আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি
আফগানিস্তান ছেড়ে প্রতিবেশী তাজিকিস্তানে পালিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। আজ রোববার (১৫ আগস্ট) দেশটির শীর্ষ শান্তি আলোচক আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জাতীয় সমঝোতা কাউন্সিলের প্রধান আব্দুল্লাহ ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিওতে বলেছেন, "আমাদের সাবেক প্রেসিডেন্ট দেশ ছেড়ে চলে গেছেন।"
আফগান সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই মুহূর্তে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের আলোচনা করছে তালেবান প্রতিনিধি দল। একইসময়, কাবুলকে ঘিরে রেখেছে গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা। তাদের অনেকে শহরতলীতেও প্রবেশ করেছে।
তাছাড়া, মোট ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ২৬টির দখল নিয়েছে কট্টর ইসলামপন্থী সংগঠনটি।
এর আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লাহ মোহাম্মদী গণমাধ্যমটিকে জানান, প্রেসিডেন্ট সঙ্কট সমাধানের দায়িত্ব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে দিয়েছেন।
এসময় মোহাম্মদী বলেন, আফগান সরকারের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার দোহা গিয়ে তালেবানের সঙ্গে আলোচনা করবে।
তারপরই আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় আশরাফ ঘানি ও শীর্ষ তাঁর সহযোগীদের পালিয়ে যাওয়ার খবর প্রকাশিত হয়।
ঘানির দেশত্যাগের খবরটি সত্য কিনা- তা অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তালেবান গোষ্ঠীর এক কর্মকর্তাও।
ঘানির প্রাণসংশয়ের যথেষ্ট কারণ ছিল: বিশেষজ্ঞ অভিমত
এদিকে তালেবানের হাতে প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির প্রাণসংশয়ে পড়ার যথেষ্ট ঝুঁকি ছিল বলে আল জাজিরার কাছে মন্তব্য করেছেন এক বিশ্লেষক।
ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউড অব পিস- এর বিশেষজ্ঞ আসফান্দির মির বলেন, "তালেবানদের অধীনে বাঁচতে পারবেন না- ঘানির এমন ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণ ছিল। অনেক আফগানই তাঁর উপর ক্ষুদ্ধ। তাছাড়া, গতকালও তিনি যেভাবে আপোষ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আজকের পরিস্থিতি ঠিক তার বিপরীত। তিনি রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে দেশকে রক্ষা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। "
আজ দিনের প্রথমভাগ থেকেই মার্কিন দূতাবাস কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী হামলার পর সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী আল কায়েদাকে আশ্রয় দেওয়ার কারণে আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা- সেই ঘটনার ২০ বছর পর আজ মার্কিনীদের শেষমুহূর্তে তড়িঘড়ি করে দূতাবাস কর্মী ও নাগরিকদের সরিয়ে নিতে হচ্ছে।
এ বাস্তবতায় আবারো রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলে নিতে চলেছে তালেবান।
আফগান ওই কর্মকর্তাও স্বীকার করেছেন যে, তালেবানরা সবদিক থেকে কাবুলে প্রবেশ করা শুরু করেছে। তবে তাদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াইয়ের কোনো ঘটনা শোনা যায়নি।
তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, আমাদের যোদ্ধারা শহরের উপকণ্ঠে অপেক্ষা করছে এবং বর্তমানে পশ্চিমা সমর্থিত সরকারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনা চলছে।
তবে তিনি এও জানান, "শান্তিপূর্ণ ও সন্তোষজনক সমাধানের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর সম্পন্ন হওয়ার আগপর্যন্ত রাজধানীর সকল প্রবেশপথে আমাদের যোদ্ধারা অপেক্ষা করবে।"
সূত্র: টোলোনিউজ, রয়টার্স, আল জাজিরা