বিক্ষোভে উত্তাল শ্রীলঙ্কা, রাজাপাকসের পৈতৃক বাড়িতে আগুন
চরম অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চলছে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ। জনসাধারণের এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় পুরো দেশজুড়ে। সরকারের পদত্যাগের দাবিতে চলা আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতবায়া রাজাপাকসে এবং সদ্য প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া মাহিন্দা রাজাপাকসের পৈতৃক বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
শ্রীলঙ্কার রাজধানী থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে হাম্বানটোটায় অবস্থিত ওই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় সোমবার (৯ মে) সন্ধ্যায়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিশ্চিত করেছে এ তথ্য। কেবল রাজপাকসের পৈতৃক বাড়িই নয়, তাদের বাবা-মায়ের স্মরণে তৈরি স্মৃতিসৌধতেও আগুন লাগানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বিগত কয়েক মাস ধরে চরম অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, জ্বালানি ও খাদ্য সংকট, দিনব্যাপী বিদ্যুৎ বিভ্রাট সব মিলিয়ে বিশৃঙ্খল এক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্র। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। তার পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিক্ষোভকারীরা তাদের পৈত্রিক নিবাসে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ সময় শ্রীলঙ্কার ক্ষমতাসীন দলের এমপি অমরাকীর্তি আথুকোরালা তার নিরাপত্তা কর্মকর্তা, সরকার সমর্থক ও সরকারবিরোধীদের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মারা গেলে পরিস্থিতি আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই খবর আসে, বিক্ষোভকারীরা ক্ষমতাসীন দলের আরও এক এমপি ও এক সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতেও আগুন দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ভিডিওতে মাউন্ট লাফিনিয়ায় দেশের সাবেক মন্ত্রী জনসন ফার্নান্ডোর বাড়ি জ্বলতে দেখা গেছে। শ্রীলঙ্কার আইনসভায় ক্ষমতাসীল দলেরই আরেক সদস্য সনথ নিশান্তের বাড়িতেও বিক্ষোভকারীরা আক্রমণ করে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করার পরেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর আক্রমণ চালায় ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকেরা। এর পরিপ্রেক্ষিতেই পাল্টা মারমুখী হয়ে শাসকদলের নেতাদের ওপর হামলা চালাতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা সাধারণ জনতা। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর থেকে শাসকদলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে।
- সূত্র: এনডিটিভি