ঢাকা, ৩ ডিজিটের টেলিফোন ও অন্যান্য
এটি বিশ্লেষণধর্মী কোনো নিবন্ধ নয়। বিভিন্ন উৎস থেকে ঢাকার ১৯৫২-৫৩-র কিছু আগ্রহোদ্দীপক তথ্যের সমাবেশ ঘটানো হয়েছে। ১৯৫২-৫৩ কেনো? কারণ ১৯৫২-র ফেব্রুয়ারি পূর্ব ঢাকা এবং ফেব্রুয়ারি পরবর্তী ঢাকা এক নয়। তখন থেকে ঢাকার রাস্তায় দোকানের সাইনবোর্ড বাংলা হরফ উকি দিতে শুরু করে। ব্যবসাবাণিজ্য খাত তেমন আন্তরিকভাবে বাংলাকে গ্রহণ করেনি। সে জন্য প্রতিবছরই ফেব্রুয়ারি এলে রাস্তার পাশের সাইনবোর্ডের মালিকরা কিছুটা আতঙ্কিত থাকতেন: এই বুঝি ছাত্ররা সাইনবোর্ডের ইংরেজিতে আলকাতরা লেপ্টে দিতে এলো :
সে সময় পাকিস্তানের পূর্বাংশের নাম পূর্ব পাকিস্তান ছিল না, ছিল পূর্ব বাংলা। মালিক ফিরোজ খান নুন। তিনি মার্চ ১৯৫০ থেকে মার্চ ১৯৫৩ পর্যন্ত পূর্ব বাংলার গভর্নর ছিলেন তিনি অক্সফোর্ডের স্নাতকোত্তর এবং ইনার টেম্পল থেকে ব্যারিস্টার। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৫৭ থেকে ৭ অক্টোবর ১৯৫৮ পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন। তার উদ্যোগী স্ত্রীর নামেই ভিকারুননেসা নুন স্কুল।
তখনকার চিফ মিনিষ্টার নূরুল আমিন। বায়ান্নের শ্লোগানের একটি ছিল নূরুল আমিনের কল্লা চাই। একাত্তরেও তিনি পাকিস্তানের পক্ষেই ছিলেন। ৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ থেকে ২০ ডিসেম্বর ১৯৭১ পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং ২০ ডিসেম্বর ১৯৭১ থেকে ২৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
নূরুল আমিন সরকারে ৯ জন মন্ত্রী ছিলেন : সৈয়দ আদুস সেলিম, হাসান আলী, মফিজউদ্দিন আহম্মেদ, ডি এন বারোই, আবদুল হামিদ, হাবিবুল্লাহ বাহার, তোফাজ্জল আলী, সৈয়দ মোহাম্মদ আফজাল ও হামিদউদ্দিন আহমেদ। তারা সবাই বাঙ্গালি। অবাঙ্গালি এন এম খান ছিলেন চিফ সেক্রেটারি।
ঢাকা রেডিও
প্রতিদিন তিন অধিবেশনে ৯ ঘন্টা সম্প্রচার চলত। সকাল ৭টা থেকে ৯টা, দুপুর বারটা থেকে দেড়টা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত সাড়ে দশটা। রোববার আধঘন্টা বেশি সম্প্রচারিত হতো।
বাংলা সংবাদ প্রচারিত হতো সকাল ৮:৩০, দুপুর ১:১০ এবং রাত ৮:১৫ মিনিটে ইংরেজি সংবাদ প্রচারিত হতো সকাল ৮:৩০, দুপুর ১:০০ সন্ধ্যা ৬:৩০ এবং রাত ৯:১৫ মিনিটে। উর্দু সংবাদ প্রচারিত হতো সকাল ৮:৪৫ এবং রাত ৯:৩০ মিনিটে।
রেডিওর পাক্ষিক জার্নাল এলান প্রকাশিত হতো ৪৩ নবাবকাটরা রোড থেকে। সপ্তাহে চারদিন উর্দু শিক্ষার আসর বসত, শুক্র ও রোববার ছোটদের জন্য, সোম ও বুধবার বড়দের জন্য। অনুষ্ঠানের নাম উর্দু সবক।
মাসে দু'বার মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উর্দু নাটক প্রচারিত হতো। তখনকার মুদ্রা বিনিময় হার জানতে ইচ্ছে হতে পারে। মূলত : ডলার, পাউন্ড ও ভারতীয় রুপির লেনদেন হতো। পাকিস্তানি মুদ্রা ছিল রুপি, টাকা নয়।
বিদেশি মুদ্রা বনাম পাকিস্তানি রুপি
১ ডলার ৩.৩০৮
১ পাউন্ড ৯.২৬৩
১ ইন্ডিয়া রুপি ০.৬৯৪
১ অস্ট্রেলিয়ান পাউন্ড ৭.৪১১ (পরবর্তী সময় তা ডলার করা হয়)
১ হংকং ডলার ০.৫৭৮
১ ইরাকি দিনার ৯.২৬৩
১ তুর্কি লিরা ১.১৮১
১ ইরানি রিয়াল ০.১০২
উড়োজাহাজ ও আকাশ পথ
তখনো পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠিত হয়নি। পাকিস্তানের একমাত্র এয়ার লাইনটির নাম ওরিয়েন্ট এয়ারওয়েজ।
রোববার ছাড়া প্রতিদিন ঢাকা-করাচি ফ্লাইট ছিল, ঢাকা-কোলকাতা প্রতিদিন। মঙ্গল ও বুধবার ঢাকা-লাহোর ফ্লাইট; ঢাকা-চট্টগ্রাম ফ্লাইট প্রতিদিন এবং ঢাকা-যশোর সপ্তাহে চারদিন।
ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ তখন ছিল ব্রিটিশ ওভারসিজ এয়ারওয়েজ কোম্পানি- সোম ও বৃহস্পতিবার লন্ডন/করাচি/ঢাকা/রেঙ্গুন/হংকং; ফ্লাইট থাকত আর মঙ্গলবার হংকং/ঢাকা/করাচি/লন্ডন ফ্লাইট/ ইন্ডিয়া এয়ারওয়েজ প্রতিদিন কোলকাতা ঢাকা ফ্লাইট পরিচালনা করত। রয়াল ডাচ এয়ারলাইনের একটি অফিস ছিল।
বিদেশি দূতাবাস
রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনার তো রাজধানী করাচিতে থাকবেন, কনসুলেট ও ডেপুটি হাই কমিশনারের অফিস ঢাকা। তখন কেবল মাত্র ৪টি দেশের এ ধরনের অফিস ঢাকায় ছিল।
ভারত : ৩৫ রেঙ্কিন স্ট্রিটে ছিল ডেপুটি হাই কমিশনারের অফিস। বি মুখার্জি ছিলেন ডেপুটি হাই কমিশনার। সেক্রেটারির একটি পদ ছিল নিরঞ্জন মোহন বর্ধন, একজন আই এ এস অফিসার এ পদে ছিলেন। ভারতের একটি ট্রেড অফিস ছিল ৮ গোপী কিশান লেন ওয়ারিতে। পার্থ দাস গুপ্ত ছিলেন সহকারি ট্রেড কমিশনার।
বার্মা : বার্মিজ কনসুলেট, ৩ নম্বর নওয়াব স্ট্রিট, কনসালের নাম উলা অং।
যুক্তরাজ্য: ডেপুটি হাই কমিশনার: ২৫ বেইলি রোড, ডেপুটি হাই কমিশনারের নাম আর জি চিজহোম, সেকেন্ড সেক্রেটারি জি এল সিমনস। টোয়েনবি সার্কুলার রোড ছিল ব্রিটিশ ইনফর্মেশন সার্ভিসেস অফিস। ডব্লিউ আর জর্জ ছিলেন অফিস প্রধান আর ১৭ নাজিমউদ্দিন রোড ছিল ব্রিটিশ কাউন্সিল।
যুক্তরাষ্ট্র : আমেরিকান কনস্যুলেট অফিসটি ছিল ২৯ পুরান পল্টন, কনসাল গ্যারি ব্রিম থাকতেন ৩৫ মিন্টো রোড। ভাইস কনসাল ছিলেন ডেভিড স্কট। যুক্তরাষ্ট্র তথ্য কেন্দ্র (ইউএসআইএস) অফিস ৩১ হাটখোলা। লাইব্রেরিও ছিল ইম্পেরিয়াল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া বিল্ডিং-এ। তথ্য কর্মকর্তা ছিলেন পিটার ডেভিস আর টমাস ক্লিভল্যান্ড ছিলেন লাইব্রেরিয়ান।
ব্যবসাবাণিজ্যে ঢাকা নাম
ঢাকা নামে জাদু আছে।
সেকালে ব্যবসাবাণিজ্যের জন্য প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে বেঙ্গল বা ঢাকা যুক্ত করলে গুরুত্ব বাড়ত। কলকাতা নামও যথেষ্ট গুরুত্ব পেত। অভিজাত লোকজন ক্যালকাটা টেইলারিং-এ কাপড় বানাতে দিতেন। ১৯৫২-৫৩ সালের ঢাকা যুক্ত কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নাম পাঠককে আগ্রহান্বিত করতে পারে। তখন সাইনবোর্ডেগুলো ইংরেজিতেই লেখা হতো। ঢাকা লেখা হতো Dacca, বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ঢাকার সাথে নারায়ণগঞ্জও অন্তর্ভুক্ত হতো।
ঢাকা অ্যালুমিনিয়াম স্টোর্স, বড় কাটরা লেন, চকবাজার।
ঢাকা অ্যাকাউন্টস ব্যুরো (আয়কর পরামর্শদাতা), রজত চৌধুরী রোড, গেন্ডারিয়া।
ঢাকা বোর্ডিং (আবাসিক হোটেল), ৮ নবাবপুর রোড।
ঢাকা বুক হল (প্রকাশক) ৩/১ বাংলাবাজার।
ঢাকা বুক স্টল (বই বিক্রেতা) ৩৪ বাংলাবাজার।
ঢাকা বিল্ডার্স স্টোর্স (রঙ ও নির্মাণ সামগ্রীর দোকান) ৪২ জনসন রোড।
ঢাকা কেবিনেট স্টোর্স (আসবাবপত্র বিক্রেতা) ৩৪/২ নর্থ ব্রুক হল রোড।
ঢাকা কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ (পারফিউম কসমেটিকস, তেল, ঔষধ) ৫৬ কাপ্তান বাজার।
ঢাকা ক্রোম কোম্পানি (চামড়া ব্যবসায়ী), ১৭ বংশাল রোড।
ঢাকা সিটি স্টোর্স (মনোহরী দ্রব্য), ১৩৮ মিটফোর্ড রোড।
ঢাকা ক্লথ স্টোর্স (তৈরি পোশাক ও কাপড়) ১০১ ইসলামপুর, রোড।
ঢাকা কটন মিলস লিমিটেড (কাপড়ের কল) পোস্তগোলা।
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম) রমনা।
ঢাকা ফ্যান্সি ক্লথ হাউস, ২০৪ মিটফোর্ড রোড।
ঢাকা ফ্যান্সি স্টোর্স (জুতা ও বুট বিক্রেতা) ১৩৪ নওয়াবপুর রোড।
ঢাকা ফিল্ম ডিস্ট্রিবিউটরস (চলচ্চিত্র পরিবেশক) জনসন রোড।
ঢাকা ফ্লাওয়ার অ্যান্ড অয়েল মিলস, ২ বেগম বাজার।
ঢাকা গ্লাস অ্যান্ড অ্যালুমিনিয়াম ওয়ার্কস, ৪৫ ঢালকানগর, ফরিদাবাদ।
ঢাকা গ্লাস স্টোর্স (চীনামাটি ও পোর্সেলিন দ্রব্যের পাইকারি বিক্রেতা) ৯৫ মোগলটুলী।
ঢাকা গ্লাস ওয়ার্কস (কাঁচের সামগ্রী প্রস্তুতকারক) ফরিদাবাদ।
ঢাকা হার্ডওয়ার স্টোর্স (হার্ডওয়ার আমদানিকারক) ৬৭ ফরাশগঞ্জ।
ঢাকা হাইড এন্ড স্কিন কোম্পানি লিমিটেড, পোস্তা।
ঢাকা আইস অ্যান্ড রেফ্রিজারেটিং কোম্পানি, ফরিদাবাদ।
ঢাকা আইস কোম্পানি, ৫৭ কাপ্তান বাজার।
ঢাকা ইমপোর্ট হাউস (পোর্সেলিন ফ্লাঙ্ক টর্চ আমদানিকারক) ১২ মিটফোর্ড রোড।
ঢাকা জুট কোম্পানি লিমিটেড, নারায়ণগঞ্জ।
ঢাকা ল রিপোর্ট (পাক্ষিক আইন জার্নাল) শান্তিনগর, রমনা।
ঢাকা মার্কেন্টাইল কোম্পানি লিমিটেড (কাগজ, বোর্ড, রঙ ও ক্যামিকেল) ১৪ সোয়ারিঘাট।
ঢাকা মিউজিক্যাল মার্ট (সঙ্গীত যন্ত্র বিক্রেতা) টানবাজার, নারায়ণগঞ্জ।
ঢাকা ন্যাশনাল ইন্ডাস্ট্রিজ ফ্লাউয়ার অ্যান্ড অয়েল মিলস, ১৪৫ ওয়াটার ওয়ার্কস রোড।
ঢাকা প্রিন্টিং প্রেস (ছাপাখানা) ৭৮ মৌলভিবাজার।
ঢাকা ওয়েল মিলস লিমিটেড, ২২ ইমামগঞ্জ
ঢাকা স মিল, ৮-৯ নবাব ইউসুফ রোড
ঢাকা শু এমপোরিয়াল ১২৪ নওয়াবপুর রোড
ঢাকা সিল্ক হাউস (শাড়ি ও কাপড়) ৭৫ পাটুয়াটুলি
ঢাকা সোপ ওয়ার্কস, ৩ স্মিথ রোড, নারায়ণগঞ্জ
ঢাকা স্ট্যাম্প মার্চেন্টস, ২০৫ মিটফোর্ড রোড
ঢাকা স্টার গোল্ড ইলেক্ট্রোপ্লেটিং ওয়ার্কশপ, ১/২ নওয়াবপুর রোড
ঢাকা ট্যানারিজ লিমিটেড, শীতলক্ষ্যা নারায়ণগঞ্জ
ঢাকা টোবাকো কোম্পানি, ৭৮ মৌলবীবাজার
ঢাকা ট্রেডিং হাউস, ৭৮ লয়াল স্ট্রিট
ঢাকা উডওয়ার্কস, ৪৪/৪৫ নর্থ ব্রুক হল রোড।
সিনেমা হল
সিনেমা হলের সংখ্যা ১১টি: লায়ন সিনেমা, নগর মহল, নিশাত, পিকচার প্যালেস, তাজমহল থিয়েটার, রূপ মহল, নিউ প্যারাডাইস সিনেমা, মুকুল থিয়েটার, মায়া সিনেমা, হাসনা থিয়েটার, ডায়মন্ড টকিজ।
ঢাকার আবাসিক হোটেল
বোম্বে হোটেল, ঢাকা বোর্ডিং, হোটেল আকবরী, সেন্ট্রাল হোটেল এণ্ড রেস্তোরা, হোটেল গ্রিন, হোটেল সিরাজ, হুমায়ুন হোটেল, ইম্পেরিয়াল হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরা, মর্ডান হোটেল, ওকে হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরা, ওরিয়েন্ট হোটেল, পাক বোর্ডিং, রমনা রেস্ট হাউস, এস ডেকানস ইলন, দ্য তাজ।
সংবাদপত্র ও সাময়িকী
আজাদ, ইনসাফ, মিল্লাত, মর্নিং নিউজ, পাসওয়ান এবং সংবাদ-- মোট ছয়টি।
সাময়িকী: বেগম, অগত্যা, ঢাকা ল রিপোর্ট, ঢাকা প্রকাশ, দিলরুবা (বাংলা), দিলরুবা (উর্দু), এলান, ইমরোজ, ইত্তেফাক, খবর, মাহে নও, মোহাম্মদী, নওবাহার পাকিস্তান টুডে, পাকিস্তান খবর, সৈনিক ও সোনার বাংলা।
১৪টি ব্যাঙ্ক
তখন ঢাকায় ১৪টি ব্যাংকের কার্যালয় ছিল :
সেন্ট্রাল ব্যাংক অব ইন্ডিয়া লিমিটেড
কো অপারেটিভ টাউন ব্যাংক
ইস্ট পাকিস্তান প্রভিন্সিয়াল কোঅপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড
হাবিব ব্যাংক লিমিটেড
হিন্দু ব্যাংক লিমিটেড
ইম্পেরিয়াল ব্যাংক অব ইন্ডিয়া
লয়েডস ব্যাংক লিমিটেড
মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাঙ্ক লিমিটেড
ন্যাশনাল ব্যাংক অব ইন্ডিয়া লিমিটেড
ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান লিমিটেড
স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান
ত্রিপুরা মর্ডান ব্যাংক লিমিটেড
ইউনাইটেড ব্যাংক অব ইন্ডিয়া লিমিটেড
ইউনাইটেড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ব্যাংক লিমিটেড
বই প্রকাশক ও বিক্রেতা
পাঠক এই তালিকাটিতে অধিকতর আগ্রহী হবেন। বই প্রকাশনা ছিল মূলত কোলকাতা ভিত্তিক আর সেখানে বুক বাইন্ডারগণ বিস্ময়কর কোন কারণে প্রায় সবাই ছিলেন মুসলমান। ১৯৪৭ পরবর্তী কোলকাতায় বই বাধাইয়ে সমস্যা দেখা দেয়। বুক বাইন্ডারদের কেউ কেউ ঢাকায় এসে বইয়ের দোকান দেন এবং প্রকাশকও হন। বইয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে: ওয়ার্সি বুক সেন্টার, ইউনিভার্সাল লাইব্রেরি, ইউনাইটেড বুক এক্সচেঞ্জ, তাজমহল লাইব্রেরি, স্কুল বুক সাপ্লাই, রয়াল লাইব্রেরি, রহমান পাবলিশিং কোম্পানি, রাশিদা লাইব্রেরি, কোরআন মঞ্জিল, প্রভিন্সিয়াল লাইব্রেরি, প্রেসিডেন্সি লাইব্রেরি, প্যারাডাইস বুক স্টল, পাক কিতাব ঘর, পাক পেপার অ্যান্ড বুক হাউস, পাকিস্তান বুক ডিপো, অরিয়েন্ট লঙ্গম্যানস লিমিটেড, নওরোজ কিতাবিস্তান, নওরোজ লাইব্রেরি, নাফিস বুক হাউস, মল্লিক ব্রাদার্স, নবযুগ লাইব্রেরি, মাখদুমি অ্যান্ড আহসানউল্লাহ লাইব্রেরি, মির্জা লাইব্রেরি, মর্ডান বুক স্টল, মুহাম্মদী বুক হাউস, মালিক লাইব্রেরি, প্রভিন্সিয়াল বুক ডিপো, আদিল ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি, আল হামরা লাইব্রেরি, লিয়াকত পাবলিশিং, আশরাফ পুস্তকালয়, বুক কোম্পানি, ক্যাপিটাল বুক ডিপো, ঢাকা বুক হল, দীন ব্রাদার্স, ইস্টার্ন পাবলিশার্স, ফেরদৌস লাইব্রেরি, গ্রেট বেঙ্গল লাইব্রেরি, গ্রিন অ্যান্ড হোয়াইট কোম্পানি, হাবিবিয়া লাইব্রেরি, হামিদিয়া লাইব্রেরি, হার্টসন অ্যান্ড কোম্পানি, ইসলামিয়া লাইব্রেরি, ইতিকথা বুক ডিপো, কিতাব মঞ্জিল লিমিটেড, কোহিনুর লাইব্রেরি, মদিনা লাইব্রেরি, মজিদ পাবলিশিং হাউস, নবযুগ লাইব্রেরি ইত্যাদি।
পাদটীকা:
সে সময় টেলিফোন ছিল তিন ডিজিটের। কয়েকটি নম্বর ও তুলে ধরছি : আমেরিকান কনসুলেট ৫৭১, প্রিন্সিপাল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ৫২৮, মিটফোর্ড হাসপাতাল ৬৫৩, ইন্ডিয়া এয়ারওয়েজ ৫২২, দুলিচাঁদ ওমরাওলাল ২২৪, লয়েডস ব্যাংক ৬৬০, কে এল এম রয়াল ডাচ এয়ারলাইন ১২৯ এবং ৯৮৩।