নারী ও অশ্বেতাঙ্গদের চেয়ে লন্ডনে পশুদের ভাস্কর্য বেশি
নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, লন্ডনজুড়ে নারী ও অশ্বেতাঙ্গ মানুষের তুলনায় পশুর ভাস্কর্য বেশি।
লন্ডনের রাষ্ট্রীয় ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে ৮ শতাংশ পশুদের চিত্রিত করেছে, যেখানে নারীদের চিত্রিত করা হয়েছে মাত্র ৪ শতাংশ ভাস্কর্যে। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত আর্ট ইউকের এক গবেষণায় উঠে এসেছে এসব তথ্য।
অশ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠী শহরের ভাস্কর্যগুলোর মাত্র ১ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। শহরে অশ্বেতাঙ্গ নারী ভাস্কর্যের পরিমাণ ০.২ শতাংশ।
ওদিকে, লন্ডন শহরের ১,৫০০ স্মৃতিস্তম্ভের ২০ শতাংশেরও বেশি পুরুষদের জন্য নিবেদিত। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নগরীর ৭৯ শতাংশ মূর্তি ও ভাস্কর্যই 'স্বনামধন্য' ব্যক্তিত্বদের, যাদের সিংহভাগই পুরুষ।
আর্ট ইউকে জানিয়েছে, সর্বাধিক চিত্রিত ভাস্কর্যগুলো রাজ পরিবারের ব্যক্তিত্ব, সামরিক ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিবিদ, লেখক, শিল্পী, ডিজাইনার এবং অভিনেতাদের।
হাস্যকর হলেও সত্য, যুক্তরাজ্যের বড় শহরগুলোর মধ্যে লন্ডনেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে নারী ভাস্কর্য রয়েছে।
দেশজুড়ে সবচেয়ে বেশি চিত্রিত নারী ভাস্কর্য হচ্ছে রানী ভিক্টোরিয়ার।
গত বছর বর্ণবাদ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হলে একরকম আদর্শগত সংকট ও জনরোষের মুখে পড়ে ইংল্যান্ডের অনেক স্মৃতিস্তম্ভ।
২০২০ সালের জুনে যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টলে অবস্থিত সপ্তদশ শতকের ক্রীতদাস ব্যবসায়ী এডওয়ার্ড কলস্টনের একটি মূর্তিকে টেনে এভন নদীতে নিয়ে ফেলে দেয় বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভকারীরা।
শতাব্দী বিস্তৃত ঔপনিবেশিক ইতিহাস এবং ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটেন-জুড়ে ভাস্কর্য স্থাপনের উন্মত্ততার জন্য এদেশের শহরগুলো বর্ণবাদী ও বিতর্কিত ব্যক্তিত্বদের অনেক ভাস্কর্যে ছেয়ে গেছে।
লন্ডনের মেয়র সাদিক খান ২০২০ সালের জুনে রাজধানীর আশেপাশের ল্যান্ডমার্ক, ম্যুরাল, স্ট্রিট আর্ট, রাস্তার নাম এবং ভাস্কর্য পরীক্ষা করার জন্য একটি কমিশন ঘোষণা করেছিলেন।
এই কমিশনের দায়িত্ব "লন্ডনজুড়ে সার্বজনীন বৈচিত্র্যকে বাড়ানো, যাতে করে রাজধানীর স্তম্ভগুলো লন্ডনের অর্জন এবং বৈচিত্র্যকে যথাযথভাবে প্রতিফলিত করে"।
রাজধানীর বৈচিত্র্যকে ফুটিয়ে তুলতে এখন নতুন কিছু ভাস্কর্য স্থাপনের পরিকল্পনা করছে এই কমিশন।
সূত্র: সিএনএন।