জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের নাগরিকত্ব বাতিল করেছে ইকুয়েডর
উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের নাগরিকত্ব বাতিল করেছে ইকুয়েডর। ইকুয়েডরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে পাঠানো এক চিঠিতে নাগরিকত্ব বাতিলের কথা জানিয়েছে দেশটির বিচার ব্যবস্থা।
সোমবার (২৬ জুলাই) ইকুয়েডরের পিচিনচা আদালতে নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে কারাবন্দী রয়েছেন অ্যাসাঞ্জ।
সাধারণত প্রাসঙ্গিক তথ্য গোপন, মিথ্যা নথিপত্র জমাদান কিংবা জালিয়াতির অভিযোগে নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অনুসারে, অ্যাসাঞ্জের নাগরিকত্ব আবেদনে একাধিক 'অসঙ্গতি' পাওয়া গেছে।
একাধিক ভিন্ন স্বাক্ষর, নথিপত্র পরিবর্তনের সম্ভাবনা এবং ফি পরিশোধ না করাসহ আবেদনে বিভিন্ন জটিলতা রয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে, অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী কার্লোস পোভেদার অভিযোগ, যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, অ্যাসাঞ্জকে বিচারকালে হাজির হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
অ্যাসাঞ্জকে যে তারিখে আদালতে ডাকা হয়েছিল তখন তিনি মুক্ত ছিলেন না, পাশাপাশি বন্দি অবস্থায় অসুস্থ ছিলেন বলেও উল্লেখ করেন পোভেদা।
নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্তের বিস্তারিত এবং স্পষ্ট ব্যখ্যা জানতে চেয়ে আদালতে আপিল আবেদন করবেন বলে জানান এই আইনজীবী।
"জাতীয়তার থেকেও এখানে অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ," বলেন তিনি।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ইকুয়েডরের নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।
লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয়ে থাকা অ্যাসাঞ্জকে বের করতে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনোর উদ্যোগে প্রথমে তাকে কূটনীতিকের মর্যাদা দেওয়া হয়। কিন্তু, যুক্তরাজ্যের আপত্তিতে তাকে নাগরিকত্ব প্রদান করে ইকুয়েডর।
সুইডেনে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ থেকে বাঁচতে ২০১২ সালে পালিয়ে আসেন অ্যাসাঞ্জ। পরবর্তীতে ইকুয়েডর দূতাবাসে সাত বছর ধরে ছিলেন তিনি।
দীর্ঘ সময় পার হওয়ায় ২০১৯ সালের নভেম্বরে সুইডেন অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধের তদন্ত বাতিল করে।
৫০ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জ বর্তমানে কড়া নিরাপত্তার মাঝে লন্ডনের বেলমার্শ কারাগারে আছেন।
২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেন অ্যাসাঞ্জের রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল করলে পৃথক একটি মামলার জামিন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান