ট্রাম্পের অভিশংসন: সমর্থকরা ‘স্বেচ্ছায়’ হামলা চালিয়েছিল
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনজীবীদের দাবি, গত ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে সাবেক প্রেসিডেন্টের সমর্থকরা সম্পূর্ণ নিজেদের ইচ্ছায় হামলা চালিয়েছিলেন। তাদের কেউ উসকে দেয়নি।
মঙ্গলবার (৯ই ফেব্রুয়ারি) মার্কিন সিনেটে ট্রাম্পের অভিশংসন শুনানি শুরু হওয়ার কথা।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে 'বিদ্রোহ ও দাঙ্গায় উসকানির' অভিযোগ আনা হয়েছে।
আগেই ট্রাম্প জানিয়েছেন, অভিশংসন আদালতে তিনি সশরীরে উপস্থিত থাকবেন না।
৬ জানুয়ারির সেই হামলার ঘটনায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজন নিহত হন। ট্রাম্প সমর্থকদের আক্রমণের ভয়ে কংগ্রেস ভবনে উপস্থিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং কর্মকর্তাদের সবাই ভয়ে লুকিয়ে ছিলেন ।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিহাসের একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি দু'বার অভিশংসিত হবার নজির স্থাপন করেছেন।
এর আগে সোমবার ট্রাম্পের আইনজীবীরা দাবি করেন, এফবিআইয়ের নথি অনুযায়ী, এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ছিল। যার অর্থ দাঁড়ায়, ট্রাম্পের সাথে এটির কোনই সংশ্রব নেই।
তারা এ ট্রায়ালকে 'অসাংবিধানিক' হিসেবেও দাবি করেন যেহেতু দায়িত্ব ছাড়ার পর ট্রাম্প এখন কেবলই একজন সাধারণ মার্কিন নাগরিক।
এছাড়াও ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনজীবীদের মতে, এই অভিশংসন একটি 'রাজনৈতিক নাটক' এবং 'নির্লজ্জ রাজনীতির খেলা'; নিজেদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং সংখ্যালঘু দলকে নীরব করার উদ্দেশ্যেই ডেমোক্র্যাটদের হাতে যা রচিত হয়েছে।
তবে ডেমোক্র্যাটদের দাবি, ট্রাম্পের জবাবদিহির ব্যর্থতা ও দায়িত্বের অবহেলা ভবিষ্যতের প্রেসিডেন্টদের কাছে বার্তা দেবে। ট্রাম্প যাতে আর ক্ষমতায় ফিরতে না পারেন, সেটিও এই ট্রায়ালের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে চাইছেন ডেমোক্র্যাটরা।
সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চললে আশা করা হচ্ছে, মঙ্গলবার শুরুতেই অভিশংসন আদালতের নিয়মনীতি নিয়ে একটি ভোট গ্রহণ করা হবে। বিচারটি অসাংবিধানিক কিনা সেটি নিয়েও চার ঘণ্টার বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার দুপুরে বাকি কার্যক্রম শুরু হবে; উভয় পক্ষকে ১৬ ঘণ্টা করে সময় দেওয়া হবে।
অভিযোগ প্রমাণের জন্য ট্রাম্পের বিপক্ষে অভিশংসন মামলার প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা অভিশংসন ব্যবস্থাপকেরা পাবেন ১৬ ঘণ্টা। একইভাবে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করার জন্যে ট্রাম্পের আইনজীবীরাও পাবেন ১৬ ঘণ্টা।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন কার্যকর করতে হলে মার্কিন সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থনের প্রয়োজন।রিপাবলিকান পার্টির অন্তত ১৭ জন সিনেটরকে ট্রাম্পের বিপক্ষে ভোট প্রদান করতে হবে।
ইতিমধ্যে বিচারকাজের জন্য শপথ নিয়েছেন মার্কিন সিনেটের ১০০ জন সদস্য।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অবিশংসনের অভিযোগে বলা হয়, ৬ই জানুয়ারি হোয়াইট হাউসের বাইরে তিনি ভাষণের মাধ্যমে তার উগ্র সমর্থকদের ক্যাপিটলে হঠাৎ হামলার মাধ্যমে দখলে নেয়ার ঘটনায় উসকানি দিয়েছেন।
নভেম্বর ৩ এর নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে এর আগেও ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট দিয়েছিলেন যা তার সমর্থকদের ক্যাপিটল ভবনে দাঙ্গার জন্য সহিংস করে তোলে।
বিবিসি অবলম্বনে