ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর স্থলাভিষিক্ত হওয়া কে এই গনসালো রামোস?
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সাথে দ্বন্দ্বের জেরে পর্তুগাল হেড কোচ ফার্নান্দো সান্তোস রাউন্ড অব সিক্সটিনে সুইজারল্যান্ড ম্যাচে সিআর সেভেনকে মূল দলে রাখেন নি। মঙ্গলবারের খেলায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর স্থলে ২১ বছর বয়সী গনসালো রামোসকে খেলিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন পুরো ফুটবল দুনিয়াকে। রামোসও জোর দিয়ে প্রমাণ করেছেন তার উপর কেন ভরসা করা যাবে!
ম্যাচের ১৭ মিনিটের মাথায় অপ্রতিরোধ্য এক শটে, দুর্দান্ত এঙ্গেলে কিক নিয়ে গোল করেন পর্তুগিজ ইয়ংস্টার; দলকে এগিয়ে নেন ১-০ ব্যবধানে।
প্রথমার্ধে ৩৩ মিনিটে পর্তুগালের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন পেপে। দ্বিতীয়ার্ধের একটু পরেই নিজের গোলের খাতায় আরও একটি গোল যোগ করেন রামোস। ডিওগো ডালোতের সহায়তায় গোল করে ৩-০ ব্যবধানে প্রভাব বিস্তার করছিলো রোনালদো বিহীন পর্তুগাল।
তারপর অল্প একটু পরেই, ম্যাচের ৬৭ মিনিটে হ্যাট্রিক করেন রামোস। দলের হয়ে পঞ্চম গোলটি করে কাতার বিশ্বকাপের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাট্রিক করার গৌরব অর্জন করে এই পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড।
রামোস পর্তুগালের হয়ে বিশ্বকাপের নকআউট পর্বেই ৩টি গোল করে ফেলেছেন এবং খেলার ১৭ মিনিট থেকে তার গোলের খাতা খুলেছেন। যেখানে নকআউট পর্বে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫১৪ মিনিট খেলেও কোনো গোল নেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর।
চারটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে রামোসের গোলের সংখ্যাও এখন চার। কিন্তু কে এই রামোস? রামোস সম্পর্কে আমাদের জানতে হলে তার ক্লাব এবং একাডেমির কথা জানতে হবে।
বেনিফিকা ডারউইন নানেজকে ৮০ মিলিয়নে বিক্রি করে লিভারপুলের কাছে, তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে খুঁজে পায় গনসালো রামোসকে।
১৩ বছর বয়সে বেনিফিকার একাডেমিতে ভর্তি হয় রামোস। সাবেক পর্তুগিজ ফুটবলার মারকো রামোস নিজের ছেলে সম্পর্কে বলেন, "আমি কখনোই তাকে সেভাবে খেলতে দেখিনি। আমার কাছে মনে হয় তার মধ্যে ফুটবলের পোকা ঢুকে আছে।"
ইউরো-২০১৯ এ অনুর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন রামোস এবং এই টুর্নামেন্টে রানার্সআপ হয়ে শেষ করে পর্তুগাল। বেনিফিকার হয়ে ২০২০ এর জুলাই মাসে প্রথমবার ডেসপরতিভো এভেস এর বিপক্ষে ম্যাচের ৮৫ মিনিটে খেলতে নেমে কোনো সময় নষ্ট না করে দুইটি গোল করে বসে। এর মাধ্যমে এই খেলোয়াড় ইতিহাস লিখে ১৯৮৫ এর পর অভিষেক ম্যাচে গোল করেন।
পর্তুগালের সিনিয়র টিমে প্রথমবারের মত ডাক পায় সেপ্টেম্বরের নেশন্স লীগে।বেনিফিকার আরেক সতীর্থ এন্টনিও সিলভাও ডাক পেয়েছিলো সান্তোসের। বেনিফিকায় বিশ্বকাপের বিরতি চলছে, এর আগে টানা ২৫ ম্যাচে অপরাজিত ছিলো রামোসের দল।
সব ফরম্যাট মিলিয়ে এই মৌসুমে গনসালো রামোসের মোট গোল ১৪। পর্তুগাল প্রিমিয়ার লীগের টপ স্কোরারও রামোস। ২১-২২ মৌসুমে ১১টি ম্যাচে মোট ৯টি গোল করেন তিনি।
রামোসের গোলের মুভমেন্ট বেশ চমৎকার। ফিনিশিং লেন্থে এসে শট নিতে পারেন, এবং ১০ গজ দূর থেকেও তার শটে গোল হয়েছে।
রামোসের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স গোটা ইউরোপ জুড়ে নজর কেড়েছে। ভবিষ্যতে যে তিনি সি আর সেভেনের জায়গা নিশ্চিত করবেন এটা এখন সময়ের ব্যাপার।