ভাষাকে টিকিয়ে রাখতে হলে লিখুন
আপনি শুদ্ধ উচ্চারণে শুদ্ধ স্বর ও সুরে জগন্ময় মিত্রের গাওয়া 'তুমি আজ কতদূরে/আঁখির আড়ালে চলে গেছ, তবু রয়েছ হৃদয়জুড়ে' গেয়ে শোনাতে পারেন, কাজী নজরুল ইসলামের 'লিচু চোর' অভিনয় করে আবৃত্তি করতে পারেন, রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি থেকে উদ্ধৃতি দিতে পারেন, সিরাজউদ্দৌলা নাটক থেকে সিরাজের কথোপকথন মুখস্থ বলতে পারেন, নিঃসন্দেহে আপনি একজন মেধাবী মানুষ। কিন্তু আপনি দেখে দেখে বাংলা পড়তে পারেন না, লিখতেও পারেন না।
আপনি তাহলে এত কিছু শিখলেন কেমন করে? শুনে শুনে। কখনো কখনো রেকর্ড, টেপ, ইউটিউব রিডইন্ড করে, রোমান হরফের লেখা দেখে।
আপনি কেবল বলতে পারেন, পড়তে পারেন না, লিখতে পারেন না। তাহলে আপনি কোনোভাবেই বাংলা ভাষায় 'লিটারেট' নন। আপনি ইললিটারেট। হতে পারে আপনি ইংলিশ, ফ্রেঞ্চ কিংবা স্প্যানিশ তিনটিতেই লিটারেট কিন্তু বাংলার জন্য আপনি ইললিটারেটই রয়ে গেলেন।
ভাষাকে টিকিয়ে রাখতে হলে লিটারেট হওয়া খুবই জরুরি। আপনাকে বলতে হবে, পড়তে হবে, লিখতে হবে।
কথার মাধ্যমে ভাষা বিনিময় ও লেনদেনের ইতিহাস কমপক্ষে পঞ্চাশ হাজার বছরের পুরোনো, আর লেখালেখির মাধ্যমে পাঁচ-ছয় হাজার বছরের বেশি তো নয়।
ভাষা বিলীন হয়ে যাবার সংবাদ আমরা প্রায় পড়ছি। কোনো অঞ্চলে নির্দিষ্ট কোনো ভাষা ব্যবহারকারী শেষ জীবিত ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছেন। আর তার মৃত্যুর সাথেই চিরদিনের জন্য সমাহিত হলো একটি ভাষা ও একটি সংস্কৃতি। আবার এটাও পড়ছি, কোনো একটি আফ্রিকান ভাষা ব্যবহারকারী জীবিত মানুষ বেঁচে আছেন আর মাত্র তিনজন।
ভাষাবিজ্ঞানীরা বলেছেন, একটি ভাষাকে টিকিয়ে রাখতে সেই ভাষা সর্বক্ষণ ব্যবহারকারী কমপক্ষে পঞ্চাশ হাজার মানুষ থাকার প্রয়োজন। একালে এই ঝুঁকি অনেক বেশি। প্রজনন সিদ্ধান্ত মানুষ নিজের হাতে তুলে নিয়েছে। ফলে সন্তানসংখ্যা কমে গেছে। হরেক রকম তথ্যের কাছে মানুষের প্রবেশাধিকার সহজ হয়ে পড়েছে। মানুষের প্রয়োজন ও বিশ্বায়নের তোড় সংস্কৃতির ইন্টেগ্রিটি ভেঙে দিচ্ছে, বিপদাপন্ন ভাষার মানুষ নিজের মাবাবার জবান ভুলে অর্থকরী জবানের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এভাবেই প্রতি পক্ষকালে যে একটি একটি করে ভাষা মৃত্যুবরণ করছে বলে আমরা///। সেগুলো কোন ভাষা? অবশ্যই বিপদাপন্ন ভাষা। কিন্তু বিপদাপন্ন ভাষার একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য এ ভাষার লেখ্যরূপ নেই। (লিখিত রূপ থাকলেও ভাষা বিপদাপন্ন হয়ে উঠতে পারে। সে ক্ষেত্রে কারণ ভিন্ন)।
আপনার বিপদাপন্ন ভাষা রক্ষার দায়িত্ব কার? করণীয় কী?
ভাষাটির লিখিত আকার না থাকলে যত দ্রুত সম্ভব লিখিত রূপ দেবার উদ্যোগ নিন। আপনি যদি আপনার ভাষার সর্বশেষ জীবিত ব্যক্তি হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার কথা বলার আর কোনো সঙ্গী নেই। ভাষাবিজ্ঞানীরা ময়না পাখির মুখের কথা শুনে একটি বিলুপ্ত ভাষার কয়েকটি শব্দ উদ্ধার করেছেন। সর্বগ্রাসী বিশ্বভাষা ইংরেজির লেখকেরাও মনে করছেন, তাদের ভাষাও বিপন্ন। কারণ, তারা দ্রুত ভাষার উপর নিয়ন্ত্রণ হারাতে যাচ্ছেন। তাদের ভাষা অধিগ্রহণ করছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। চ্যাটজিপিটি লিখে দিচ্ছে ঢাউস উপন্যাস, কবিতা ও প্রবন্ধ। গুগল করে দিচ্ছে অনুবাদ। মানুষ আতঙ্কিত এমনকি ইলন মাস্কের মতো মানুষও। ভাষার ভবিষ্যৎ এখন নির্ভর করছে চ্যাটজিপিটি ধরনের প্রোগ্রামের হাতে। সবকিছু বেদখল হওয়ার আগে আপনার ভাষাকে দলিলীকৃত করুন-লিখে ফেলুন আপনার যা কিছু লেখার কাহিনি, স্মৃতি, উপন্যাস-সবই।
ভাষাকে বাঁচাতে, নিজেকে টিকিয়ে রাখতে, নিজের কথা মৃত্যুর পরও মানুষকে শোনাতে আপনাকে লিখতে হবে।
আপনি লিখবেন না এবং লিখতে পারেন না এমন বহু যুক্তি আপনার থাকবে। তার সবই নাকচ করে দেওয়া যাবে আপনি একবার কলম হাতে নিন। লিখার একটি প্রায়োগিক ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন বিখ্যাত ও জনপ্রিয় লেখক স্টিফেন কিং (জন্ম ২১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭. পোর্টল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র)। একালের একজন সেরা বেস্ট সেলার লেখক স্টিফেন কিং। তিনি মোটেও আমার প্রিয় লেখক নন। কিন্তু যদি ভালো কথা বলেন, তার কথা শুনতে সমস্যা নেই।
তিনি বলেছেন, কাগজ-কলম নিয়ে বসে পড়ুন।
১. টেলিভিশন দেখা বন্ধ করুন
স্টিফেন কিং মনে করেন, সৃজনশীলতার জন্য বিষতুল্য হচ্ছে টেলিভিশন। লিখতে হলে নিজের দিকে তাকাতে হবে। অন্যের কী হলো না হলো, তাতে আপনার কিছু যায়-আসে না। লিখতে তো হবেই, আর একটি কাজ পঠন, পড়ুন।
২. ব্যর্থতার জন্য তৈরি থাকুন, সমালোচনা সহ্য করতে শিখুন
লেখালেখি চালিয়ে যাওয়া অনেকটাই মহাসাগরে বাথটাব ভাসিয়ে তাতে চেপে আটলান্টিক পাড়ি দেবার মতো একটি কাজ। ফলে কাজটা আপনাকে দিয়ে হবে কি না, এ নিয়ে সন্দেহ জাগতেই পারে। সন্দেহ জাগুক, কলম থমকে থাক, তবুও লেখার টেবিল ছাড়া যাবে না। টেবিল না ছাড়লেই দেখবেন কলম আবার চলতে শুরু করেছে। আবার আশা জাগছে।
৩. অন্যকে সন্তুষ্ট করার জন্য সময় নষ্ট করবেন না
ভাষাকে বাঁচাতে লেখক আপনাকে হতে হবে, সে সাথে খানিকটা রূঢ়। কারণ, আপনার সামনে লেখালেখি করার মতো অঢেল সময় নেই। আপনার এড়িয়ে যাবার রূঢ়তা কাউকে অসন্তুষ্ট করতে পারে। তারা আপনাকে হোমোফোবিক, সাইকোপ্যাথ বলতে পারে। বলুক, বলতে দিন। আপনার একান্ত স্বজনেরাও মনে করবে, আপনি সময় নষ্ট করছেন, মেধার অপচয় ঘটাচ্ছেন। তত দিনে আপনি জেনে যাবেন প্রতিষ্ঠিত লেখকদের সকলকেই এসব শুনতে হয়েছে। আপনি কাঁধ ঝাঁকি দিয়ে সব গালাগাল ছুড়ে ফেলে কলম চালিয়ে যান।
৪. কার জন্য লিখবেন? নিজের জন্য
বৃহত্তর পাঠকগোষ্ঠীর কথা ভাবার কোনো প্রয়োজন নেই। কেবল নিজের জন্য লিখতে থাকুন। যে বিষয়টির সাথে আপনার পরিচিতি ঘনিষ্ঠ, সে বিষয় নিয়ে লিখুন। ভাষা নিয়ে পাণ্ডিত্য করার প্রয়োজন নেই।
৫. লেখকেরা হচ্ছেন কাহিনির প্রত্নতত্ত্ববিদ
যে বিষয়টি লেখা কঠিন, সেটিও আপনাকে সামলাতে হবে। লেখকেরা হচ্ছে কাহিনির প্রত্নতত্ত্ববিদ। খুঁড়ে খুঁড়ে কাহিনিটা টেনে তুলতে হবে। আপনি যখন লিখতে বসে গেছেন, আপনি পারবেন।
৬. লেখার সময় পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখুন
লেখালেখিটা অত্যন্ত ব্যক্তিগত একটি চর্চা। গল্পগুজব করতে করতে লেখালেখির দরকার নেই। এমনকি ফোনটাও দূরে সরিয়ে রাখুন। আপনি দু-চারটা ফোন না ধরলে পৃথিবীর এমন কিছু আসে-যায় না। আপনার সাড়া পাওয়ার জন্য পৃথিবী বসেও নেই। দরজা বন্ধ রেখেই লিখুন, তবে পুনর্লিখনের সময় দরজাটা খোলা রাখুন।
৭. ভান করতে যাবেন না
যে কাহিনিটা আপনার জন্য সহজাত নয়, যে ভাষা আপনার জন্য আরোপিত, যে উপমা চাপিয়ে দেওয়া-সেসব লিখতে যাবেন না। বিশেষ করে উপমার অপপ্রয়োগ এবং অপ্রয়োজনীয় প্রয়োগ ভাষা ও কাহিনির অনেক ক্ষতি করে থাকে। সম্ভাবনার মৃত্যু ঘটিয়ে দেয়।
৮. বিশেষণের বিশেষণ আর বড় অনুচ্ছেদ বর্জন করুন
বিশেষণই যথেষ্ট, তাকে আর বিশেষায়িত করার প্রয়োজন নেই। অ্যাডভার্ব কখনো আপনার বন্ধু হতে পারে না। যে সুন্দর গাছটি আপনার সামনের বাগানটিতে নেই; অকারণে সে বাগানে সেই গাছটি রোপণ করতে যাবেন না। তাতে বাগান যেমন অনভ্যস্ত বোধ করবে, তেমনি কাহিনিও ভাববে বহিরাগতের উৎপাত। বড় প্যারাগ্রাফ রচনা কোনো কৃতিত্ব নয়। আপনার লেখাই বলে দেবে কোথায় নতুন অনুচ্ছেদের শুরু।
৯. ব্যাকরণ ও অলংকার অতিসচেতনতা অনাবশ্যক
আপনি যখন স্বাভাবিকভাবে শুদ্ধ ভাষা লিখতে পারছেন, অতি খুঁতখুঁতে হয়ে লেখাতে ব্যাকরণের ভুলটা আবিষ্কার করতে যাবেন না। ভাষাকে বো-টাই পরাতে যাবেন না, ভাষার ফিতে বাঁধা জুতোরও দরকার নেই। পাণ্ডিত্য ফলিয়ে ভাষাকে এমন অবস্থানে নেবেন না, যা পড়তে পাঠকের খটকা লাগে। আপনার কাজ গল্প বলা, যত সহজভাবে যত সাবলীলভাবে সম্ভব বলে যান।
১০. বর্ণনার শিল্প আয়ত্তে আনুন
বেশি বলা, পুঙ্খানুপুঙ্খ বলা, একেবারে ফটোজেনিক চিত্র তুলে ধরা মানে ভালো বর্ণনা নয়। বর্ণনার শুরুটা লেখকের কল্পনা, শেষটা পাঠকের। এমনভাবে খানিকটা বর্ণনা পাঠকের কল্পনার উপর ঠেলে দেবেন যেন বাকিটা পাঠক নিজের মতো গুছিয়ে নিতে পারে। আপনার অনুধাবনে এবং লিখনে স্বচ্ছতা হচ্ছে ভালো বর্ণনার চাবিকাঠি। আপনার বর্ণনা যদি পাঠককে ক্লান্ত করে তোলে, তাহলে তিনি কাহিনি থেকে সরে যাবে। আপনার বর্ণনা এত ভালো যে আপনি নিজেই মুগ্ধ হয়ে একে আরও সুন্দর করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু আপনি জানেন না যে পাঠক ওই বাড়তিটুকু পছন্দ করছে না।
১১. প্রেক্ষাপটের বেশি তথ্য সরবরাহ করবেন না
আপনি অনেক জানেন। আপনার ক্লাস লেকচার অসাধারণ। আপনার উপস্থাপনা ও তথ্যের সমাহার দেখে শিক্ষার্থীরা অভিভূত। বেশ তো, আপনি এখানেই থামুন। আপনার এই প্রশংসিত লেকচার হুবহু সাহিত্য আনার দরকার নেই। শেষ পর্যন্ত আপনি যাদের জন্য লিখছেন, তারা কেউই আপনার ছাত্র-ছাত্রী নয়, তাদের কারও আপনার লেকচার আত্মস্থ করার দরকার নেই, কেউই পরীক্ষায় বসতে যাচ্ছে না। আপনার জ্ঞান উজাড় করে ঢেলে দিয়ে পাঠকের স্বাভাবিক গ্রহণযোগ্যতার উপর আপনি আসলে চাপ সৃষ্টি করছেন। আপনার পাঠক আসলে আপনার কাহিনি ও পাত্রপাত্রীদের নিয়ে বেশি আগ্রহী। আপনার বিদ্যা কিছুটা তুলে রাখুন।
১২. আপনার কাহিনির চরিত্রকে যতটা সম্ভব তুলে ধরুন
আপনার কাহিনিতে খুনির জীবনের সবটাই খারাপ হতে পারে না। সে থুড়থুড়ে বুড়িকে সযত্নে রাস্তা পার করে দেয়। ক্ষুধার্ত ভিখারিকে খাওয়ায়। আবার সুন্দর প্রেমিক পুরুষটি সুযোগ পেলে ধর্ষণেরও উদ্যোগ নেয়। আসলে মানুষ যেমন তেমনভাবেই তাকে নিয়ে লিখুন। তাতে লেখাটা যেমন সহজ হবে, পাঠকও সহজে চরিত্রের সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারবে।
১৩. ঝুঁকি নিন, শুধু নিরাপত্তার সন্ধান করবেন না
আপনার কাহিনির চরিত্র যেখানে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছে, তার কথা লিখতে গিয়ে আপনি সামান্য ঝুঁকিও নেবেন না? সব সময়ই নিরাপত্তা কার্ড খেলার চেষ্টা করবেন না। পাঠক মোটেও বোকা নন, আপনার ধূর্ত আচরণ পাঠক ঠিকই ধরে ফেলবে। তা ছাড়া গা বাঁচিয়ে চলাটা তো 'বোরিং'-ও।
১৪. ভালো লিখতে কোনো ড্রাগ আর অ্যালকোহলের দরকার নেই
মদ্যপান থেকে শুরু করে উত্তম রচনার লিখতে মাথা খোলার জন্য হরেক রকম ড্রাগ ব্যবহারের কথা বলা হয়ে থাকে। সব বাজে কথা। ড্রাগ যদি লেখককে দিয়ে ভালো কিছু লিখিয়ে নিতে পারত, তাহলে ড্রাগ এডিক্টরা হতো দেশে দেশে শ্রেষ্ঠ লেখক।
১৫. অন্য কারও রচনা কিংবা কল্পনা মেরে দেবেন না
বই কোনো টার্গেট করার মতো ক্রুজ মিসাইল নয়। কাজেই অন্য লেখকের কোনো সৃষ্টি নিজের করে চালিয়ে দেবার চেষ্টা বুমেরাং হয়ে যেতে পারে। লেখক হবার কথা ছিল কিন্তু চোর হয়ে গেলেন। এমনকি অন্যের পরিচিত স্বর আপনার মধ্যে থাকলে সেটা এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করবেন।
১৬. বুঝতে চেষ্টা করুন লেখালেখি এক ধরনের টেলিপ্যাথি
লেখালেখিটা কেবল লেখালেখি নয়, এর চেয়ে বেশি কিছু। কাগজে যা মুদ্রিত হচ্ছে, তার স্থানান্তরযোগ্যতা রয়েছে। পরিশ্রুত হয়ে তা পাঠকের মস্তিষ্কে ঠাঁই নিচ্ছে। আপনার লিখিত শব্দ একটি মাধ্যম। এই শব্দগুলো লেখক পাঠকের মধ্যে সংযোগ ঘটিয়ে দিচ্ছে। সম্পূর্ণ অজ্ঞাত মানুষের সাথে টেলিপ্যাথিক যোগাযোগের বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে।
১৭. প্রতিদিনই লিখবেন
লেখালেখির প্রকল্পটি হেলাফেলার কোনো প্রকল্প নয়। আপনাকে প্রতিদিনই এই প্রকল্প বাস্তবায়নে বসতে হবে। প্রতিদিন না বসলে চরিত্রগুলো আপনাকে এবং আপনি চরিত্রগুলোকে ভুলে যেতে থাকবে। একদিন বাদ দিলেই চলমান কাহিনিটা বাসি হয়ে গেল। তখন কাহিনি ও চরিত্রের উপর থেকে আপনার নিয়ন্ত্রণের হাত আলগা হয়ে যাবে।
১৮. প্রথম তিন মাসের মধ্যে প্রথম খসড়া শেষ করুন
তিন মাসই, মোট ১ লাখ ৮০ হাজার শব্দ। কোনোভাবেই তিন মাসের বেশি নয়। তাহলে কাহিনিটা ঝুলে পড়বে, পাঠক হতাশ হবেন।
১৯. লেখা শেষ হলে তাড়াহুড়ো নয়, পেছন ফিরে দেখুন
কাহিনিতে সমস্যা চোখে পড়ছে। বেশ সম্পাদনা করতে বসে পড়ুন। বড় কাজ তো সেরে ফেলছেন। একটু সময় নিয়ে অসংগতিগুলোর সমাধান করুন।
২০. এবার নির্মম হোন
বাক্যটা কিংবা অনুচ্ছেদটা যত ভালোই হোক, তা কাহিনিতে স্যুট করছে না। নির্মমভাবে কেটে ফেলুন। কাটতে কাটতে হয়ত কাহিনির সারবস্তুই চলে যাবে, সমস্যা নেই নতুন করে দেখুন।
২১. বিবাহিত জীবনযাপন করুন
স্টিফেন কিং লেখালেখির সময়টাতে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং বিবাহিত থাকতে বলেছেন। তিনি স্ট্যাবল রিলেশনশিপের কথা বলেছেন। স্টিফেন কিং বিবাহিত না থাকার অপকারিতার তেমন ব্যাখ্যা দেননি।
২২. টেক ইট সিরিয়াসলি
যার যে ভূমিকা থাকবে, সিরিয়াসলি নেবেন। সিরিয়াস না হবার বিকল্প একটাই, লেখক না হওয়া। তাহলে ভাষা রক্ষা করবে কে?
আপনার ভেতরের লেখক বের হয়ে আসুক, তিনিই আপনার ভাষার রক্ষক। আপনি না পারলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিন। প্রযুক্তি আপনার ভাষা বাঁচাতে সহায়ক হবে।