পশ্চিমাদের কয়েকশ বিমান দখলের পথে রাশিয়া
মার্কিন ও ইউরোপীয় লিজিং কোম্পানির মালিকানাধীন শত শত বাণিজ্যিক বিমান দখল করতে শুরু করেছে রাশিয়া। ইউক্রেন আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির এয়ারলাইন শিল্প যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, তা সামলাতেই রুশ সরকার এমন স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ নিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে সিএনএন-এর প্রতিবেদনে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সোমবার (১৪ মার্চ) সরকারের নিষেধাজ্ঞা-বিরোধী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে একটি আইনে স্বাক্ষর করেছেন, যার মাধ্যমে রুশ এয়ারলাইন্স রাশিয়ায় বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে লিজ নেওয়া কয়েকশ বিমান নিবন্ধন করে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। রাশিয়ার বার্তাসংস্থা তাসের বরাত দিয়ে এক বিবৃতিতে এ খবর নিশ্চিত করেছে ক্রেমলিন।
বিলটির মাধ্যমে রুশ এয়ারলাইন্সগুলো লিজ নেওয়া এসব বিমান দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে পরিচালনা করতে পারবে। অন্যদিক, রুশ সরকারের অনুমতি ছাড়া বিদেশি কোম্পানিগুলো তাদের বিমান পুনরুদ্ধার করতে পারবে না।
রাশিয়ার ওপর আরোপিত মার্কিন ও ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞার কারণে চলতি মাসের মধ্যেই লিজিং কোম্পানিগুলোকে রুশ এয়ারলাইন্সের কাছে লিজ দেওয়া সমস্ত বিমান পুনরুদ্ধার করতে হবে। নতুবা স্থায়ীভাবে বিমানের মালিকানা হারাতে পারে কোম্পানিগুলো।
এদিকে, নিরাপদে বিমান চালাতে যেসব খুচরা যন্ত্রাংশের প্রয়োজন হয়, রুশ এয়ারলাইন্সকে তার সরবরাহ ইতোমধ্যেই বন্ধ করে দিয়েছে এয়ারবাস (ইএডিএসএফ) ও বোয়িং (বিএ) এর মতো পশ্চিমা বিমান কোম্পানিগুলো। এভিয়েশন অ্যানালিটিক্স ফার্ম সিরিয়ামের দেওয়া তথ্য অনুসারে, রাশিয়ার বিমান সংস্থাগুলোর কাছে ৩০৫টি এয়ারবাস জেট এবং ৩৩২টি বোয়িং জেট রয়েছে।
এছাড়া পশ্চিমা বিমান কোম্পানি যেমন- বম্বার্ডিয়ার, এম্ব্রেয়ার এবং এটিআর নির্মিত ৮৩টি আঞ্চলিক জেটও রয়েছে রাশিয়ায়। এর বিপরীতে, রুশ বিমান সংস্থার সক্রিয় বহরে মাত্র ১৪৪টি বিমান রয়েছে, যেগুলো রাশিয়ায় নির্মিত।
সিরিয়ামের দেওয়া তথ্যে আরও জানা যায়, বিদেশি কোম্পানির তৈরি এই বিমানগুলোর ৮৫ শতাংশই লিজিং কোম্পানির মালিকানাধীন, যার সম্মিলিত মূল্য প্রায় সাড়ে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরমধ্যে বেশিরভাগ কোম্পানিই আয়ারল্যান্ডভিত্তিক। এই বিমানগুলো পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে পশ্চিমা লিজিং কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও গণমাধ্যমকে সাড়া দেয়নি তারা। এমনকি রাশিয়ার দখল করে নেওয়া বিমানগুলো তারা ফেরত চায় কিনা সে বিষয়টিও এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
- সূত্র: সিএনএন