রেস্তোরাঁ, ওষুধ ও আইএসপিতে ভ্যাট আরোপ থেকে পিছিয়ে আসতে পারে সরকার
সারাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে গত ৯ জানুয়ারি তিনটি পণ্য ও সেবার ওপর বাড়ানো ভ্যাট প্রত্যাহার হতে পারে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
এগুলো হলো- রেস্তোরাঁ, ওষুধ ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার বা আইএসপি।
এনবিআরের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে (টিবিএস) বলেন, 'তিনটি খাতের প্রতিনিধিরা আমাদের কাছে তাদের যৌক্তিকতা তুলে ধরে চিঠি পাঠিয়েছেন। জনগুরুত্ব বিবেচনা করে এসব খাতের আরোপিত বা বর্ধিত ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার হতে পারে বা কমতে পারে।'
এদিকে, বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এনবিআরের ভ্যাট পলিসি বিভাগের প্রথম সচিব মো. মশিউর রহমানের সই করা একটি চিঠি বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতিতে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, 'রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির আবদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ খাতের ভ্যাট হার পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'
এতদিন রেস্তোরাঁর ভ্যাট ছিল ৫ শতাংশ। গত ৯ জানুয়ারি এটি তিনগুণ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়।
এছাড়া, ওষুধ খাতে ভ্যাট ২.৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করা হয় এবং আইএসপি'র ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়।
সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ পণ্য ও সেবায় ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, ব্যবসায়ীরাও আন্দোলনে নামার হুমকি দেন।
এমনকি রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি এনবিআরের সামনে মানববন্ধনের ঘোষণা এবং এমনকি রেস্তোরাঁ বন্ধ করারও হুমকি দেয়।
অন্যদিকে, ওষুধ খাতের উদ্যোক্তারাও এই ভ্যাট কমানোর জন্য এনবিআরকে চিঠি পাঠায়।
ওষুধ খাতে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওষুধ শিল্প সমিতি।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে (টিবিএস) বলেন, 'ওষুধের ওপর বর্ধিত ভ্যাট যাতে প্রত্যাহার করা হয়, সে বিষয়ে আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি এর সমাধান হবে।'
এনবিআরের ওই কর্মকর্তা বলেন, 'ওষুধে বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার হতে পারে।'
তবে আইএসপি'র সম্পূরক শুল্ক এবং রেস্তোরাঁর বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার হবে, নাকি কমানো হবে তা নিশ্চিত করেননি তিনি।
বাংলাদেশ রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান টিবিএসকে বলেন, '৫ শতাংশের বেশি ভ্যাট হলে আমরা আন্দোলনে নামব। আমাদের দাবি ভ্যাট ৩ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে।'
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২১ সালের জরিপ অনুযায়ী, দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁর সংখ্যা ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি।
আইএমএফ'র চাপে নজিরবিহীনভাবে অর্থবছরের মাঝে এসে ঢালাও ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর মাধ্যমে ১২ হাজার ২৭০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য নিয়েছিল এনবিআর।