উচ্চ সুদহার, কঠিন শর্তে নাগালের বাইরে গৃহঋণ
নতুন বাড়ি নির্মাণ, ফ্ল্যাট কেনা বা বাড়ি সংস্কারের জন্য প্রদত্ত ঋণের ওপর বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সুদহার প্রতিবেশিসহ বিভিন্ন দেশের তুলনায় অনেক বেশি।
বিশ্ব ব্যাংক, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার গবেষণা বলছে, বাড়ির জন্য উচ্চমাত্রার সুদের হার, ঋণ পেতে মর্টগেজের কঠিন শর্ত এবং ঋণের সর্বজনীন ব্যবস্থা না থাকায় বাংলাদেশে নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় ও সাশ্রয়ী আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়টি বেশ কঠিন।
এই বিষয়ে সরকারেরও তেমন উদ্যোগ নেই। বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ থাকলে সেগুলো সর্বজনীন নয়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ও উন্নত দেশগুলোর গৃহঋণ ব্যবস্থা অনুসরণ করে বাংলাদেশে একটি যৌক্তিক ব্যবস্থা চালু করা সময়ের দাবি।
তবে বাংলাদেশের ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছে, আমাদের দেশের মুদ্রাস্ফীতি, কস্ট অব ফান্ড ডিপোজিটের রেট সবকিছু মিলিয়ে হোম লোনের ইন্টারেস্ট রেট নির্ধারণ করা হয়। বিশ্ব ব্যাংক বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে কম ইন্টারেস্ট রেটে বিনিয়োগ আনতে পারলে, বাংলাদেশে হোম লোনের ইন্টারেস্ট রেট কমানো সম্ভব।
আমাদের দেশে ঋণ দেওয়ার জন্য একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (বিএইচবিএফসি) সর্বনিম্ন সুদহার ৮ শতাংশ হার এবং সর্ব্বোচ্চ ৯ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ব এই নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি একজনকে সর্ব্বোচ্চ ২ কোটি টাকা ঋণ দেয় । যা ৫ বছর থেকে ২৫ বছর মেয়াদী হতে পারে।
আবার ২৬টি বেসরকারি ব্যাংকের হোম লোনের সুদহার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সর্বনিম্ন সুদের হার নির্ধারণ করা আছে ৮.৯৯ শতাংশ এবং সর্ব্বোচ্চ ১৫ শতাংশ হারে। তবে একটি বেসরকারি নন-ব্যাংকিং ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান সর্বনিম্ন সুদহার নির্ধারণ করেছে ৮ শতাংশ এবং সর্ব্বোচ্চ ৮.৫ শতাংশ হারে।
ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি ডেডিকেটেড হাউজিং ব্যাংক ও ৫টি হাউজিং ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যাদের সর্বনিম্ন সুদের হার ৬ শতাংশ এবং সর্ব্বোচ্চ ৭.৯৯ শতাংশ হারে সুদ নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এছাড়াও প্রতিটি প্রাদেশিক সরকারের অধীনেও একটি করে হাউজিং ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যাদের সুদের হা্র কেন্দ্রীয় সরকারের নির্ধারিত সু্দহারের সমান। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপরেশনের (আইএফসি) সাম্প্রতিক "ব্যারিয়ারস কনস্ট্রেইনিং দ্য লো অ্যান্ড মিডল ইনকাম হাউজিং ফাইন্যান্স মার্কেট ইন বাংলাদেশ" শীর্ষক এক গবেষণায় উঠে এসেছে। ভারতে ৩০ বছর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধের সময়সীমা নির্ধারণ করা আছে।
এছাড়াও ভারতের বেসরকারি ব্যাংকিং ও নন-ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলো ৬.৭০ শতাংশ থেকে ৮.০৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদের হার নির্ধারণ করেছে।
আইএফসির কয়েক বছর আগের "অ্যাফোর্ডেবল হাউজিং ফাইন্যান্স মার্কেট ইন বাংলাদেশ হিউজ অ্যান্ড ভায়াবল, ফাইন্ডস আইএফসি স্টাডি" শীর্ষক এক সমীক্ষায় বলা হয়, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ ব্যাংক ঋণকে এক ধরনের ফাঁদ মনে করে। ফলে লোকজন বিশেষ করে মফস্বলের লোকজন ব্যাংক ঋণের চিন্তাও করে না। তারা অনেকেই বছরের পর বছর জমানো উপার্জনের একটি অংশ দিয়ে বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করে। বিকল্প হিসেবে জমি বিক্রয় বা বন্ধক রেখে টাকা সংগ্রহ করে। অনেকেই আত্মীয়-স্বজন বা কাছের বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা ধার নেয়। আবার অনেকেই দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উচ্চহারে সুদের ওপর টাকা ধার করে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশে ২০৫০ সালে শহুরে জনসংখ্যার সংখ্যা বিস্ময়করভাবে ১১২.৪৪ মিলিয়নে পরিণত হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা এখন বিশ্বের ১১তম বৃহত্তম মেগাসিটি এবং ২৭.৩৭ মিলিয়ন জনসংখ্যাসহ ২০৩০ সালে ৬ষ্ঠ বৃহত্তম মেগাসিটি হয়ে উঠবে। আইএফসি বলছে, এই নাগরিকদের জন্য সহজ শর্তে গৃহঋণের ব্যবস্থা করতে না পারলে, আবাসন সংকট বৃদ্ধি পাবে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আপনি যুক্তরাষ্ট্র বলেন, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, ভারত ও এর প্রদেশগুলো এমনকি আফ্রিকান দেশগুলোর চেয়েও বাংলাদেশে আবাসন ঋণের সুদ ও শর্ত বেশ কঠিন।"
তিনি বলেন, "আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র তাদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিতের পথে। শুধু তাদের দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভালো ঋণ ব্যবস্থার কারণে। বাংলাদেশে আবাসন খাতে অর্থায়ন প্রক্রিয়া সহজ নয়। ভারতে আবাসন খাতে বিনিয়োগকে অগ্রাধিকারভিত্তিক খাত হিসেবে দেখা হয়। যার ফলে ভারতে আবাসন খাতে ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে বিনিয়োগ সহজ। এছাড়াও ভারতে ব্যক্তিপর্যায়ে ও বিনিয়োগকারীরা সহজে ও তুলনামূলক কম সুদে ব্যাংকঋণ পাচ্ছেন। কিন্তু বাংলাদেশে সুদের হার বেশি।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, "বাংলাদেশে গ্রামের একজন মানুষ বাড়ি করার জন্য যে ঋণ নিবে, সে জানেও না যে ঋণ পাওয়া যায়। আবার যারা এই ঋণ সম্পর্কে জানে তারা ঋণ নিতে উৎসাহ বোধ করে না। সরকার আশ্রয়ন প্রকল্প করছে, ভূমিহীনদের আবাসন নিশ্চিতের জন্য। কিন্তু যাদের ভূমি আছে বাড়ি করার সামর্থ্য নেই, তাদের জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা ও নির্দেশনা নেই সরকারের পক্ষ থেকে।"
"এসডিজির লক্ষ্য পূরণের অন্যতম শর্ত বাংলাদেশে শতভাগ আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের শর্ত পূরণ বেশ কঠিন ব্যাপার। এছাড়া সাশ্রয়ী বাড়ি নির্মাণ নিশ্চিতের বিষয়টিও কঠিন।"
বাংলাদেশে প্রায় প্রতিটি ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শর্ত অনুযায়ী হোম লোন পেতে হলে, সর্বনিম্ন মাসিক আয় হতে হবে (বেসরকারি বেতনভুক্ত: ৪০,০০০টাকা, সরকারি চাকরি: ২৫,০০০ টাকা, স্বনির্ভর: ৫০,০০০ টাকা এবং বাড়িওয়ালা: ৪০,০০০টাকা।)
এই কঠিন শর্ত পূরণ করার সামর্থ্য বাংলাদেশের ৮০ শতাংশের বেশি মানুষের নেই বলে উল্লেখ করেন আহসান এইচ মনসুর।
বাংলাদেশের আবাসন ব্যবস্থা
জাতিসংঘের জনসংখ্যা জরিপ ২০২০ অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৮৬,৮৯৩,৮৩০ জন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বাড়ি রয়েছে ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪০ হাজার। নিজের বাড়ি আছে (বাড়ির মালিক) ৩ কোটি ২৪ লাখ ৬৯ হাজার পরিবারের, যা মোট বাড়ির ৮৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। এছাড়া ভাড়া বাড়িতে থাকেন ৪৬ লাখ ২০ হাজার বা ১২ দশমিক ২১ শতাংশ পরিবার। ভাড়া ছাড়াই বাড়িতে বসবাস করেন সাড়ে ৬ লাখ বা ১ দশমিক ৭১ শতাংশ পরিবার। এছাড়াও দেশে ঝুপড়ি ঘর রয়েছে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৩৫টি।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এই পরিসংখ্যন অনুযায়ী এখনও দেশের বড় একটি জনগোষ্ঠীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়নি। এই আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার সকলের বাড়ি করে দিতে পারবে না। কিন্তু ব্যাংকিং ও নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাড়ি নির্মাণের জন্য বড় বিনিয়োগ যা সহজভাবে করা যায়, এরকম একটি ফ্রেমের আওতায় আনতে পারলে দেশের সকলের জন্য গৃহব্যবস্থা নিশ্চিত ও সাশ্রয়ী বাড়ি নির্মাণ সহজ হবে।
সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পাওয়া কঠিন
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান টিবিএসকে বলেন, বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের বেশিরভাগ দেশগুলোর আবাসন খাতের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোই বড় ভূমিকা রাখে। কিন্তু বাংলাদেশে এর উল্টো।
এর একটি সমাধান হওয়া দরকার। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিমার্জিত করতে হবে, ঢেলে সাজাতে হবে। এরকম আরও নতুন প্রতিষ্ঠান করতে হবে সরকারকে।
এ কারণে হোম লোন দিতে দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোই এগিয়ে রয়েছে বলে বিশ্ব ব্যাংকের স্টাডিতে বলা হয়েছে। তবে গ্রাম পর্যায়ে সরকারি বেসরকারি কোনো ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান সেভাবে হোম লোন দেয় না।
কঠিন শর্ত অ্যাফোর্ডেবল হাউজিং অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস ইন বাংলাদেশ শীর্ষক আরেক গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে হোম লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে শুধু উচ্চহারের সুদ নয়। ঋণ নেওয়ার জন্য মর্টগেজের শর্তও বেশ কঠিন।
স্টাডি বলছে, বাড়ি করার জন্য বাংলাদেশে শুধু জমির ওপর বাড়ি নির্মাণ করার জন্য ঋণ দেয় না প্রতিষ্ঠানগুলো। একটি বাড়ির নকশা প্রণয়নের পর ন্যূনতম ভিত্তি স্থাপিত হলে ঋণ আবেদন গ্রহণ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ প্রায় ৪০টি দেশের উদাহরণ তুলে ধরে সমীক্ষায় বলা হয়, কোনো ব্যক্তি শুধু চুক্তি করার উপযুক্ত হলে এবং মর্টগেজ দেওয়ার উপযুক্ত হলেই তাকে বড়ি করার জন্য ঋণ সুবিধা দেওয়া হয়। বাংলাদেশে এরকম সুবিধা নেই।
আইএফসি বলছে, বাংলাদেশের মর্টগেজ বাজার কয়েক বছর ধরে আকারে বেড়ে আরও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠেছে। তা সত্ত্বেও সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের ক্রমবর্ধমান চাহিদার তুলনায় সরকারি খাতের হাউজিং প্রোগ্রাম এবং সরকারি উদ্যোগগুলো কম। সামগ্রিকভাবে আবাসন চাহিদার তুলনায় সরকারি আবাসন প্রকল্প পিছিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে বেসরকারি খাতের হাউজিং ডেভলপমেন্ট ও হাউজিং ফাইন্যান্স অধিকাংশ মধ্য ও নিম্নআয়ের পরিবারের জন্য যথেষ্ট নয়। শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠী যাদের কোনো নিয়মিত নাই, তারা এধরনের অর্থায়নের বাইরে।
বিভিন্ন দেশের গৃহঋণের তুলনামূলক চিত্র
বেশ কয়েকটি গবেষণা পর্যালোচনা করে জানা যায়, বাংলাদেশে মোট ঋণের মধ্যে গৃহঋণের পরিমাণ মাত্র ৩.১২ শতাংশ। ভারতে এই হার ৬.৭ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ায় ৬ শতাংশ, পাকিস্তানে ৪ শতাংশ, চীনের ৯.৬ শতাংশ এবং মালেশিয়ায় ৭.৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন টিবিএসকে বলেন, বাংলাদেশে বেসরকারি খাতসহ বিভিন্ন সেক্টরে প্রতিবছর যে পরিমাণ গৃহঋণ বিতরণ করা হয়, সেখানে এই ঋণ তুলনামূলক অনেক কম। আমাদের দেশের সরকার এখন আবাসন খাতকে আগের তুলনায় অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তাই এই সেক্টরের জন্য লোনের টার্গেট বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের সংশ্লিষ্টরা উদ্যোগ নিতে পারে। গৃহঋণ সহজে পেতে একটি সর্বজনীন ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার।
উচ্চহারের সুদ নিয়ে যা বললেন সংশ্লিষ্টরা
বাংলাদেশে নন ব্যাংকিং অর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ফাইন্যান্স করপোরেশন লিমিটেড (ডিবিএইচ) শুধু গৃহঋণ দিয়ে থাকে। ডিবিএইচ-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও নাসিমুল বাতেন টিবিএসকে বলেন, "গৃহঋণের হার আলাদা নয়। পুরো অর্থনীতিতে অন্যান্য ঋণের যে হার রয়েছে সেটার সঙ্গে মিলিয়ে বাংলাদেশের হোম লোনের হার নির্ধারণ করা আছে। আমাদের দেশের মুদ্রাস্ফীতি, কস্ট অব ফান্ড ডিপোজিটের হার যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা বা অন্য দেশের সাথে তুলনা করলে হবে না।"
তিনি বলেন, "ওইসব দেশে লোকজন ব্যাংকে টাকা রাখলে ডিপোজিটের রেট পায় না। আমাদের এখানে ইনফ্লেশেনের চেয়ে ডিপেজিটের রেট বেশি দিতে হয়। আমাদের এখানে ডিপোজিটের রেট ৬ শতাংশের কাছাকাছি। সুতরাং আমি যখন টাকা আনব ৬ শতাংশ রেট দিয়ে, তখন আমার লোনের সাথে একটি মার্জিন যোগ করতে হয়। অন্যান্য ঋণের হার একরকম হবে আর গৃহঋণের হার সম্পূর্ণ আরেক রকম হবে তা নয়। হয়তো একটু কম হবে। একটা ১০ শতাংশ আরেকটা ৫ শতাংশ, ওরকম হবে না। কারণ ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান যে টাকাটা নিয়ে এসে বিনিয়োগ করে, সেটাও উচ্চহারে আনতে হচ্ছে।"
তিনি আরও বলেন, "বিশ্ব ব্যাংক আইএফসি বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে কম সুদহারে বিনিয়োগ আনা যায়, সেক্ষেত্রে বংলাদেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও কম সুদহারে ঋণ দিতে পারবে।'
সরকার কী ভাবছে
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল টিবিএসকে বলেন, "প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের একটি প্রকল্প আছে যাদের জমি আছে, তাদেরকে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া। ইতোমধ্যে এটি শুরুও হয়েছে।"
তিনি বলেন, "গৃহঋণ নিয়ে যেসব জটিলতা আছে সেগুলো নিরসনে আমরা আলোচনা করবো। যদি সম্ভব হয় হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের প্রতিবছর ঋণ বিতরণের টার্গেট আরও বৃদ্ধি করা হবে। আরও সহজভাবে ঋণ সুবিধা দিয়ে বাড়ি নির্মাণকাজে সহযোগিতা করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
"এছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে আলোচনা করে প্রতিটি বেসরকারি ব্যাংকে গৃহঋণ বিতরণে একটি টার্গেট নির্ধারণ করে দেওয়া যায় কি না, সে বিষয়ে কাজ করা হবে। কোনো বিদেশি ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান থেকে সহজ শর্তে ও কম হারে বিনিয়োগ আনার জন্য সরকার কাজ করছে," বলেন তিনি।