যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগে অগ্রগতির কথা জানাল চীন
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, পররাষ্ট্রনীতি ও বৈশ্বিক প্রভাব নিয়ে বিরোধপূর্ণ অবস্থানে শীর্ষ দুই অর্থনীতি- যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। তাইওয়ান ইস্যুকে কেন্দ্র করেও পারস্পরিক উত্তেজনা বাড়ছে পরাশক্তি দুটির। এই পরিস্থিতিতে চলতি বছরের শেষ দিকে এক ভিডিও কনফারেন্স বৈঠকে যুক্ত হবেন দেশ দুটির প্রেসিডেন্ট- জো বাইডেন ও শি জিনপিং।
ভার্চুয়াল এ সম্মেলনের আগে চলমান বিরোধগুলো নিষ্পত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি কার্যকরী গ্রুপ গঠনের কথা জানিয়েছে চীন।
রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল সিজিটিএন'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী লি ইউচেং জানান, ইতোমধ্যেই গ্রুপটি 'খানিকটা অগ্রগতি' করেছে। তবে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি।
লি বলেন, "বিরোধিতা ও সংঘাত উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। তাতে কারোরই লাভ হবে না। তাই সংলাপ ও সহযোগিতা অপরিহার্য। সাম্প্রতিক সময়ে, যুক্তরাষ্ট্রের চীন বিষয়ক ইতিবাচক বিবৃতিগুলোকে আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।"
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শাসনামলে করোনাভাইরাসের উৎস নিয়ে বিতর্ক, তাইওয়ান ও বাণিজ্য যুদ্ধের জেরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সরাসরি সংলাপের কূটনৈতিক চ্যানেলগুলো বিচ্ছিন্ন হয়। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ওয়াশিংটন ও বেইজিং সেগুলো পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।
বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে উচ্চ-পর্যায়ের যোগাযোগকে 'কৌশলগত সংলাপ' পুনঃপ্রতিষ্ঠা হিসেবে তুলে ধরছে গণচীন সরকার। তবে ওয়াশিংটন বলছে, এটি নতুন উদ্যোগ, আগের ওই প্রক্রিয়াকে 'অকার্যকর' বলেও সমালোচনা করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
গত মাসে কানাডায় গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্ত হয়ে নিজ দেশে ফেরেন- চীনের প্রযুক্তি জায়ান্ট হুয়াওয়ে টেকনোলজিসের প্রধান আর্থিক নির্বাহী মেং ওয়াংঝু। তার বিরুদ্ধে ইরানের ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের অভিযোগ এনেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
গত জুলাইয়ে চীন সফররত মার্কিন কর্মকর্তাদের কাছে চীনা কূটনীতিকরা যেসব দাবী তুলে ধরেন, তার একটি ছিল ওয়াংঝু'র মুক্তি। সেটি পূরণ হওয়ায় সম্পর্কের শীতলতাও হ্রাস পায়। অন্যদিকে, গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক দুজন কানাডীয় নাগরিককে মুক্তি দেয় চীন।
তারপর থেকেই সামরিক, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ইস্যুতে মুখোমুখি বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কর্মকর্তারা। আসন্ন ভিডিও সম্মেলনটি হবে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও শি জিনপিং- এর মধ্যে প্রথম প্রকাশ্য দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। তবে এর সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি।
গতকাল মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব জেন সাকি সাংবাদিকদের জানান, সম্মেলনের ব্যাপারে দেওয়ার মতো নতুন কোনো তথ্য নেই।
তিনি বলেন, "আমরা এ নিয়ে কাজ করছি। উভয় প্রেসিডেন্টের কর্মকর্তা পর্যায়ে আলোচনা চলছে।"
চীনা উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী লি ইউচেং উচ্চ-পর্যায়ের আলোচনার উদ্যোগকে উল্লেখ করে বলেন, "এই ঘটনা প্রমাণ করে চীন সবসময় সংলাপের দরজা খোলা রেখেছে। তবে দুই প্রেসিডেন্টের বৈঠকের আগে, উভয়পক্ষের কর্মকর্তাদের অনুকূল পরিবেশ ও ইতিবাচক শর্ত তৈরির কাজ চালিয়ে যেতে হবে।"
- সূত্র: ব্লুমবার্গ