পঞ্জি স্কিমের শিকার হওয়া গ্রাহকদের অর্থ ফেরত পাওয়ার আশা ক্ষীণ
লাখ লাখ প্রতারিত ই-কমার্স গ্রাহকের অর্থ ফেরত পাওয়ার স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে এসেছে। কেননা কেলেঙ্কারিতে জড়িত ই-কমার্স কোম্পানিগুলোর অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স ও সম্পদ কোনোটিই নেই।
তার ওপরে গ্রাহকদের কোম্পানিগুলোর দেনা কত, সে সম্পর্কে সরকারের কাছে কোনো তথ্য নেই। এ কারণে টাকা উদ্ধার আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দালাল প্লাসের কথা। গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম ১৩৭ দশমিক ৯৩ কোটি টাকা নিয়ে পণ্য না দেওয়ার অভিযোগে লাপাত্তা এই প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কানাকড়িও নেই বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করে পণ্য না পাওয়া ভুক্তভোগী গ্রাহকদের জমা দেওয়া পুরো টাকা ব্যাংক থেকে তুলে নিয়েছেন দালাল প্লাসের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এক টাকাও ব্যালেন্স না থাকা দালাল প্লাসের দুটি ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক! কোম্পানিটির শীর্ষ নির্বাহী গ্রেপ্তার হয়ে আছেন।
একই অবস্থা সিরাজগঞ্জ শপের গ্রাহকদেরও। এ কোম্পানির বিরুদ্ধেও গ্রাহকদের বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
পণ্য অর্ডার করে কোম্পানির অ্যাকাউন্টে গ্রাহকরা ৪৭৪ দশমিক ৭৫ কোটি টাকা জমা করেছেন। অফিস গুটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার আগে প্রতিষ্ঠানের ছয়টি ব্যাংক হিসাবে সাকুল্যে ৩০ দশমিক ৮১ লাখ টাকা রেখে বাকি সব তুলে নিয়েছে সিরাজগঞ্জ শপ।
কোম্পানিটির কাছ থেকে গ্রাহকদের পাওনা আদায়ই যখন প্রায় অসম্ভব, তখনই জানা গেল অবৈধভাবে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) নগদ-এর ৪৭ দশমিক ৪৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সিরাজগঞ্জ শপ। ওই অর্থ ফেরত পেতে মামলা করেছে নগদ। তবে অভিযুক্তদের কাউকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
আলোচিত ই-কমার্স প্লাটফর্ম ইভ্যালির গ্রাহকদের অবস্থা আরও করুণ। মধ্য-সেপ্টেম্বরে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল নিজেই ক্রেতা ও মার্চেন্টদের কাছে ৫৪২ কোটি টাকা দেনা থাকার কথা লিখিতভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছিলেন। রাসেলের দেওয়া এ তথ্য সত্য হলেও ইভ্যালির ১৩ ব্যাংক হিসাবে থাকা অর্থ দিয়ে মাত্র ৯ শতাংশ পাওনা পরিশোধ করা যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইভ্যালির চলতি সম্পদের মূল্য মাত্র ৬১ কোটি টাকা। আর প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে সব মিলিয়ে আছে ৪৯ দশমিক ১৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ ইভ্যালির পুরো সম্পদ ও ব্যাংকে থাকা টাকা ফেরত দিলেও গ্রাহকরা তাদের পাওনার মাত্র এক-পঞ্চমাংশ ফেরত পাবেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুসারে, তিন বছর আগে যাত্রা শুরু করা ইভ্যালির ব্যাংক হিসাবে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গ্রাহকদের কাছ থেকে জমা হয়েছে ৭ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে কোম্পানিটি উঠিয়েছে ৭ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।
জুলাই মাসে এস্ক্রো সার্ভিস চালুর আগে ইভ্যালি, দালাল প্লাস কিংবা সিরাজগঞ্জ শপের মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোতে অর্ডার করে টাকা খোয়ানো অগণিত ক্রেতার পাওনা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ বলে মনে করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
উত্তোলন করা টাকার কত অংশ কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহে ব্যয় করেছে, আর কত অংশ পাচার হয়েছে, সে বিষয়ে তথ্য নেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। গ্রাহকদের পাওনা ফেরত দেওয়া পরের কথা, কোম্পানিগুলোর কাছে গ্রাহকদের মোট পাওনার পরিমাণ সম্পর্কেও ধারণা নেই সরকারি সংস্থাগুলোর।
পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সন্দেহভাজন তালিকায় থাকা ৫০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে গত অক্টোবরে চিঠি দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই তালিকার ৩০টি প্রতিষ্ঠানের হিসাবের তথ্য গত মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাকিগুলোর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও লেনদেনের তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম মূল্য নিয়ে পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ থাকা ৩৫টি ই-কমার্স কোম্পানি গ্রাহকদের কাছ থেকে মোট ২১ হাজার ৩০ দশমিক ৫১ কোটি টাকা নিয়েছে। এসব কোম্পানির অ্যাকাউন্টে এখন স্থিতি মাত্র ৩৮৮ কোটি টাকা, যা মোট জমার মাত্র ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
এর মধ্যে ইভ্যালি, ধামাকা শপিং, ই-অরেঞ্জ, দারাজ, আলেশা মার্ট, সিরাজগঞ্জ শপ, ফস্টার, কিউকুম, রিংআইডি ও আনন্দের বাজার—এই দশটি কোম্পানিতে গ্রাহকরা ২০ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা জমা দিয়েছেন, যা ৩৫ কোম্পানিতে মোট জমার ৯৬ শতাংশ। কোম্পানিগুলোর ব্যাংক হিসাবে বর্তমান স্থিতির পরিমাণ ৩২১ কোটি টাকা, যা গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থের মাত্র ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে দারাজ ও আলেশা মার্ট ছাড়া বাকিগুলোর ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ইভ্যালি, ধামাকা, ই-অরেঞ্জ, সিরাজগঞ্জ শপ, কিউকম, আনন্দের বাজার, রিংআইডির শীর্ষ নির্বাহীরা হয় পলাতক, নাহয় গ্রেপ্তার হয়েছেন।
দারাজের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ নেই। আর আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের পাওনা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ থাকলেও কোম্পানিটির বিরুদ্ধে এখনও কোনো মামলা হয়নি বলে জানা গেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এস্ক্রো সার্ভিস চালুর পরে পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা গ্রাহকদের ২১৪ কোটি টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে মাঝেমধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। কিন্তু এর আগে লোভনীয় অফারে লাখো গ্রাহকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ আপাতত নেই। কোম্পানিগুলোর এমন কোনো সম্পদও নেই, যা বিক্রি করে গ্রাহকের পাওনা মেটানো সম্ভব।
তাদের আশঙ্কা, এক-দেড় দশক আগে যুবক ও ডেসটিনিসহ এমএলএমকেন্দ্রিক আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের মতোই ই-কমার্সে প্রতারিত গ্রাহকদেরও পাওনা অর্থ ফেরতের আশায় দীর্ঘকাল অপেক্ষা করতে হতে পারে। এ দুটি কোম্পানির সম্পদ বিক্রি করে গ্রাহকদের পাওনা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
'পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা ই-কমার্স গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বড় কনসার্ন', উল্লেখ করে ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান এএইচএম শফিকুজ্জামান মঙ্গলবার বলেছেন, পুলিশের কাছ থেকে মামলা হওয়া ই-কমার্সের নামের তালিকা পেলে যেসব কোম্পানির নামে মামলা নেই, শুধু সেসব কোম্পানির গ্রাহকদের পাওনা ফেরত দেওয়া হবে।
পেমেন্ট গেটওয়ে চালুর আগে প্রতারিত গ্রাহকদের পাওনা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে আপাতত মন্ত্রণালয়ের কোনো উদ্যোগ নেই বলে জানা গেছে। যদিও ই-কমার্স কোম্পানিতে অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করে প্রতারিত বিপুল সংখ্যক গ্রাহক প্রতিদিনই অর্থ ফেরত পাওয়ার আশায় অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন পাঠাচ্ছেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক ও কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের সাবেক প্রধান মো. হাফিজুর রহমান বলেছেন, এস্ক্রো সার্ভিস চালুর আগে গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ কোম্পানিগুলো কোথায় সরিয়েছে, তা তদন্ত করতে হবে। টাকার গন্তব্য চিহ্নিত করে তা উদ্ধার করা গেলেই কেবল গ্রাহকদের এসব পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব হবে।
অ্যাকাউন্ট জব্দ করেও রক্ষা হয়নি গ্রাহক স্বার্থ
গ্রাহকদের জমা দেওয়া টাকা যাতে কোম্পানিগুলো আত্মসাৎ করতে না পারে, সেজন্য মন্ত্রণালয়, পুলিশ ও আদালতের নির্দেশে ১৭টি ই-কমার্স কোম্পানির ব্যাংক হিসাব স্থগিত ও জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
এই কোম্পানিগুলো হলো: ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, সিরাজগঞ্জ শপিং, ২৪টিকেটি, বুমবুম, আলাদিনের প্রদীপ, আদিয়ান মার্ট, কিউকুম, নিডস ডটকম, রিংআইডি, ফস্টার, র্যাপিড ক্যাশ, দালাল প্লাস, নিরাপদ, উঠাও ক্যাশ এবং ডটলাইন (প্লে অ্যান্ড উইন)।
কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে বিপুল ছাড়ের লোভ দেখিয়ে গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম মূল্য নেওয়ার পর পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ রয়েছে। এসব কোম্পানির সবগুলোর ব্যবসায়িক কার্যক্রম এখন বন্ধ রয়েছে। মালিকরা হয় কারাগারে, না হয় পলাতক রয়েছেন।
টাকা লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগেই কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম নেওয়া প্রায় পুরো টাকাই তুলে ফেলেছে। এই ১৭ কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে ১১ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা, যার ৯৭ শতাংশেরও বেশি অর্থ তুলে ফেলেছে কোম্পানিগুলো। প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক হিসাবে মোট স্থিতির পরিমাণ ৩৫১ কোটি টাকা, যা দিয়ে শুধু ইভ্যালির গ্রাহকদের পাওনার মাত্র ৬৫ শতাংশ মেটানো সম্ভব।
জব্দ হিসাবগুলোর মোট স্থিতির ৫৫ শতাংশই পেমেন্ট গেটওয়ে কোম্পানি ফস্টারের। তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা হওয়ায় ১৯৪ কোটি টাকা স্থিতি থাকা একটি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে রেখেছে বিএফআইইউ। এর মধ্যে ১৬৬ কোটি টাকাই কিউকম গ্রাহকদের।
বড় ও চতুর কোম্পানিগুলোর মতোই গ্রাহকের টাকা উত্তোলনে চতুরতা দেখিয়েছে ই-কমার্স খাতের ছোট কোম্পানিগুলোও। অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার আগেই গ্রাহকের জমা দেওয়া সব টাকা তুলে নিয়ে গেছে আদিয়ান মার্ট, র্যাপিড ক্যাশ, ২৪টিকেটি, নিডস ডট কম ও নিরাপদ-এর মতো ছোট কোম্পানিগুলোও।
নিরাপদ নামের কোম্পানিটির ব্যাংক হিসাবে ২ দশমিক ৯৩ কোটি টাকা জমা দিয়েছিলেন গ্রাহকরা, যার পুরোটাই তুলে নিয়েছে তারা। ফলে শূন্য ব্যালেন্স থাকা হিসাবই জব্দ করতে হয়েছে বিএফআইইউকে।
একইভাবে নিড্স ডটকম ও আদিয়ান মার্টের অ্যাকাউন্টে অর্ডারের বিপরীতে ১৭ কোটি টাকা অগ্রিম জমা করেছিলেন গ্রাহকরা। এ দুটি কোম্পানির জব্দ হিসাবে এখন ব্যালেন্স মাত্র ২ হাজার টাকা।
উন্মুক্ত অ্যাকাউন্টে স্থিতি আরও কম
আর্থিক লেনদেন বিচারে দেশের ই-কমার্স খাতের দ্বিতীয় বৃহত্তম কোম্পানি দারাজ ও তৃতীয় বৃহত্তম কোম্পানি আলেশা মার্টসহ ১৩টি ই-কমার্স কোম্পানির ব্যাংক হিসাব উন্মুক্ত রয়েছে।
এই দুটি কোম্পানিতে গ্রাহকরা অর্ডারের বিপরীতে ৯ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা জমা দিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে অ্যাকাউন্টগুলোতে স্থিতির পরিমাণ ৩৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ গ্রাহকদের জমা অর্থের মাত্র ০ দশমিক ৪০ শতাংশ অর্থ কোম্পানিগুলোর অ্যাকাউন্টে রয়েছে।
আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের রিফান্ড না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কোম্পানিটির কাছে গ্রাহকদের পাওনার পরিমাণ ৩০০ কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু কোম্পানিটির অ্যাকাউন্টে স্থিতির পরিমাণ ২ দশমিক ০৭ কোটি টাকা।
আলেশার হিসাবের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করার কাজ চলছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে ক্রেতাদের পাওনা টাকা রিফান্ড দেওয়ার জন্য ৩০০ কোটি টাকার ঋণ সুবিধা চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন কোম্পানিটির চেয়ারম্যান মো. মুনসুর আলম শিকদার। তার আবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে ফরোয়ার্ড করেছে মন্ত্রণালয়।
অন্যদিকে হিসাব জব্দ না হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে চীনভিভিত্তিক বৈশ্বিক ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবা ডটকমের বিনিয়োগ পাওয়া দারাজ গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম মূল্য নেওয়ার পাশাপাশি ক্যাশ অন ডেলিভারি সিস্টেমেও ব্যবসা করে আসছে। গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম অর্থ নিয়ে পণ্য বা রিফান্ড না করার মতো গুরুতর অভিযোগ নেই কোম্পানিটির বিরুদ্ধে। এ বছরের অক্টোবর শেষে কোম্পানিটির ৭৩টি ব্যাংক হিসাবে জমার পরিমাণ ৬ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা এবং স্থিতির পরিমাণ ৩৪ কোটি টাকা।
৫০ কোটি টাকার বেশি গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে এ তালিকায় রয়েছে শ্রেষ্ঠ ডটকম, প্রিয়শপ, বাংলাদেশ ডিল ও আকাশ নীল।
এই চার কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে গ্রাহকরা প্রায় ২৫৬ কোটি টাকা জমা দিয়েছেন। অক্টোবর শেষে তাদের অ্যাকাউন্টে স্থিতির পরিমাণ ৮ দশমিক ৩১ লাখ টাকা।
আরও যেসব কোম্পানির তথ্য খুঁজছে বাংলাদেশ ব্যাংক
এখনও ২০টি ই-কমার্স কোম্পানির ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া যায়নি বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে থলে নামের একটি কোম্পানির পাঁচটি ব্যাংক হিসাব স্থগিত করে রাখা হয়েছে। কোম্পানিটির বাকি হিসাবগুলোর তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।
উইকুম, চলন্তিকা, ওয়ালমার্ট, ব্রাইট হ্যাশ, গেজেট মার্ট ডটকম, টিকটিকি, শপআপ ইলোন, স্বাধীন, ই-শপ ইন্ডিয়া, বিডি লাইক, সান টিউন, সুপম প্রোডাক্ট ও নিউ নাভানা নামের কোম্পানিগুলোর ব্যাংক হিসাব সংগ্রহের কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
উঠাও ক্যাশ, অ্যামস বিডি, সহজ লাইফ/লাইভলি লাইফ, আরএসটি ওয়ার্ল্ড, ইজি আইটি লিমিটেড এবং ওএম বাজার-এর নামে জেনারেল সার্চে কোনো ব্যাংক হিসাব পায়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।