৪০ চীনা সৈন্য নিহতের সংবাদকে ভিত্তিহীন দাবি করেছে বেইজিং
চীন-ভারতের পূর্ব লাদাখ সীমান্তে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গত ১৫ জুন যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়- তাতে নিহত হয় ২০ ভারতীয় সেনা। আহত হয় আরও ৭৬ জন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বরাতেই এসব তথ্য জানিয়েছিল দেশটির গণমাধ্যম।
কিন্তু ওই রক্তপাতের পর থেকেই চীন বিরোধী ক্ষোভে জ্বলছে ভারত। দেশটির অনেক রাজনীতিবিদ, প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তা ৪০ জনের বেশি চীনা সৈন্য ভারতীয় বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে বলে দাবি করতে থাকে। হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য ট্রিবিউন ইন্ডিয়াসহ ভারতের অন্যান্য মূলধারার গণমাধ্যমেও অজ্ঞাত সেনাসূত্রের বরাতে এ দাবি সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ করা হতে থাকে। এ ধরনের প্রচারণা চীনকে ক্ষুদ্ধ করেছে।
গত মঙ্গলবার তাই প্রথমবারের মতো নীরবতা ভেঙ্গে লাদাখ হতাহতের বিষয়ে মুখ খুলেছে চীন।
বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে এধরনের প্রচারণাকে 'ভিত্তিহীন' বলে দাবি করা হয়েছে।
এদিন চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিঝিয়ান নিয়মিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, একজন কর্মকর্তাসহ ৪০ জন চীনা সৈন্য মারা যাওয়ার যে দাবি ভারতীয় গণমাধ্যমে করা হচ্ছে, তা সত্য নয়।
এসময় তাকে চীনের পক্ষে প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা জিজ্ঞাসা করা হলে, 'এই সংক্রান্ত কোনো তথ্য আমার জানা নেই' মন্তব্য করে তা এড়িয়ে যান।
এসময় তিনি জানান, 'উদ্ভূত সঙ্কট নিরসনে ভারত এবং চীন সামরিক এবং কূটনীতিক পর্যায়ে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। তবে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে কোনো তথ্য আমার জানা নেই।'
তবে ঝাও লিঝিয়ান ভারতের প্রাক্তন সেনাপ্রধান এবং সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী ভি কে সিং যেভাবে 'আমাদের ২০ জন সেনা মারা গেলে চীনের তার দ্বিগুণ সেনা মারা গেছে, বলে দাবি করেছেন- তার তীব্র প্রতিবাদ করেন।
এদিকে বুধবার চীনের স্থল ও সমুদ্রসীমা বিষয়ক উপ-মহাপরিচালক বলেছেন, আমাদের পক্ষে ভারি কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে প্রকৃত সংখ্যা তিনিও স্পষ্ট করে জানাননি।
চীনের এই বিবৃতির মধ্যে দিয়ে দেশটির হতাহতের সংখ্যা গোপন রাখার অভিপ্রায় ফুটে উঠেছে বলে দাবি করে ভারতীয় গণমাধ্যম। গালোয়ান উপত্যকায় ওই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও নিজেদের হতাহতের সংখ্যা জানায়নি বেইজিং।
তবে হতাহতের সংখ্যা গোপন রাখা চীনা সামরিক বাহিনীর একটি ঐতিহ্যগত অভ্যাস। চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি জনরোষ উস্কে দেওয়া বন্ধেই এ গোপনীয়তা চর্চা করা হয়, বলে দাবি করেছে ভারতীয় দৈনিক- দ্য ট্রিবিউন ইন্ডিয়া।