মূল্যস্ফীতি বাড়লেও সামাজিক নিরাপত্তা বাজেট একই থাকছে
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে পিষ্ট অতিদরিদ্রদের জন্য আসন্ন বাজেটে কোনো সুখবর নেই, কেননা টানা সপ্তম অর্থবছরের মতো অপরিবর্তিত থাকছে তাদের সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা।
ফলে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় থাকা ভাতাভোগীদের—যেমন বয়স্ক নাগরিক, বিধবা, দুস্থ চা শ্রমিক এবং হিজড়া এবং বেদে (জিপসি) সম্প্রদায়ের লোকেদের সরকারি ভাতার টাকায় আগের চেয়েও কম নিত্যপণ্য কিনতে হবে।
সর্বশেষ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের গরিব বয়স্ক এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীদের ভাতা ১০০ টাকা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করে সরকার। তারপর থেকে প্রতি বছর পণ্যমূল্য বাড়লেও তাদের ভাতার অঙ্ক বাড়েনি।
বর্তমান দরে এই পরিমাণ টাকা দিয়ে শুধু দিনে ১টি করে ডিম আর মাসে এক লিটার সয়াবিন তেল কেনার পর মাত্র ২ টাকা হাতে থাকবে ভাতাভোগীর। বর্তমানে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ১২০ টাকা এবং প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের সরকারনির্ধারিত মূল্য ১৯৮ টাকা।
সরকারের দেওয়া বছরভিত্তিক মূল্যস্ফীতির হিসাবে সাত বছর আগে এই পরিমাণ টাকা দিয়ে যেসব পণ্য কেনা যেত, এখন একই পরিমাণ পণ্য কিনতে ৬৯১ টাকা লাগবে।
অথচ ২০১৫ সাল থেকে বাস্তবায়নাধীন জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সংগতি রেখে প্রতি বছর সামাজিক নিরাপত্তায় মাথাপিছু বরাদ্দ বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছিল। একইসাথে এসব কর্মসূচির সুবিধাভোগীর সংখ্যাও বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছিল।
বরাদ্দ বাড়ছে, কিন্তু বেশিরভাগই ব্যয় হবে বেতন-ভাতায়
চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে বরাদ্দ বাড়ছে ৫ হাজার ৩৮৬ কোটি টাকা। এই অর্থের বড় অংশই ব্যয় হবে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের পেনশন ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন-ভাতায়।
নতুন অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা, চলতি অর্থবছরে এটি ছিল ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ সামাজিক নিরাপত্তায় সরকারের মোট ব্যয় বাড়ছে ৫ শতাংশ। অথচ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, গত মার্চে পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৬.২২ শতাংশ।
নতুন অর্থবছরে সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন খাতেই বরাদ্দ থাকছে ২৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের বরাদ্দের তুলনায় ১ হাজার ১১০ কোটি টাকা বেশি।
টাকার অঙ্কে সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ বাড়লেও সরকারের মোট ব্যয়ের অনুপাতে চলতি অর্থবছরের তুলনায় নতুন অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ কমছে।
চলতি অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তায় বাজেটের ১৭.৮২ শতাংশ বরাদ্দ ছিল, আগামী অর্থবছরে এটি কমে ১৬.৭০ শতাংশে নামছে। জিডিপির অনুপাতে চলতি অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ ছিল ৩.১১ শতাংশ, যা নতুন অর্থবছরে কমে দাঁড়াচ্ছে ২.৭০ শতাংশে।
ভাতা বাড়াতে রাজি হয়নি অর্থ মন্ত্রণালয়
গত এপ্রিলে আগামী অর্থবছরের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে বরাদ্দ নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে বয়স্ক ও বিধবা ভাতার পরিমাণ অন্তত ১০০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে নতুন অর্থবছরে আরও ১০০ উপজেলার গরিব বয়স্ক নাগরিকদের ভাতার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে নতুন করে ১১ লাখ মানুষ ভাতা পাবেন। এতে সরকারের বাড়তি ব্যয় হবে ৫৫০ কোটি টাকা।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে বেশিরভাগ জরুরি ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার সংকট মোকাবিলায় ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের ফলে পরের মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদেরা।
তবু সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় উপকারভোগীদের ভাতা অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
খাদ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সময়েও ওএমএস, ভিজিডি, ভিজিএফ, কাজের বিনিময়ে খাদ্য, কর্মসৃজন কর্মসূচির মতো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন কর্মসূচির বরাদ্দও বাড়ছে না।
অথচ ২০১৫ সালে নতুন বেতন কাঠামোর আওতায় সরকারি চাকরিজীবীদের দ্বিগুণ বেতন বৃদ্ধিসহ প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে বেতন বাড়ছে।
টাকার অঙ্কে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে বিপুল বরাদ্দ দেখানো হলেও এর বড় অংশই ব্যয় হয় সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশনে। সঞ্চয়পত্রের সুদ ব্যয়, সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণের অর্থও এ খাতে দেখানো হয়।
এমনকি কোভিড মোকাবিলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে সরকারের দেওয়া সুদ ভর্তুকি, কৃষি খাতের ভর্তুকি, সরকারি চাকরিরত অবস্থায় মারা যাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিবারকে দেওয়া অনুদান, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের রেশন, আশ্রয়ণ প্রকল্প, ফ্লাড শেল্টার নির্মাণে বরাদ্দও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় হিসাব করে অর্থ বিভাগ।
বাজেট বক্তব্যে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সরকার যে প্রায় কোটিখানেক মানুষকে ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে থাকে, তার বড় অংশই বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা—যাদের পেছনে সরকারের ব্যয় খুব বেশি নয়।
এ বছর সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর প্রায় ৫৭ লাখ মানুষকে বয়স্ক ভাতা হিসেবে দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে ৬৮ লাখ বয়স্ক মানুষ প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা ভাতা পাবেন। এছাড়া, ২৪.৭৫ লাখ বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা এ বছর ১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা ভাতা পাচ্ছেন।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আসছে আরও ১০০ উপজেলার দরিদ্ররা
বর্তমানে ২৬২টি উপজেলায় বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতাদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এবার আরও ১০০ উপজেলায় এই কার্যক্রম বাড়ানো হচ্ছে। তাতে দেশের ৬৪ জেলার ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে সামাজিক নিরাপত্তা ভাতার আওতায় মোট উপজেলার সংখ্যা দাঁড়াবে ৩৬২।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ২০ লাখ অসচ্ছল প্রতিবন্ধীর ভাতাও বাড়ছে না চার বছর ধরে। ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে মাসে ৭৫০ টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন প্রতিবন্ধীরা। আর পাঁচ বছর ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ল্যাকটেটিং মাদার ভাতার পরিমাণ। তারা ৮০০ টাকা হারে ভাতা পান।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, নতুন অর্থবছরে মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ল্যাকটেটিং মাদার ভাতার আওতা বাড়ছে না। ফলে এ খাতে বরাদ্দ অপরিবর্তিত থাকতে পারে। চলতি অর্থবছরে ৭.৭০ লাখ মাতৃত্ব ভাতা এবং ২.৭৫ লাখ ল্যাকটেটিং মাদার ভাতার জন্য বরাদ্দ আছে ১ হাজার ৪১ কোটি টাকা।
দরিদ্র ও কর্মহীনদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও সুরক্ষায় বড় ভূমিকা রয়েছে কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির।
এ কর্মসূচির আওতায় গম কিনতে চলতি অর্থবছরে ৩৩৬.৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে, যা আগামী বছরও অপরিবর্তিত থাকছে।
অথচ ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবের পর ভারত রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পর গমের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। টাকার অঙ্কে বরাদ্দ অপরিবর্তিত থাকায় আগামী বছর সরকারকে অনেক কম পরিমাণ গম কিনতে হবে।
একই পরিমাণ গম কিনতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দের প্রয়োজন ৪৬৫ কোটি টাকা। তবে নতুন বছরের বাজেট প্রস্তাবে বাড়তি ১২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ চয়নি মন্ত্রণালয়টি।
আগামী অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নে অর্থমন্ত্রণালয়ে ১০ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকার প্রস্তাব পাঠিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। চলতি অর্থবছরে ৯ হাজার ৯৫০.৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দের চাইতে ৯.১৯ শতাংশ বাড়তি চেয়েছে মন্ত্রণালয়টি।
তবে ৯১৪.৩০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দের অধিকাংশই যাবে বেতন-ভাতা পরিশোধে, এখনও অনুমোদন পায়নি এমন প্রকল্পের জন্য থোক বরাদ্দ আর রোহিঙ্গাদের জন্য চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নে।
অর্থমন্ত্রণালয়ের দলিল পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় প্রতি বছর তাৎক্ষণিক প্রয়োজনে জিআর সহায়তা বাবদ ১.২৫ লাখ টন ও ভিজিএফ কার্যক্রম বাবদ ২.১০ লাখ টন খাদ্যশস্য কেনা হয়ে থাকে। দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান, টিআর, কাবিখা, কাবিটা, ও অন্যান্য কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতি বছর ৬৫ থেকে ৭০ লাখ দরিদ্র উপকারভোগীর মাঝে সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে মন্ত্রণালয়।
এর পাশাপাশি দুর্যোগের অভিঘাত মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক সাহায্য হিসেবে ভিজিএফ কর্মসূচির মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হয় ২৫ লাখ দরিদ্র মানুষকে। সব মিলিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রতি বছর সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় সহায়তা পাচ্ছে প্রায় ৯৫ লাখ মানুষ।
অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান খাতেও বাড়ছে না বরাদ্দ। এ খাতে চলতি বছরের ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকার বরাদ্দ অপরিবর্তিত থাকছে আগামী বছরেও। বিশেষ অনুদান বাবদ ২০ কোটি টাকাও থাকছে অপরিবর্তিত।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, সরকার মূল্যস্ফীতির সঙ্গে ভাতা সমন্বয় না করায় প্রকৃত মূল্যে ভাতার পরিমাণ কমে যাচ্ছে, যা উপকারভোগীদের কোনো কাজে আসছে না।
তাই অবশ্যই মাথাপিছু ভাতার পরিমাণ যুগোপযোগী করে এর পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বিভিন্ন ভাতার হার প্রতি বছর স্বয়ংক্রিয়ভাবে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় হবে, এমন একটি প্রক্রিয়া সরকারের করা উচিত।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি আর মাথাপিছু আয়ের বিবেচনায় সার্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের দ্বারপ্রান্তে চলে গেলেও অসম পুনরুদ্ধারের কারণে দরিদ্র লোকজনের আয় করোনার আগের অবস্থায় ফিরতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, দারিদ্র্যের হার বৃদ্ধির কারণে পিছিয়ে থাকা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর এখন আরও বাড়তি সহায়তা দরকার। এ অবস্থায় সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ভাতা না বাড়ানো দরিদ্র মানুষের জন্য হতাশার।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সত্ত্বেও আর্থিক বরাদ্দ না বাড়লে আগামীতে মাথাপিছু খাদ্য বিতরণ কমাতে হবে। অবশ্য সুবিধাভোগীর সংখ্যা কমিয়েও বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারবে ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
তবে এই দুটির কোনোটিই করার মতো অবস্থায় দেশ এখন নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বর্তমান বাজারদরে ৫০০ টাকা মাথাপিছু বরাদ্দ দরিদ্রদের প্রয়োজন মেটাতে তেমন ভূমিকা রাখতে পারছে না বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
সোমবার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এই ধরনের ভাতা মাথাপিছু জাতীয় আয়ের সঙ্গে যেমন সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, দরিদ্র মানুষের জন্য সম্মানজনকও নয়।
১৯৯৮-৯৯ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত মাথাপিছু ১০০ টাকা করে বয়ষ্ক ভাতা দিয়েছে সরকার, যা তখনকার মাথাপিছু জাতীয় আয়ের প্রায় ছয় শতাংশ। সময়ের ব্যবধানে বরাদ্দ বাড়লেও মাথাপিছু আয়ের সাড়ে ৩ শতাংশে নেমে এসেছে বলে সিটিজেন প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজিস-এর গবেষণায় উঠে এসেছে।
ড. দেবপ্রিয়র মতে, সামাজিক নিরাপত্তার সুবিধাভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে যেভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, মাথাপিছু বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়টি ঠিক সেভাবেই অবহেলা করা হয়েছে।
সামাজিক নিরাপত্তায় প্রতিটি ভাতার মাথাপিছু বরাদ্দ ন্যূনতম ১ হাজার টাকায় উন্নীত করার পরামর্শ দেন ড. দেবপ্রিয়।