আশায় ছিলেন শরিফুল, ইমন বলছেন অপ্রত্যাশিত
১৯ বছরের ক্রিকেট সফরে বিশ্বসেরার মুকুট জিতেছেন তারা। বিশ্বজয়ের পরই করোনাভাইরাসের হানা না থাকলে আরও দাপট দেখা যেত তাদের ব্যাটে-বলে। তবে তারুণ্যের জয়গান তো থামার নয়। দীর্ঘদিন পর মাঠে ফিরেই নিজেদের সামর্থ্য দেখিয়েছেন বিশ্বজয়ী যুব দলের ক্রিকেটাররা।
বিসিবি প্রেসিডেন্ট কাপ ও বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ব্যাটে-বলে নজর কেড়েছেন যুব দলের বেশ কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটার। এদের মধ্যে দুটি নাম একটু বেশিই ঝলমলে, শরিফুল ইসলাম ও পারভেজ হোসেন ইমন। অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের ভীড়েও বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে ছড়ি ঘুরিয়েছেন এ দুজন।
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের হয়ে খেলা শরিফুল টুর্নামেন্টজুড়ে ছন্দময় বোলিং করেছেন। ১৯ বছর বয়সী বাঁহাতি এই পেসার ১০ ম্যাচে শিকার করেন ১৬ উইকেট, যা আসরের চতুর্থ সর্বোচ্চ। ফরচুন বরিশালে খেলা ইমন ৯ ম্যাচে একটি সেঞ্চুরি ও একটি হাফ সেঞ্চুরিতে করেন ২৩৩ রান। মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর বিপক্ষে তো রীতিমতো তাণ্ডব চালান ১৮ বছর বয়সী বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। চার-ছক্কার ফুলঝুরি সাজিয়ে মাত্র ৪২ বলে সেঞ্চুরি করেন তিনি, যা বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের দ্রুততম।
বিশ্বজয়ী যুব ক্রিকেটারদের ওপর এমনিতেই নজর ছিল বিসিবির। তরুণ এসব ক্রিকেটারদের ঠিক পথে রাখতে অনূর্ধ্ব-২১ দলের একটি প্রোগ্রাম ঘোষণা করেছিল বিসিবি। যে প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে ১ লাখ টাকা করে পাচ্ছেন তারা। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ভালো খেলার জন্য আরও বড় পুরস্কার পেলেন শরিফুল ও ইমন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘোষণা করা ২৪ সদস্যের ওয়ানডের প্রাথমিক স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছেন এই দুই ক্রিকেটার, যা তাদের জন্য প্রথম। বল হাতে ছন্দে থাকায় এমন কিছুর প্রত্যশায় ছিলেন শরিফুল। তবে প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পাওয়ার বিষয়টি ইমনের কাছে একেবারেই অপ্রত্যাশিত। জাতীয় দলের হয়ে খেলার স্বপ্নসিড়ির একটি ধাপে পা রেখে উচ্ছ্বসিত শরিফুল-ইমন। সেই উচ্ছ্বাসের কথা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন তারা।
শরিফুল ইসলাম
ওয়ানডের প্রাথমিক দলে আমার জায়গা হয়েছে, খবরটা পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। এটা ভালো লাগার মতোই একটা খবর। যেটার জন্য এতো কষ্ট করে আসছি, সেখানের প্রথম ধাপে ডাক পেয়েছি। সব মিলিয়ে দারুণ এক অনুভূতি কাজ করছে। সবারই লক্ষ্য থাকে। আমার স্বপ্ন ছিল ভালো করে জাতীয় দলে যাব, ক্যাম্পে ডাক পাব। তো ডাক পেয়েছি। চেষ্টা করব যেন এখান থেকে ঝরে না যাই।
দুটি টুর্নামেন্টে ভালো বোলিং করার পর কিছুটা আশায় ছিলাম যে ডাক পেতে পারি। দুটি টুর্নামেন্টে আমার ভালো যাওয়ার কারণেই ডাক পেলাম বলে মনে হচ্ছে। কারণ অনূর্ধ্ব-১৯ ভিন্ন পর্যায়ের ক্রিকেট ছিল। আর এই ক্রিকেট আলাদা। তো এখানে পারফর্ম করলে ডাক পাওয়া যায়। আমার ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে।
ভালো খেলার মূল্যায়ন পেলে সবারই ভালো লাগে। ভালো খেলে সেটার মূল্যায়ন যদি পাই, তাহলে স্পিরিট আরও বেড়ে যায়। ভালো করার চেষ্টা আরও বাড়তে থাকে। চূড়ান্ত দলে জায়গা হলে চেষ্টা করব স্বাভাবিক খেলাটা খেলার। যেখানেই সুযোগ হয়, সেরাটা দিয়ে দলে থাকার চেষ্টা করব।
পারভেজ হোসেন ইমন
খুবই ভালো লাগছে যে প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পেয়েছি। তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য এটা খুবই বড় একটা ধাপ। এই সময়ে এমন খবরে খুবই রোমাঞ্চ কাজ করে, আমার ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। সব মিলিয়ে ভালো একটা অনুভূতি কাজ করছে।
আমাকে কী কারণে ডাকা হলো, এসব নিয়ে সত্যি বলতে ভাবিনি। আমি স্কোয়াডে আমরা নাম দেখে খুবই অবাক হয়েছি, বিস্ময় কাজ করছিল। এটা অনেকটাই অপ্রত্যাশিত ছিল। ভাবিনি এতো দ্রুত ডাক আসবে। তো এখানে ভালো করতে হবে। এর বাইরে কিছু ভাবছি না।
যেকোনো পর্যায়েই ভালো করার স্বীকৃতি সবাইকে আনন্দ দেয়, সাহস বাড়ায়। এতে করে উদ্যোম আরও বেড়ে যায়। শেষ টুর্নামেন্টটা আমার মোটামুটি ভালো গেছে। হয়তো আরও ভালো হতো যদি ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারতাম। তবে যা হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। খুব ভালোই গেছে সব কিছু।
প্রাথমিক দলে ডাক পেলাম, এরপর কী হবে, চূড়ান্ত দলে থাকব কিনা; এসব নিয়ে ভাবছি না। দুটি অনুশীলন ম্যাচ থাকবে। আপাতত আমি এই দুটি ম্যাচের দিকে মনোযোগ রাখছি। এখানে ভালো করতে হবে।