদেশ অনুদান হিসাবে ১৬.৪০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল ৬.৯২ মিলিয়ন ডলার।
জুলাই মাসে কে কত ছাড় করলো?
ইআরডি তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি অর্থ ছাড় করেছে জাপান। এই সংস্থাটি ১০৫ মিলিয়ন ডলার ছাড় করেছে জুলাইতে।
এছাড়া, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ৮১.৫৬ মিলিয়ন ডলার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৬৪.৫৭ মিলিয়ন ডলার, বিশ্বব্যাংক ৩৮.৩৯ মিলিয়ন ডলার, রাশিয়া ২৯ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ছাড় করেছে ২১.৫৯ মিলিয়ন ডলার।