মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওপর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের নিষেধাজ্ঞা
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম প্লাটফর্ম ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
সামরিক বাহিনী মিয়ানমারের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলছে লাগাতার বিক্ষোভ।
ফেসবুক একটি ব্লগ পোস্টে জানিয়েছে, '১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে ভয়াবহ সহিংসতার কারণে এই নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন হয়েছে।'
ফেসবুক আরও জানায়, 'আমরা বিশ্বাস করি, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে তাতমাদাওকে (মায়ানমারের সেনাবাহিনী) ব্যবহার করতে দেওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।'
নির্বাচনে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) কারচুপির অভিযোগে তাকেসহ তার দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মীদের আটক করার মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখল করে।
এর প্রতিবাদে নানা স্থানে সহিংসতায় অন্তত তিনজন বিক্ষোভকারী এবং একজন পুলিশ নিহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জনপ্রিয় বৈশ্বিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক বলেছে, তারা তাদের প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন থেকে 'তাদমাদাওয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান'ও নিষিদ্ধ করবে।
ফেসবুকের বিবৃতিতে বলা হয়, 'নজিরবিহীন মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ভবিষ্যতে সামরিক বাহিনীর শুরু করা সহিংসতার সুস্পষ্ট ঝুঁকির' কারণে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে এইসব প্লাটফর্ম থেকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে মিয়ানমার সামরিক সরকারের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা যায়নি।
মিয়ানমারে ফেসবুক ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় এবং সামরিক জান্তার সঙ্গে জনগণের যোগাযোগের অন্যতম একটি মাধ্যম এটি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফেসবুক মিয়ানমারের নাগরিক অধিকার কর্মী এবং গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যুক্ত এবং অনলাইনে ঘৃণামূলক প্রচারণা আটকাতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে।
২০১৮ সালে ফেসবুক দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হলাইং'সহ (বর্তমান সামরিক শাসক) আরও ১৯ জন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংগঠন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং সমন্বিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার কারণে সামরিক সদস্যদের পরিচালিত শত শত পেজ ও অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলে।
নভেম্বরের নির্বাচনের আগে ফেসবুক ঘোষণা করে, তারা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের পরিচালিত ৭০টি ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও পেজের একটি নেটওয়ার্ক মুছে ফেলেছে; বিশেষ করে যারা হয় সেনাবাহিনী সম্পর্কে ইতিবাচক বিষয়বস্তু পোস্ট কিংবা সু চি ও তার দলের সমালোচনা করেছে।
বৃহস্পতিবার প্ল্যাটফর্মটি জানিয়েছে, এর আগে মুছে ফেলা নেটওয়ার্ক সেনাবাহিনী পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করছে।
- সূত্র: রয়টার্স