পিউ সমীক্ষা: ক্যাপিটলে হামলার পর সমর্থন বেড়েছে বাইডেনের, নেতিবাচক রেটিং নিয়েই বিদায় নিচ্ছেন ট্রাম্প
গত ৬ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলার পর ৬৪ শতাংশ মার্কিনী জো বাইডেনের ক্ষমতাগ্রহণকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। অন্যদিকে, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে রাষ্ট্রপতি পদের যোগ্য মনে করছেন মাত্র ২৯ শতাংশ।
অর্থাৎ, ইতিবাচক সমর্থন নিয়েই মেয়াদ শুরু করবেন বাইডেন। আর ট্রাম্পের বিদায় হবে পড়তি জনপ্রিয়তা নিয়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত নির্দলীয় গবেষণা সংস্থা- পিউ রিসার্চ সেন্টারের সাম্প্রতিক এক জনমত জরিপে এ চিত্র উঠে আসে।
অংশগ্রহণকারীদের সিংহভাগ বাইডেনের মন্ত্রীসভা সদস্য নির্বাচন এবং তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাতে আস্থা রেখেছেন।
অন্যদিকে, গত বছরের ৩ নভেম্বর সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনে হারের পর এই প্রথম ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা এত নিচে নামার বিষয়টি প্রকাশ পেল। গত ৬ জানুয়ারিসহ নির্বাচন পরিবর্তী তার উদ্ভট আচরণেই বেশিরভাগ মার্কিনী তাদের অসন্তোষের কারণ বলে জানিয়েছেন।
নির্বাচন পরিবর্তী কাজ এবং বক্তব্যের জন্য ৭৬ শতাংশ মার্কিনী এখন তার উপর অসন্তুষ্ট। অথচ নভেম্বরে এই হার ছিল ৬৮ শতাংশ। অর্থাৎ, দিনে দিনে ট্রাম্পের প্রতি ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গেছে সিংহভাগ নাগরিকের।
সবদিক থেকে তাকে নেতিবাচক একজন রাষ্ট্রনায়ক মনে করছেন এখন ৬২ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল ৫৪ শতাংশ।
সবচাইতে বড় ঘটনা হলো; ট্রাম্পকে যারা ভোট দিয়েছেন তারাই নির্বাচনের পর তাদের পছন্দের প্রার্থীর কীর্তিকালাপ নিয়ে আগের চেয়ে বেশি সমালোচনা করছেন। এমনকি তার অধিকাংশ সমর্থক একে দুর্বল বলে অভিহিত করছেন। গত দুই মাসের ব্যবধানে নিজ সমর্থকদের এমন সমালোচনা ট্রাম্পের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
সাম্প্রতিক জরিপটি গত ৮-১২ জানুয়ারির মধ্যে পরিচালনা করে পিউ, যাতে অংশ নেন ৫,৩৬০ জন প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিন নাগরিক। এদের মধ্যে ২০২০ এর নির্বাচনে ভোটদাতা ছিলেন ৪,০৪০জন।
সমীক্ষাটিতে উঠে এসেছে যে, সিংহভাগ মার্কিনী আর ক্ষমতা ছাড়ার পর রাজনীতিক হিসেবে ট্রাম্পের ভূমিকা দেখতে ইচ্ছুক নন। এদের দুই- তৃতীয়াংশ বা ৬৮ শতাংশ জানান, আগামী দিনগুলোতে ট্রাম্প প্রধান কোনো রাজনীতিবিদ হিসেবে থাকুন- সেটা তারা চান না। ২৯ শতাংশ অবশ্য তাকে প্রধান চরিত্রেই দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তবে ট্রাম্প যখন উগ্র সমর্থকদের উস্কানি দিয়ে ক্যাপিটল হিলে হামলায় প্ররোচিত করেন সেটা সকলকেই কম বেশি বিস্মিত করেছে। একে তারা 'বাকরুদ্ধ' করে দেওয়ার মুহুর্ত বলে বর্ণনা করেন। এই ঘটনা ট্রাম্পের রাষ্ট্রপতি হিসেবে মেয়াদকে কলঙ্কিত করেছে বলেই মত দেন অধিকাংশ ব্যক্তি।
ওই হামলার জন্য তিন-চতুর্থাংশ প্রেসিডেন্ট দায়ী বলে অভিমত দেন। উগ্র সমর্থকদের ভাংচুর ও সন্ত্রাসের জন্য ৫২ শতাংশ সরাসরি ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করেছেন। যার বিপরীতে মাত্র ২৪ শতাংশ এঘটনায় ট্রাম্পের কোনো দায় নেই বলে দাবি করেন।
সবকিছু মিলিয়ে একটি ইঙ্গিত স্পষ্ট, অধিকাংশের কাছে উগ্র এবং সহিংস রাজনীতির প্রতীক হয়ে উঠেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
- সূত্র: পিউরিসার্চ ডটওআরজি