‘একদিন ঘুম থেকে উঠে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম, কাবুলের পতন হয়েছে’
যুদ্ধ ও সন্ত্রাসের বাইরেও যে একটা আফগানিস্তান আছে, পাঠককে সেই আফগানিস্তানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় খালেদ হোসেইনির উপন্যাস।
তাঁর প্রথম উপন্যাস দ্য কাইট রানার, প্রকাশিত হয় ২০০৩ সালে, ৯/১১ ও মার্কিনিদের আফগানিস্তান হামলার দুই বছর পর। এ উপন্যাসে সমাজের সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটো শ্রেণির কিশোর আমির ও হাসানের গল্প পড়ে মন্ত্রমুগ্ধ হয়েছিলেন বিশ্বের লাখ লাখ পাঠক।
খালেদ হোসেইনির পরবর্তী উপন্যাস আ থাউজ্যান্ড স্পেলনন্ডিড সান এবং অ্যান্ড দ্য মাউন্টেইনস ইকোড-এও আছে, আংশিক হলেও আফগানিস্তানের গল্প। এ দুটো উপন্যাসও বিপুল পাঠকপ্রিয়তা পায়।
তালেবানের হাতে দখল চলে যাওয়ার পর গোটা বিশ্বের নজর ফের ঘুরে গেছে আফগানিস্তানের দিকে। তবে তালেবানের আফগানিস্তান দখল মেনে নিতে পারেননি খালেদ হোসেইনি।
১৯৭৬ সালে দেশ ছাড়লেও জন্মভূমি ও স্বদেশিদের জন্য তাঁর অন্তরে রয়েছে গভীর মমতা। ১৯৮০ সালে এই লেখক বাবা-মার সঙ্গে আমেরিকায় পৌঁছান। এখন তিনি থাকেন নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায়।
তবে আফগানিস্তানে তাঁর অনেক বন্ধু ও পরিবারের সদস্য এখনও আছেন। তাঁদের জন্য উদ্বেগ বোধ করেন তিনি। সম্প্রতি খালেদ হোসেইনি সিএনএনর সঙ্গে কথা বলেছেন তালেবানের ক্ষমতায় ফেরা, আফগানিস্তানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব এবং আমেরিকানদের কাছে তাঁর প্রত্যাশা নিয়ে। তাঁর সেই সাক্ষাৎকার এখানে তুলে ধরা হলো ইজেলের উৎসুক পাঠকদের জন্য।
প্রশ্ন: আপনার শৈশবের শহর কাবুলের দখল ফের তালেবানের হাতে চলে যেতে দেখার পর কেমন অনুভূতি হয়েছিল?
খালেদ: আমার গোটা হৃদয় দুমড়েমুচড়ে গেছে। একদিন ঘুম থেকে উঠে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম, কাবুলের পতন হয়েছে। ৯/১১ আর মার্কিন হামলার পর আমি কয়েকবার আফগানিস্তানে গেছি এবং ব্যাপারটা সত্যিই আমার অন্তরাত্মা দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে।
ওই দেশ, ওই শহর, ওখানকার মানুষ-সবার সঙ্গে শক্তিশালী আবেগি বন্ধন আছে আমার। আসলে ১৯৭৬ সাল থেকে আমি আফগানিস্তানের বাইরে আছি- কিন্তু আমার বেড়ে ওঠা ওখানেই। ওই শহরে তালেবান পতাকা উড়তে দেখাটা ভীষণ কষ্টের।
প্রশ্ন: ওখানে আপনার শৈশবের কথা মনে আছে?
খালেদ: শহরটা একেবারেই অন্য রকম ছিল, যেন পরাবাস্তব কোনো সময় ছিল সেটা। শহরে তখন চায়ের দোকানে হিপ্পিরা বসে আড্ডা দিত, নারীরা প্রকাশ্যে ধূমপান করত, শর্ট স্কার্ট পরত, গাড়ি চালাত, আইনজীবী হিসেবে কাজ করত, ডাক্তারি করত আরও কত কী! তখনকার সমাজ একেবারেই অন্য রকম ছিল। কাবুল ছিল সমৃদ্ধ শহর। রক্ষণশীল ধর্মীয় দেশের তুলনায় শহরটা বেশ উদার ছিল।
সত্যি বলতে কী, ওখানে খুব সুন্দর শৈশব কেটেছে আমার। ওই সময়ে আফগানিস্তানে থাকতে পেরেছি বলে আমি কৃতজ্ঞ। সোভিয়েত আক্রমণের আগে শেষ কয়েক বছরের শান্ত, স্থিতিশীল আফগানিস্তানে থাকার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।
প্রশ্ন: আপনার পরিবারের যেসব সদস্য ও বন্ধুরা এখনো আফগানিস্তানে আছেন, তাঁদের কাছ থেকে কী ধরনের খবর পাচ্ছেন?
খালেদ: এই মুহূর্তে যেমন খবর আশা করা যায়, তা-ই বলছে ওরা। ওরা মূলত নিজেদের ও বন্ধুদের নিরাপত্তা এবং দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভীষণ শঙ্কিত। গত বিশ বছরে ভীষণ কষ্টে যেসব অধিকার ও অর্জন এসেছিল, সেসবের কী হবে, তা নিয়ে শঙ্কিত ওরা।
প্রশ্ন: ২০০১ সালে তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর আফগানিস্তান কোন পথে হাঁটছে বলে মনে হয়েছিল আপনার?
খালেদ: আমার অনুভূতিও আরও লাখো আফগানদের চেয়ে আলাদা কিছু ছিল না। আমাদের মনে হয়েছিল, যাক, তালেবান চলে গেছে, এবার একটা উন্নত ভবিষ্যতের শুরু হলো। আফগানিস্তান আরও স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ দেশ হওয়ার দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করল বলে ভেবেছিলাম।
২০০৩ সালে আমি কাবুল গিয়েছিলাম। ২৭ বছর পর সেবারই প্রথম আফগানিস্তানে ফিরেছিলাম। সেখানে তখন প্রবল উত্তেজনা। সবার মনে আশা, সম্ভাবনার আশা। বিদ্রোহের কোনো আভাস ছিল না কোথাও। লোকজন বেশ আশাবাদী ছিল।
আজকের পরিস্থিতি একেবারেই উল্টো। আমার জন্য, গত বিশ বছরের সবচেয়ে বিবর্ণ সময় পার করছে এখন আফগানিস্তান। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সালের গৃহযুদ্ধের পর সম্ভবত এর চেয়ে দুর্যোগময় সময় আফগানিস্তানে আর আসেনি। আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ কী, ধারণাও করতে পারছি না।
প্রশ্ন: আশা- হতাশায় বদলে যেতে শুরু করে কখন থেকে? আপনি কি কখনো ধারণা করতে পেরেছিলেন যে তালেবান আবার কোনো দিন এভাবে আফগানিস্তাানের দখল নিতে পারবে?
খালেদ: আফগানিস্তাানে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি আমি। সবাই-ই একটা কথা জোর দিয়েই বলেছিল তখন: আমেরিকানরা যদি চলে যায়, তাহলে আফগান রাষ্ট্রের নিজেকে রক্ষা করার ও টিকিয়ে রাখার সামর্থ্য আছে বলে তারা বিশ্বাস করে না।
আমার ধারণা, সিংহভাগ আফগানই আফগানিস্তানে বিদেশি বাহিনীর অনুপস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল বরাবরই। তালেবানের মতো কট্টরপন্থী গোষ্ঠীর হাতে আফগান রাষ্ট্রের দখল চলে যাওয়ায় তারা শঙ্কিত ছিল। কিন্তু এত দ্রুত আফগানিস্তানের পতন হবে, তা আমি ভাবিনি। মাত্র ১১ দিনে গোটা দেশ চলে গেল তালেবানের কবজায়। পুরো ব্যাপারটাই রীতিমতো অবিশ্বাস্য!
প্রশ্ন: অন্য বিদেশি শক্তিরা আফগানিস্তানে হামলা করে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থই হয়েছে। মার্কিন অভিযানের কপালেও কি অনিবার্যভাবে একই পরিণতি অবধারিত ছিল না? মার্কিন বাহিনী আরও বেশি দিন থাকলেও কি অর্থবহ কোনো পরিবর্তন আসত?
খালেদ: প্রথমদিকে আমি আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযানে সমর্থন দিয়েছিলাম- লাখ লাখ আফগানও দিয়েছিল। আফগানিস্তানে আমেরিকানদের কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষুব্ধ হওয়ার যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে। দুই দশকে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা আফগানদের এই সমর্থন ও আমেরিকানদের আত্মবিশ্বাস মুছে দিয়েছে। তবে মোটের ওপর বেশির ভাগ আফগানই বুঝতে পেরেছিল যে আফগানিস্তাানে মার্কিনিদের উপস্থিতির কারণেই দেশটি এখনো কট্টরপন্থীদের দখলে চলে যায়নি।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন সেদিন একটা ভাষণ দিয়েছেন। তাঁকে আমার একটা প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করছিল: গত বিশ বছরের পরিণতি কী হলো? কিসের জন্য করা হলো এসব? মার্কিন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, আমেরিকা যাদেরকে নির্মূল করতে চেয়েছিল, তাদের হাতেই চলে গেছে আফগানিস্তানের দখল। আফগান দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক মারা পড়েছে, গৃহহীন হয়েছে অসংখ্য মানুষ, গ্রামের পর গ্রামে বোমা ফেলা হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ এসব সহ্য করেছে কেবল একটা আশাতেই- দেশের একটা উন্নত ভবিষ্যতের আশায়।
অথচ এখন তাদের ভাগ্যনিয়ন্তা হয়ে গেছে এমন এক গোষ্ঠী, যাদেরকে খোদ আমেরিকাই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আখ্যা দিয়েছিল। যারা ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে আফগানিস্তানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। যারা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর জন্য আফগানিস্তানের মাটিকে নিরাপদ আশ্রয় করে তুলেছিল। সে জন্যই ব্যাপারটা হজম হতে এত কষ্ট হচ্ছে। আর আফগানরা যে নিজেদের প্রতারিত মনে করছে, সে জন্য তাদের দোষ দেওয়া যায় না।
প্রশ্ন: আফগানিস্তান ও আফগানদের প্রতি বিশ্বের এখন কী দায়িত্ব রয়েছে বলে মনে করেন?
খালেদ: আগামী দিনগুলোতে অসংখ্য আফগান গৃহহীন হবে। এরই মধ্যে আফগানিস্তানের ভেতরে মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। তাই এখনই এই মানুষগুলোর কাছে জীবনরক্ষাকারী সেবা পৌঁছে দেওয়া জরুরি। এ দায়িত্ব পালন করতে হবে ইউএনএইচসিআর, জাতিসংঘ রিফিউজি এজেন্সি ও অন্যান্য সংস্থাগুলোকে।
সব দেশকে সীমান্ত খোলা রাখার এবং আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি আমি। এখন আফগানিস্তানের ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার সময় নয়। এখন আফগান ও আফগান শরণার্থীদের ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার সময় নয়।
আফগানদের কাছে আমেরিকার ঋণ রয়েছে। যেসব আফগান মার্কিন উদ্দেশ্যকে সমর্থন দিয়েছে, মার্কিন উদ্যোগের ওপর বিশ্বাস রেখেছে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মার্কিন ও অন্য বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছে, তাদের কাছে ঋণ আছে আমেরিকার। এই মানুষগুলোকে পিঠ দেখাতে পারি না আমরা।
প্রশ্ন: তালেবান বলছে, এবার তাদের শাসন অন্য রকম হবে। তাদের এই দাবিকে আপনার কী মনে হয়?
খালেদ: এ বিষয়ে আমার অনুভূতিও আরও বহু আফগানের মতোই। ওদের এই দাবির আন্তরিকতা নিয়ে আমার মনে ঘোর সন্দেহ আছে। আমাদের মনে হয়, তালেবানকে কথায় নয়, কাজের মাধ্যমে নিজেদের দাবির প্রমাণ দিতে হবে।
এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের নজর তালেবানের ওপর। কাজেই গোষ্ঠীটি যে এখন বলবে ওরা মানবাধিকার ও নারী অধিকারকে সম্মান দেখাবে, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। ওরা কিন্তু খুব সতর্কভাবেই বলেছে যে 'ইসলামি আইনের সীমার মধ্যে থেকে'। এই কথার ফলে ওদের দাবির আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ এসেই যায়।
প্রশ্ন: আপনার বই অসংখ্য পাঠককে আফগানিস্তানের আশপাশের দুনিয়ার সঙ্গে পরিচিত করিয়েছে। ফিকশনে একটা দেশের সংস্কৃতি ও মানুষকে কতটুকু তুলে আনা যায়?
খালেদ: এটা একটা জানালা। এটা একজন মানুষের অভিজ্ঞতা। লোকে আমার বই পড়েছে এবং আফগানদের দুরবস্থা ও আফগানিস্তানের ভূমির সঙ্গে ব্যক্তিগত বন্ধন গড়ে তুলতে পেরেছে, সে জন্য আমি ধন্য। কারণ, বহু বছর ধরে আফগানিস্তান মূলত পরিচিতি পেয়ে আসছে যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক ব্যবসার কারণে। আশা করি, লোকে আমার বই থেক দৃষ্টি সরিয়ে আরও সূক্ষ্ম ও গভীরভাবে আফগানিস্তানকে বুঝতে চেষ্টা করবে।
নিজেকে আমি আফগানিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে দেখি না। আফগানদের জন্য আমার গভীর মমতা আছে, সেখানে যা হচ্ছে তার ব্যাপারে গভীর আগ্রহ আছে, কিন্তু আমি অনেক অনেক দিন ধরে দেশের বাইরে আছি। আমি আশা করি, আফগানিস্তান সম্পর্কে জানার জন্য আমার বইগুলো প্রাথমিক সহায়ক হতে পারে, কিন্তু এখানেই আফগানিস্তান সম্পর্কে জানাশোনা শেষ হওয়া উচিত নয়।
প্রশ্ন: এই মুহূর্তে আর কোন কোন আফগান লেখকদের পড়া উচিত?
খালেদ: সাংবাদিক ও অসাধারণ লেখক ফারিবা নাওয়া একটা বই লিখেছেন—অপিয়াম নেশন: চাইল্ড ব্রাইডস, ড্রাগ লর্ডস, অ্যান্ড ওয়ান উওম্যান'স জার্নি থ্রু আফগানিস্তান। আফগানিস্তানে আফিম ব্যবসা নিয়ে একটা পারিবারিক স্মৃতিকথা এ বই। আফগানিস্তানের গত ৩০ বছরের পরিস্থিতি নিয়েও পর্যবেক্ষণ আছে এ বইয়ে।
যারা শুধু আফগান ইতিহাস নয়, সেই সাথে নির্বাসিত আফগানদের জীবনযাত্রা সম্পর্কেও জানতে চান, তাঁদের আমি তামিম আনসারির ওয়েস্ট অব কাবুল, ইস্ট অব নিউইয়র্ক পড়ার পরামর্শ দেব।
প্রশ্ন: এই মুহূর্তে কোন কোন আফগানদের কণ্ঠ উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে?
খালেদ: এই মুহূর্তে যে বিষয়টি নিয়ে আমি সবচেয়ে উদ্বিগ্ন, তা হলো নারীদের কণ্ঠ উপেক্ষা করা হচ্ছে। ১৯৯০-এর দশকে আফগানিস্তানে তালেবানরা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন আফগান সামাজিক জীবনে নারীদের যেকোনো অর্থবহ অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ ছিল। ওই সময়ের আফগানিস্তান সম্ভবত একজন নারীর জন্য এ গ্রহে সবচেয়ে জঘন্য জায়গা ছিল।
এখন তালেবান ভালো ভালো কথা বলছে, কিন্তু অন্য আফগানদের মতোই আমিও আশা করছি, আফগানিস্তানে নারীদের কণ্ঠ রোধ করা হবে না। তারা আফগানিস্তানের সবচেয়ে সাহসী, সবচেয়ে প্রাণোচ্ছল, সবচেয়ে চটপটে গোষ্ঠী। তাদের জন্য আমার মনে গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে।
প্রশ্ন: আফগানিস্তান সম্পর্কে আর কোন বিষয়টা মানুষকে জানাতে চান?
খালেদ: এই মানুষগুলো যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত। বিধ্বস্ত। নিঃশেষিত। ৪০ বছর ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছে তারা। ৪০ বছর ধরে তারা গৃহহীন, একের পর এক সংকটের মুখে পড়ছে।
আমি সবাইকে অনুরোধ করব, স্পটলাইট সরে যাওয়ার পর যেন তারা আফগানদের ওপর থেকে চোখ না ফিরিয়ে নেয়। স্পটলাইট সরে যাবে, কিন্তু লক্ষ লক্ষ ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষগুলো থেকে যাবে।
গত ২০ বছর ধরে আমেরিকা আফগানদের সহযোগী বলে ডেকেছে, তারপর আমাদের ছেড়ে চলে এসেছে। লক্ষ লক্ষ আফগান এখন এমন এক গোষ্ঠীর করুণার ওপর নিভর্রশীল হয়ে পড়েছে, যারা বিশ বছর ধরে দেশে পরিকল্পিতভাবে জুলুম ও সন্ত্রাসবাদ চালিয়েছে।
সহিংসতার হাত থেকে বাঁচার জন্য দলে দলে আফগানদের সীমান্তের পানে ছুটতে দেখা অবাক হওয়ার কিছু না। এই মানুষগুলোকে আশ্রয় ও নিরাপত্তা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তাই যেসব সংস্থা শরণার্থীদের অধিকার ও কল্যাণ নিয়ে কাজ করে, দয়া করে তাদের সহায়তা করুন।