লন্ডনের প্রভাবশালী রাজনীতিকদের তালিকায় টিউলিপ
ব্রিটেনের লেবারদলীয় এমপি টিউলিপ সিদ্দিক ২০১৯ সালে লন্ডনের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের তালিকায় রয়েছেন। সম্প্রতি লন্ডনভিত্তিক ‘দ্য ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড’ পত্রিকা ‘দ্য প্রগ্রেস ওয়ান থাউজেন্ড’ নামের এ তালিকা প্রকাশ করে।
টিউলিপ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার বড় মেয়ে। তিনি লেবার পার্টি থেকে লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসনে দ্বিতীয়বারের মতো জিতে আবারও এমপি নির্বাচিত হন ২০১৭ সালে।এর আগে, ২০১৫ সালের মে মাসে একই আসন থেকে এমপি হয়ে হাউস অব কমন্সে প্রথম যোগ দেন তিনি।
ব্রিটিশ রাজধানীর বিভিন্ন ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিয়ে ‘প্রগতি ১০০০’ নামের এই তালিকা প্রতি বছর প্রকাশ করে ‘দ্য ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড’। রাজনীতি, ব্যবসায়, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিল্পকলাসহ বিভিন্ন খাতের শীর্ষস্থানীয়রা এতে স্থান পান।
ওয়েস্টমিনস্টার ক্যাটাগরিতে তালিকায় স্থান পেয়েছেন টিউলিপ। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ডাচি অফ ল্যানকাস্টারের চ্যান্সেলর মাইকেল গভ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক ও শিক্ষামন্ত্রী গেভিন উইলিয়ামসনও এ তালিকায় রয়েছেন।
টিউলিপের বিষয়ে তালিকায় এভাবে উল্লেখ করা হয়েছে-- “পার্লামেন্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-র ব্রেক্সিট চুক্তির বিপক্ষে ভোট দিতে নিজের সিজারিয়ান সেকশন পিছিয়ে বিশ্বব্যাপী সংবাদের শিরোনাম হয়েছিলেন এমপি টিউলিপ সিদ্দিক।”
তাতে আরও বলা হয়, “তিনি যদি সেদিন নিজে ভোট দিতে না আসতেন তবে তাঁর ভোটটি হারাতেন অথবা অনির্ভরযোগ্য ‘পেয়ারিং’ প্রথার উপর নির্ভর করতে হতো তাঁকে। তাঁর চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত সন্তানপ্রত্যাশী ও নতুন পিতামাতার জন্য প্রক্সি ভোটিংয়ের ঐতিহাসিক সিস্টেমটি চালু করতে সরকারকে বাধ্য করে।”
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে সাধারণত কোনো এমপির সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় আসন্ন হলে বা সন্তান জন্মদানের পর অথবা অসুস্থতার কারণে কোনো এমপি ভোটে অংশ নিতে না পারলে বিরোধী পক্ষেরও একজন সদস্য ভোটদান থেকে বিরত থাকতেন। একে ‘পেয়ার’ বলা হতো।
‘পেয়ারিং’ প্রথায় নিজের অনাস্থার কথা জানিয়ে টিউলিপ সিজারিয়ান সেকশন পিছিয়ে সশরীরে পার্লামেন্টে গিয়ে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তের পরই ‘প্রক্সি ভোটিং’ পদ্ধতি চালু করা হয়।
২০১৫ সালের হাউস অব কমন্সে এমপি হিসেবে প্রথমবার যোগ দেবার পর পার্লামেন্টে তাঁর প্রথম ভাষণে গোটা বিশ্বের নজর কাড়েন টিউলিপ। সে ভাষণে নিজেকে ‘একজন আশ্রয়প্রার্থীর কন্যা’ হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি। ১৯৭৫ সালে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হলে লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয় খোঁজেন তাঁর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা। ভাষণে মায়ের সে সময়কার নানা দুর্দশার বিবরণ দেন টিউলিপ সিদ্দিক।