প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক: আইনশৃঙ্খলা ও জ্বালানি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা
আইন শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ফরেন ইনভেস্টরস' চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সদস্য। তিনি বলেন, "আমরা মূলত দেশের বিদ্যমান অবস্থা এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি।"
গতকাল মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এফআইসিসিআই-এর সদস্যরা।
আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে সাপ্লাই চেইন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তাছাড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার না হওয়ায় বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ইমেজ নষ্ট হচ্ছে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে। এসব সমস্যা দ্রুত সমাধান করার প্রস্তাব দিয়েছেন এফআইসিসিআইয়ের সদস্যরা।
এফআইসিসিআইয়ের সদস্য একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, "আমরা রেগুলার এনার্জি সাপ্লাই চাই। মিড টার্ম ও লং টার্মে এনার্জি চাই। এ এনার্জি অ্যাফোর্ডেবল ও গ্রিন এনার্জি হতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চাই। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো সবকিছুর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ থাকার চেষ্টা করে। আমরা স্থানীয় আইনও মেনে চলি, সেই সঙ্গে গ্রুপের আইনও মেনে চলতে হয়। যার কারণে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোকে মার্কেট শেয়ারের তুলনায় বেশি ট্যাক্স দিতে হয়।"
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, "ধরেন আমার মার্কেট শেয়ার ৭ শতাংশ হিসেবে সরকারকে আমরা যে ট্যাক্স দেই সেটা ওই সেক্টরের ৭ শতাংশ হওয়া উচিত। কিন্তু আমরা দেশেরে নাম্বার ওয়ান করদাতা। আমরা বলেছি আপনারা একটা রিসার্চ ফার্ম করেন, ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চ করেন, টোটাল ইন্ডাস্ট্রির মার্কেট শেয়ার কত আছে, মার্কেট শেয়ারের বিপরীতে কত রেভিনিউ দেয়। এটা বের করতে পারলে কর ফাঁকি কমে যাবে।"
এছাড়া বিনিয়োগকারীদের বিষয়ে তিনি বলেন, "প্রতি বছর যদি নতুন নতুন পলিসি আসে আর চেঞ্জ হয় তা বিনিয়োগকারীদের কনফিডেন্স নষ্ট করে। ইনভেস্টররা বাংলাদেশে আসে কিন্তু লং টার্মের জন্য। তাকে লং টার্ম প্রিডেক্টিবল পলিসি দিতে হবে যেটার মাধ্যমে সে প্রেডিক্ট করতে পারবে যে তার ইনভেস্টমেন্টটা কি হয়।
তাছাড়া বাংলাদেশ নিয়ে নেগেটিভ পিআর হচ্ছে বলে তিনি জানান। এ সরকারের উচিত, সংস্কারের কিছু তৎক্ষণাৎ ফলাফল দেখানো যা বিভিন্ন ফোরামে দেখানো যাবে বলে পরামর্শ দেন তিনি।
আরেক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, "আমরা বাংলাদেশের জন্য কাজ করি। আমাদের প্রতিষ্ঠান ৩৫টা দেশকে রিপ্রেজেন্ট করে। এ ৩৫টা দেশে যে বিনিয়োগকারীরা আছেন তারা আমাদের কাছে অনুরোধ করেছেন, আমরা যেন বাংলাদেশের হয়ে কাজ করি।
এফআইসিসিআইয়ের সভাপতি জাভেদ আক্তার বলেন, "প্রধান উপদেষ্টা আমাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের আমাদের প্রতিক্রিয়ার প্রশংসা করেছেন। সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী হিসেবে, আমরা বাংলাদেশের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং দেশের একজন শক্তিশালী প্রতিনিধি হিসেবে আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের জন্য যা ভালো তা ব্যবসার জন্যও ভালো হবে।"