ঘৃণা কখনোই জয়ী হবে না: বর্ণবাদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন সানচো
ইউরো ২০২০ এর ফাইনালে চূড়ান্ত মুহূর্তের পেনাল্টি মিস করায় অনলাইনে যে কটুক্তির শিকার হয়েছেন, তা নিয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন ইংল্যান্ডের খেলোয়াড় জ্যাডন সানচো। জাতীয় দলের এই উইঙ্গার বলেছেন, 'ঘৃণা কখনোই জয়ী হবে না'।
এই গ্রীষ্মেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে পাড়ি জমানোর কথা রয়েছে ২১ বছর বয়সী সানচোর। ওয়েম্বলিতে ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হেরে স্বপ্নের ইউরোর মুকুট হাতছাড়া হওয়ায় মার্কাস রাশফোর্ড ও বুকায়ো সাকার পাশাপাশি সানচোও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইংল্যান্ড ভক্তদের গালিগালাজ ও আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
নিজের অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম ও টুইটার অ্যাকাউন্টে সানচো লিখেন, "আমার ভাই মার্কা, বুকায়ো ও আমার সাথে যে বর্ণবাদী আচরণ করা হচ্ছে, তা আমি অগ্রাহ্য করার ভান করবো না। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়।"
তিনি আরও লিখেন, "সমাজের অংশ হিসেবে আমাদের উচিত এই মানুষগুলোকে অভিযুক্ত করা এবং এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটানো। কারণ ঘৃণা কখনোই জয়ী হবে না। যেসব তরুণেরা এরকম কটুক্তির শিকার হয়েছেন, তাদেরকে বলবো, মাথা উঁচু করে বাঁচতে শিখো এবং নিজের স্বপ্নের পেছনে ছুটতে থাকো।"
ইংল্যান্ডের স্বপ্ন 'ফুটবল কামিং হোম' এর পথে ফাইনালে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ান ইতালির দুর্গ জিয়ানলুইজি দোনারুমা। সানচোর স্পট-কিক ঠেকিয়ে দেন তিনি, একইসঙ্গে সাকার শটও; অন্যদিকে রাশফোর্ডের দেওয়া বল গোলপোস্টে লেগে বাইরে চলে যায়। ফলে মূল সময়ে ১-১ গোলে ড্র হওয়া খেলার টাইব্রেকারে ইতালির কাছে ৩-২ গোলে হেরে যায় ইংল্যান্ড। সানচো ও রাশফোর্ড দুজনকেই ইংল্যান্ড কোচ সাউথগেট অতিরিক্ত সময়ের প্রায় অন্তিম মুহূর্তে এসে মাঠে নামান।
সানচো বলেন, "আমি পেনাল্টি নেওয়ার জন্য তৈরি ছিলাম এবং আত্মবিশ্বাসীও ছিলাম। এটা ছিল এমন একটা মুহূর্ত, যে মুহূর্তের জন্য আমি ছেলেবেলা থেকে অপেক্ষা করে থাকেন, আর সে কারণেই আমি আজ ফুটবল খেলছি। একজন ফুটবলার হিসেবে এরকম মুহূর্তগুলো খুব চাপের হয়। এর আগেও আমি ক্লাবে পেনাল্টিতে গোল দিয়েছি, ক্লাব ও দেশের পক্ষে এরকম গোল করার জন্য আমি প্রচুর চর্চাও করেছি। আমি চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু এবার আর চেষ্টাটা সফল হয়নি।"
সানচো জানান, নিজের ক্যারিয়ারে এর চাইতে বাজে অনুভূতি আর কখনো হয়নি। কিন্তু তার শেষ কথা ছিল, "আমি ইংল্যান্ড দলের হয়ে খেলতে পেরে গর্বিত। আমরা জানি কীভাবে গত ১৮ মাসের কঠিন সময়ের মধ্যেও আমরা পুরো জাতিকে এক করেছি।"
"যারা যারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, ইতিবাচক বার্তা দিয়েছেন ও ভালোবেসেছেন, তাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আমি। আপনাদের এই ভালোবাসা সেসব নেতিবাচক ও বিরূপ মন্তব্যকে পেছনে হটিয়ে দিয়েছে। ইংল্যান্ড দলের হয়ে খেলা ও থ্রি লায়ন্সের জার্সি পরাটা আমার জন্য সবসময় সম্মানজনক হয়েই থাকবে। আর আমার এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে ভবিষ্যতে আমি আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবো! সবাই নিরাপদে থাকুক, দেখা হবে আবার," বলেন সানচো।
সূত্র- দ্য গার্ডিয়ান