কক্সবাজারে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ যুবলীগ নেতা হত্যায় অভিযুক্ত দুই রোহিঙ্গা নিহত
কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ যুবলীগ সভাপতি ওমর ফারুক হত্যায় অভিযুক্ত দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। ফারুক হত্যা মামলার আসামি ধরতে টেকনাফের হ্নীলা জাদিমুড়া পাহাড়ের পাদদেশে গেলে পুলিশের সঙ্গে নিহতদের এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
বন্দুকযুদ্ধে পুলিশেরও তিন সদস্য আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে দুটি এলজি (আগ্নেয়াস্ত্র), ৯টি শর্টগানের তাজা কার্তুজ ও ১২ রাউন্ড কার্তুজের খোসা পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।
নিহতরা হলেন, মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মংডুর সব্বির আহমেদের ছেলে মুহাম্মদ শাহ ও একই জেলার রাসিদং থানা এলাকার সিলখালির আবদুল আজিজের ছেলে আবদু শুক্কুর। তারা ছিলেন টেকনাফের হ্নীলার জাদিমুড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।
টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া এলাকার আবদুল মুনাফ সওদাগরের ছেলে ও হ্নীলা ইউনিয়ন যুবলীগ ৯নং ওয়ার্ড সভাপতি এবং জাদিমুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওমর ফারুক (২৪) কে জাদিমুড়া এলাকার একদল সন্ত্রাসী তুলে নিয়ে খুব কাছ থেকে গুলি করে পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যান।
ওমর হত্যার প্রতিবাদে পরদিন শুক্রবার সড়কে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন হাজার হাজার লোক। সেদিন এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এতে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও বেশ কজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলার এজাহারনামার পলাতক আসামিরা জাদিমুড়া পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান করছেন এমন সংবাদ পেয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই রাসেল আহমদ শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে অভিযানে যান। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলে তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে কথিত আসামিরা তাদের দিকে এলোপাতাাড়ি গুলি করতে থাকেন। সন্ত্রাসীদের গুলিতে পুলিশের এস আই মনসুর, এ এস আই জামাল ও কনস্টেবল (৯৩২১) লিটন গুলিবিদ্ধ হন।
জীবন ও সরকারি মালামাল রক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা ৪০ রাউন্ড গুলি করে। একপর্যায়ে কথিত সন্ত্রাসীরা পিছু হটে পাহাড়ের গভীরে পালিয়ে যান।
পরে ঘটনাস্থলে তল্লাশী চালালে ফারুক হত্যা মামলার আসামি মুহাম্মদ শাহ ও আবদু শুক্কুরকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। এ সময় তাদের পাশ থেকে দুটি এলজি (আগ্নেয়াস্ত্র), ৯টি শর্টগানের তাজা কার্তুজ ও ১২ রাউন্ড কার্তুজের খোসাও উদ্ধার করা হয়।
ওসি আরও জানান, গুলিবিদ্ধ শাহ ও শুক্কুরকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার সেখানে তাদের চিকিৎসা সম্ভব নয় বলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। শনিবার ভোরে পুলিশ আহতদের নিয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পৌঁছালে, কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
ময়না তদন্তের জন্য তাদের মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় পৃথক আইনে মামলা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।