মুম্বাইয়ে আন্তর্জাতিক মোবাইল চোরাচালান চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার
ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাই থেকে আন্তর্জাতিক মোবাইল ফোন চোরাচালান চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৩৩ বছর বয়সী এই ব্যক্তির নাম হাসম রহিস কোরাইশি। তিনি বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড ও সুদানে চোরাই ফোন পাচার করতেন বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
পুলিশের দাবি, মুম্বাইয়ের বাসিন্দা কোরেশি গত কয়েক বছরে ৫ হাজারের বেশি ফোন চোরাচালান করেছেন। কোরেশি এসব ফোন দিল্লি ও উত্তর প্রদেশের দালালদের থেকে কিনতেন। দালালরা ওসব ফোন কিনত রাজধানী ও তৎসংলগ্ন এলাকার চোরদের কাছ থেকে। এসব চোরাই ফোন কোরেশি বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড ও সুদানে চোরাচালান করতেন।
পুলিশ জানায়, গত ৯ জুলাই দিল্লি থেকে তারা জিয়াউদ্দিন ইমাম, মোহাম্মদ আলিম, অজয় ও শিব কুমার নামে চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই চার ব্যক্তি একটি শোরুম থেকে চোরাই ফোন কিনেছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া চার ব্যক্তি দিল্লি ও তৎসংলগ্ন এলাকার দোকান থেকে ফোন চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল। গত ১৭ মে দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে তারা ৫১টি মোবাইল চুরি করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
আলিমের ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখা যায়, মুম্বাই ও কলকাতার কয়েকজন বাসিন্দা তার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে কোরেশিও ৩০ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছেন আলিমকে। অভিযোগ রয়েছে, চোরাই ফোনগুলো আলিম বাজার দরের চেয়ে ৬০ শতাংশ কম দামে কিনে কোরেশির কাছে বেশি দামে বিক্রি করতেন।
গ্রেপ্তার হওয়া চারজন জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, চোরাই ফোনগুলো তারা ছিনতাইকারী, চোর ও মেওয়াটের অপরাধী চক্রের কাছ থেকে কিনেছেন। এরপর সেগুলো কোরেশির কাছে বিক্রি করেন।
এরপর কয়েকদিন অনুসন্ধান চালিয়ে পুলিশ গত ১৩ জুলাই মুম্বাই থেকে কোরেশিকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, কোরেশি গত পাঁচ বছর ধরে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চোরাই মোবাইল এনে বিক্রি করছেন। এক বছর আগে উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা আলিমের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। আলিম তাকে কুরিয়ারের মাধ্যমে চোরাই ফোন পাঠাতে থাকেন।
আলিমের কাছ থেকে পাওয়া ফোন কোরেশি একজন দালালের মাধ্যমে আগরতলা পাঠাতেন। সেখান থেকে ফোনগুলো বাংলাদেশে পাচার হতো।
এসব ফোন বিক্রির টাকা তিনি হাওয়ালার মাধ্যমে সংগ্রহ করতেন। তারপর সেখান থেকে নিজের কমিশন কেটে রেখে আলিমের মতো ডিলারদের ব্যাংক হিসাবে পাওনা টাকা পাঠিয়ে দিতেন। গত ছয় মাসে তিনি আলিমের প্রতিষ্ঠান আলিয়া ট্রেডার্সের ব্যাংক হিসাবে ৩৫ লক্ষ রুপি জমা দিয়েছেন।
কোরেশি গত উনিশ বছর ধরে মুম্বাইয়ে চোরাই মোবাইল, ল্যাপটপ ও গাড়ি বিক্রি করছেন। প্রথমে তিনি শুধু চোরাই ল্যাপটপ ও গাড়ি বিক্রি করতেন। তারপর গুজরাটের এক চোরাকারবারির সঙ্গে পরিচয় হয়। তার মাধ্যমে কোরেশি এক বাংলাদেশি চোরাকারবারির সঙ্গে পরিচিত হন। এরপর থেকে তিনি মোবাইল পাচারের কাজও শুরু করেন। বাংলাদেশের পাচারকারীদের মাধ্যমে তিনি ব্যাংকক ও সুদানে মোবাইল চোরাচালান শুরু করেন।
সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস