বিশ্ব নেতাদের মহামারি চুক্তির আহবানে যোগ দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র ও চীন
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/03/30/44555.jpg)
ভবিষ্যতে নতুন কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় মহামারি চুক্তি স্বাক্ষরের আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করাসহ সংক্রমণ পরিস্থিতির তথ্যগত স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে চুক্তির প্রধান লক্ষ্য। এজন্য লেখা এক যৌথ চিঠিতে তারা এ আহ্বান জানান। তবে সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের রাষ্ট্রপ্রধানগণ স্বাক্ষর করেননি।
আজ মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) যৌথ চিঠিটি বিশ্বব্যাপী নানা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৪০ এর দশকের পর চলমান কোভিড-১৯ সংকট সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে বলে বিশ্ব নেতারা চিঠিতে একমত পোষণ করেছেন।
ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়ার ২০টি দেশের নেতা এবং শীর্ষ কর্মকর্তারা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন; যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাখোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল- এর মতো প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়কেরা।
তবে মহামারির মধ্যেও একে-অপরের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, অস্বচ্ছতার অভিযোগ এবং কৌশলগত স্বার্থ নিয়ে একাধিকবার বিবাদে জড়ানো যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এই আহবানে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অথচ দেশদুটির একই সমান্তরালে অবস্থান ছাড়া মহামারি চুক্তি পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে না- বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞগণ।
চিঠিতে দেশদুটির অনুপস্থিতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মহাপরিচালক ড. তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস- এনিয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষে গেব্রেয়াসুস নিজেও ছিলেন চিঠির অন্যতম স্বাক্ষরকারী এবং মহামারি চুক্তির অন্যতম প্রবক্তা।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের অনুপস্থিতির উপর কম গুরুত্বারোপ করার চেষ্টা করে বলেন, "আমি একে সমস্যা হিসেবে দেখতে চাই না, আসলে এটা কোনো সমস্যাও ছিল না। বৈশ্বিক পর্যায়ে মহামারি চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে- তখন এতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য সকল দেশের তাতে প্রতিনিধিত্ব থাকবে।"
তিনি আরও বলেন, "ইচ্ছে অনুযায়ী এই চুক্তিতে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। আগ্রহী দেশগুলো ইতোমধ্যেই দলবেঁধে যোগদানের উৎসাহ দেখাচ্ছে, তবে কিছু ক্ষেত্রে আমরা শুধু কোনো দেশ নয়- বরং আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্বের উপরও জোর দিয়েছি।"
হু মহাপরিচালক জানান, চুক্তিটি নিয়ে তার সংস্থা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনসহ সদস্য সকল দেশের সঙ্গে 'ইতিবাচক' আলোচনা করেছে। তবে উল্লেখিত দুই দেশসহ রাশিয়াকে সরাসরি এ চুক্তিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে কিনা- তা নিশ্চিত করেননি তিনি।
যৌথ চিঠির বিষয়বস্তু:
স্বাক্ষরকারী বিশ্বনেতারা আশা প্রকাশ করেন, "সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার একটি বলিষ্ঠ রূপকাঠামো তৈরি করা সম্ভব হবে- যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আরও ভালোভাবে নিরাপত্তা দেবে।"
"ভবিষ্যতে মহামারিসহ আরও অন্যান্য স্বাস্থ্য সংকট দেখা দেবে। কোনো একটি দেশের সরকার বা বহুজাতিক কোনো সংস্থার পক্ষে একা এই মহাবিপদ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। অবধারিতভাবেই এমন বিপদ আসছে এবং তা শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।"
হু মহাপরিচালকের পাশাপাশি যৌথ চিঠির প্রথম স্বাক্ষরকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন ইউরোপিয়ান কাউন্সিলেওর প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল।
- সূত্র: সিএনবিসি