অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ট্রায়ালের ফলাফল নিয়ে মার্কিন স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্বেগ প্রকাশ
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের ফলাফলে পুরনো তথ্য ব্যবহার করতে পারে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, এমনটাই অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য সংস্থা।
যুক্তরাষ্ট্রে বড় পরিসরে ট্রায়ালের ফলাফলে ভ্যাকসিনটি নিরাপদ ও অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হওয়ার মাত্র একদিন পরই এই অভিযোগ এনেছে সংস্থাটি। ফলে আগামী মাসে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকা মার্কিন সরকারের অনুমোদন পাবে কিনা তা আবারও অনিশ্চয়তার মুখে পড়ল।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ট্রায়ালের ফলাফলে আগের তথ্য সংযোজন করেছে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ডেটা সেফটি মনিটরিং বোর্ড (ডিএসএমবি)।
"ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার তথ্য ও সবচেয়ে সঠিক ও আপ-টু-ডেট তথ্য প্রকাশের ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে ডিএসএমবি'র সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিকে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা," বলা হয় বিবৃতিতে।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত ট্রায়ালের ফলাফলে দেখা গেছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন উপসর্গ লক্ষণগত অসুস্থতা প্রতিরোধে ৭৯ শতাংশ কার্যকর এবং গুরুতর অসুস্থতা ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রতিরোধে শতভাগ কার্যকর।
এব্যাপারে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এ খবর প্রকাশের পরই মঙ্গলবার লন্ডনে অ্যাস্ট্রাজেনেকার শেয়ারের দর এক শতাংশ কমে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা
যুক্তরাষ্ট্র, পেরু ও চিলির ৮৮টি ট্রায়াল সেন্টারে ৩২ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের ওপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে চূড়ান্ত পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালের ফলাফল নির্ধারণ করা হয়।
এর আগে রক্ত জমাট বাধার আশঙ্কায় বেশ কয়েকটি দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। তবে ভ্যাকসিনটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার চেয়ে সুফলই বেশি। ইউরোপের ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের এমন ঘোষণার পর জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেন আবারও টিকাদান কার্যক্রম শুরু করেছে।
গত বছরও ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ব্যবহৃত পদ্ধতি ও ফলাফল নিয়ে মার্কিন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সমালোচনার মুখে পড়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও বায়োটেক বিনিয়োগের ব্যাংক এসভিবি লিরিঙ্ক সেসময় জানিয়েছিল, তাদের বিশ্বাস যুক্তরাষ্ট্রে কখনোই অনুমোদন পাবে না অ্যসাট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন।
এসব বক্তব্যের প্রতিবাদ করে অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছিল, সর্বোচ্চ মানদণ্ড অনুযায়ীই তাদের গবেষণা পরিচালিত হয়েছে।
লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ফার্মাকো-এপিডেমিওলজি বিভাগের অধ্যাপক স্টিফেন ইভানস এব্যাপারে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ মহামারির মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে সংগৃহীত তথ্য বিশ্বাস করতে অনিচ্ছুক।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল সংখ্যক রোগীর ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার ব্যাপারে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিতেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার ট্রায়ালের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
"এই সুখবরের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দেওয়া হবে এটিই আশা করা যায়," বলেন তিনি।
- সূত্র: সিএনবিসি