আন্তর্জাতিক ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে তুষারের অবসর
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১২ হাজার রানের মাইলফলক গড়ার হাতছানি ছিল। তাই ম্যাচটা শেষ করেই অবসরের ঘোষণা দিতে চেয়েছিলেন তুষার ইমরান। কিন্তু চোটের কারণে সেটা পারলেন না বাংলাদেশের এই ক্রিকেটার। আক্ষেপ নিয়েই রোববার আন্তর্জাতিক ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন তুষার। তবে লিস্ট 'এ' ক্রিকেট খেলবেন তিনি।
বিকেএসপিতে ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে ম্যাচের আগে অবসরের ঘোষণা দেন ৩৮ বছর বয়সী তুষার। এদিন মাঠে থাকা দুই দলের ক্রিকেটাররা তাকে 'গার্ড অব ওনার' দেন। ক্রিকেটারদের অধিকার আদায়ের সংগঠন কোয়াব তাকে বিদায়ী সংবর্ধনা দিয়েছে।
মাত্র ২৮ রানের জন্য প্রথম শ্রেণিতে ১২ হাজার রানের মাইলফলক গড়া হলো না তার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটসম্যানের ১০ হাজার রানও নেই। জাতীয় ক্রিকেট লিগের ষষ্ঠ ও শেষ রাউন্ড শুরুর আগে ৯ হাজার ১৯৩ রান নিয়ে দুই নম্বরে আছেন নাঈম ইসলাম। ৯ হাজারের বেশি রান আছে কেবল অলক কাপালির। তার রান ৯ হাজার ১৩০।
২০০০-০১ মৌসুমে প্রথম শ্রেণি ও লিস্ট 'এ' দিয়ে পেশাদার ক্রিকেটের পথচলা শুরু হয় তুষারের। দীর্ঘ ২১ বছরের ক্যারিয়ারে ১৮২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ৪২.৭৫ গড়ে রান করেছেন ১১ হাজার ৯৭২। লঙ্গার ভার্সনের এই ক্রিকেটে ৩২টি সেঞ্চুরি আছে তার, সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ২২০। রানের মতো সেঞ্চুরিতেও সবার ওপরে তিনি, ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৬৩টি।
বিদায় বেলায় আক্ষেপই করতে দেখা গেল তুষারকে। তিনি বলেন, 'চোট না ভোগালে হয়ত আরেকটা মৌসুম খেলতে পারতাম। তাহলে হয়তো মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলতে পারতাম। কিন্তু স্রেফ ওই কয়টা রানের জন্য আর ক্যারিয়ার দীর্ঘায়িত করতে চাইনি। পাঁচ ইনিংসে যে কয়টা রান দরকার ছিল সেটা করতে পারিনি। একটু আক্ষেপ হওয়ারই কথা। সব মিলিয়ে মনে হয়েছে, অবসরে যাওয়ার এটাই সঠিক সময়।'
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও প্রথম শ্রেণিকে বিদায় বললেও লিস্ট 'এ' ক্রিকেট খেলবেন তুষার। অন্তত আরও একটি মৌসুম খেলার ইচ্ছা আছে তার। তুষার বলেন, 'আন্তর্জাতিক ও প্রথম শ্রেণিকে বিদায় বললাম। তবে প্রিমিয়ার লিগে অর্থাৎ, লিস্ট 'এ' ক্রিকেট খেলব। অন্তত আরেকটি মৌসুম খেলতে চাই।'
এক সময় বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ডানহাতি এই। জাতীয় দলের জার্সিতে ৫ টেস্ট ও ৪১ ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। ২০০৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর নিউজিল্যান্ড সফরে দেশের হয়ে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেন তুষার। ২০০১ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয় তার। পরের বছর জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে কলম্বোয় টেস্ট অভিষেকও হয় অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের।
৬ বছরে মাত্র ৫ টেস্ট ও ৪১ ওয়ানডে খেলার সুযোগ হয় তুষারের। ৫ টেস্টে ৮.৯০ গড়ে মাত্র ৮৯ রান আছে তার নামের পাশে। সর্বোচ্চ রান ২৮! ৪১ ওয়ানডেতে দুটি হাফ সেঞ্চুরিসহ ১৪.৩৫ গড়ে ৫৭৪ রান করেন তুষার। সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ৬৫*। কোনো ফরম্যাটেই নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারায় জাতীয় দলের পথটা দীর্ঘ হয়নি তার।