ধূমপানের হার কমাতে জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবাতে ই-সিগারেট অন্তর্ভুক্ত করতে পারে ইংল্যান্ড
ধূমপানের হার কমিয়ে আনতে নতুন পরিকল্পনা করছে ইংল্যান্ড। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশটির ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে (এনএইচএস) অন্তর্ভুক্ত হতে পারে ই-সিগারেট।
এ বিষয়ে নতুন একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথ কেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি (এমএইচআরএ)।
গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্য সরকার জানায়, ধূমপান বন্ধ করতে চাওয়া ব্যক্তিদের জন্য সহজলভ্য হতে পারে ই-সিগারেট।
ই-সিগারেট পণ্যের নির্মাতারা এখন তাদের পণ্য সরবরাহের জন্য এমএইচআরএ-এর সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। ফলে, দেশের অন্যান্য ওষুধের মতো একই নিয়ন্ত্রক অনুমোদন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে ই-সিগারেট।
এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে, মেডিকেল পণ্য হিসেবে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ই-সিগারেট সরবরাহকারী প্রথম দেশ হবে ইংল্যান্ড।
এছাড়া, ১ অক্টোবর থেকে অস্ট্রেলিয়াতে কার্যকর হওয়া থেরাপিউটিক গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (টিজিএ) অনুমোদিত আইন অনুসারে, নিকোটিন ই-সিগারেট এবং তরল নিকোটিন কিনতে ডাক্তারি প্রেসক্রিপশন লাগে কনজ্যুমারদের।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তা লিন্ডা বল্ড বলেন, "ধূমপায়ীদেরকে ধূমপান ত্যাগ করতে সাহায্য করতে পারে ই-সিগারেট। আমরা এটাও জানি, যুক্তরাজ্যে ধূমপায়ীদের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন ব্যক্তি এইসব ডিভাইস ব্যবহার করেন না।
তবে, ই-সিগারেটের খরচ এক্ষেত্রে একটি বাধা হিসেবে কাজ করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে, যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, ই-সিগারেট সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত নয়।
এক সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "ই-সিগারেটে নিকোটিন থাকে এবং এটি ঝুঁকিমুক্ত নয়। তবে যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নিয়ন্ত্রিতভাবে ই-সিগারেট ব্যবহার ধূমপানের চেয়ে কম ক্ষতিকারক।" তাছাড়া, ওষুধের লাইসেন্সপ্রাপ্ত একটি ই-সিগারেটকে আরও 'কঠোর নিরাপত্তা পরীক্ষায় পাশ করতে হবে' বলে যোগ করেন তারা।
এনএইচএস-এর মতে, ই-সিগারেটগুলো আলকাতরা বা কার্বন মনোক্সাইড তৈরি না করলেও এর তরলে এবং বাষ্পে কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান পাওয়া যায়। এই ধরণের রাসায়নিক উপাদান সিগারেটের ধোঁয়াতে পাওয়া গেলেও, ই-সিগারেটে এর মাত্রা অনেক কম।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক অ্যালান বুবিস বলেন, "লাইসেন্সপ্রাপ্ত ভেপিং পণ্যগুলোকে ওষুধ নিয়ন্ত্রক এমএইচআরএ এর একটি নির্দিষ্ট মান পূরণ করতে হবে। ফলে, চিকিৎসকেরা রোগীদেরকে ই-সিগারেট প্রেসক্রাইব করতে পারবেন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।"
এদিকে, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক রবার্ট ওয়েস্ট বলেন, "ধূমপায়ীরা ইতোমধ্যেই কিছু 'স্টপ-স্মোকিং' সার্ভিস থেকে ই-সিগারেট কিনতে পারে। কিন্তু নতুন পদক্ষেপটি ই-সিগারেটের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে পারে," যোগ করেন তিনি।
তবে, তিনি আরও বলেন, "কোনো স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানেরই তামাক কোম্পানির উৎপাদিত ই-সিগারেট প্রেসক্রাইব করা উচিত নয়"।
সূত্র: সিএনএন