কোভিড এবং এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজন উন্নত বিশ্বের সহযোগিতা: টিপু মুনশি
কোভিড এবং এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উন্নত বিশ্বের সহযোগিতা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
'দ্য রোল অফ ট্রেড ইন ডেভেলপিং কান্ট্রিজ, রোড টু রিকোভারি' শীর্ষক বিশ্বব্যাংক এবং ডব্লিউটিও'র পলিসি পেপার তৈরীর আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ ও ওয়ার্ল্ড ট্রেড অরগানাইজেশন (ডব্লিউটিও) সোমবার (২৪ জানুয়ারি) এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন তিনি।
টিপু মুনশি বলেন, "চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এবং এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ এবং ডব্লিউটিও এর সহযোগিতা অব্যাহত রাখা একান্ত প্রয়োজন।"
তিনি আরও বলেন, "এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পরবর্তী (২০২৬ সালের পরও) ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের 'এভ্রিথিং বাট আর্মস' স্কিমের আওতায় বাংলাদেশের বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখা, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে এলডিসিভুক্ত দেশের বাণিজ্য বাণিজ্য সুবিধা অব্যাত রাখা, নামমাত্র সুদে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তা প্রাদান এবং উন্নত দেশের বাণিজ্য ও টেকনিক্যাল সহযোগিতা অব্যাহত রাখা জরুরি।"
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, "জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ গত ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হওয়ার সুপারিশ অনুমোদন করেছে। ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশকে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।"
"মহামারি কোভিড-১৯ এর কারনে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকেও কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে। সরকার যথাসময়ে প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে ব্যবসায়ীদের সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে," যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা হচ্ছে বলেও জানান টিপু মুনশি।
সতেরো কোটি মানুষ বাংলাদেশের সামনে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং কর্মসংস্থানের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, "২০০৯ থেকে ২০২১ সালে বাংলাদেশের গড় অর্থনৈতিক গ্রোথ ছিল ৬.৩ ভাগ। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এটি কমে আসলেও আগামী ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে তা ৭.২ ভাগে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।"
"বাংলাদেশের মানুষের বর্তমান মাথাপিছু আয় ২,৫৫৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, দেশের অর্থনীতির আকার এখন প্রায় ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া, বাংলাদেশ রপ্তানি বাণিজ্যে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে," যোগ করেন তিনি।
ইউরোপিয় ইউনিয়নসহ উন্নত বিশ্ব বাণিজ্য ক্ষেত্রে যে সহায়তা দিয়েছে তা বাংলাদেশকে উৎসাহিত করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "পরিস্থিতি মোকাবেলায় এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখা খুবই প্রয়োজন।"
টিপু মুনশি বলেন, "বিশ্ববাজারের চাহিদার ৬.৫ ভাগ তৈরী পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে, প্রথম অবস্থানে রয়েছে চীন। দেশে প্রায় সাড়ে চারহাজার উন্নত ফ্যাক্টরিতে শ্রমিক বান্ধব ও নিরাপদ পরিবেশে ৪০ লাখ মানুষ কাজ করছে, এর ৬০ ভাগই নারী।"
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রপ্তানির প্রায় ৮১ ভাগ আসে তৈরী পোশাক খাত থেকে।
বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি মেডিকেল পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্য, প্লাষ্টিক, হোম টেক্সটাইল এবং তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে বলেন।
"বাংলাদেশ সরকার এসব খাতের রপ্তানি বৃদ্ধি করতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ সকল সেক্টর প্রসার লাভ করলে দেশের রপ্তানি আয় বাড়বে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত হবে," বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।