৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক, বেশিরভাগ কোম্পানির দরপতন
গত সপ্তাহে ঢাকার শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন দেখা গেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক তিন মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো ৫,৩০০ পয়েন্টের নিচে নেমে গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীরা তাদের আরও ক্ষতি এড়াতে শেয়ার বিক্রি করেছেন বলে এমন দরপতন হয়েছে।
পতনের মধ্যে দিয়ে শেয়ারবাজারের গত সপ্তাহ শুরু হয়। চার দিনই বাজার নিম্নমুখী ছিল। কারণ, খুচরা বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি বাড়িয়ে দেন। সপ্তাহজুড়েই বাজারে বিক্রেতাদের প্রভাব ছিল এবং টানা চতুর্থ সপ্তাহের মতো লোকসানের ধারা অব্যাহত রয়েছে।
ডিএসইর মূল সূচক ডিএসইএক্স শেষ পর্যন্ত ৫,২৫৮ পয়েন্টে দাঁড়ায়, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৬৪ পয়েন্ট বা ৩.০৩ শতাংশ কম। গত চার সপ্তাহে ডিএসইএক্স ৪৭৬ পয়েন্ট হারিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের অধীনে থাকা শেয়ারগুলোর দরপতন অব্যাহত ছিল। অনিশ্চয়তার কারণে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মিউচুয়াল কোম্পানিসহ বড় ধরনের শেয়ারগুলো ক্রমাগত কমছে, যা সূচকের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করেছে।
বিনিয়োগকারীরা তাদের ইক্যুইটি এক্সপোজারগুলো কমাতে পছন্দ করেছেন। একই সঙ্গে তারা জুনে শেষ হওয়া কোম্পানির আয় ঘোষণা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে অপেক্ষা করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কৌশল নিয়েছিলেন।
সামষ্টিক অর্থনৈতিক এবং নিয়ন্ত্রণকারী অনিশ্চয়তাগুলোও নেতিবাচক অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে, যা বিক্রির প্রবণতাকে উসকে দেয়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক ডিএসইএক্স ১৬৪.১ পয়েন্ট বা ৩.০ শতাংশ হারিয়ে ৫,২৫৮ পয়েন্টে স্থির হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের বাজারে অংশগ্রহণও ১৩.৩ শতাংশ কমে ৩,১৮০ মিলিয়ন টাকা হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩,৬৬৭ মিলিয়ন টাকা।
বিনিয়োগকারীরা মূলত ব্যাংকিং খাতে (২০.৪ শতাংশ) সক্রিয় ছিলেন। এরপরের অবস্থানে ছিল ফার্মাসিউটিক্যাল খাত (১৬.৫ শতাংশ) এবং আইটি খাত (১১.৩ শতাংশ)। সবচেয়ে বড় পতনের মুখে রয়েছে সার্ভিসেস সেক্টর (-৮.৮ শতাংশ)।
ইবিএল সিকিউরিটিজের তথ্য অনুযায়ী, ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, রেনাটা ও বিকন ফার্মার সম্মিলিতভাবে পাঁচটি বড় মূলধনী স্টক সপ্তাহজুড়ে সূচকের পতনের জন্য এক-চতুর্থাংশ দায়ী।
চলতি সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন থেকে বেরিয়ে এসেছে ৫২ বিলিয়ন টাকা, যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৬৯১ বিলিয়ন টাকায়। গত চার সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে ২৪২ বিলিয়ন টাকা।
একটি কোম্পানির মোট বকেয়া শেয়ারের সংখ্যাকে তার বর্তমান বাজার মূল্য দিয়ে গুণ করে বাজার মূলধন গণনা করা হয়।
এছাড়া ৩০টি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানির জোট ব্লু-চিপ ডিএস৩০ সূচক ৫৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৩০ পয়েন্টে এবং শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী ডিএসইএস সূচক ৩২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৭৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।